আমাদের ভারত, ১৫ জুলাই: মধ্যপ্রদেশের ভোজশালা চত্বরে বৈজ্ঞানিক সমীক্ষার রিপোর্ট জমা দিল আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া। সোমবার মধ্যপ্রদেশের হাইকোর্টে এই রিপোর্ট জমা পড়েছে। হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে জমা পড়া ২ হাজার পাতার রিপোর্টে ভোজশালার জমির তলায় দেবদেবীর মূর্তি এবং মন্দিরের অস্তিত্ব সনাক্ত হয়েছে বলে দাবি হিন্দু পক্ষের আইনজীবীর।
মধ্যপ্রদেশের ধার শহরে বহু পুরাতন কামাল মৌলানা দরগা এবং মসজিদ রয়েছে এএসআই তত্ত্বাবধানে। কিন্তু হিন্দুত্ববাদীদের দাবি, ওই সৌধ আসলে রাজা ভোজের তৈরি প্রাচীন দেবী সরস্বতীর মন্দির। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী প্রতি মঙ্গলবার হিন্দুদের পুজো দিতে দেওয়া হয় ভোজশালায়। আবার মুসলিমদের শুক্রবার নমাজ পড়তে দেওয়া হয়। সপ্তাহের অন্যান্য দিন যে কেউ সেখানে প্রবেশ করতে পারেন। কিন্তু সেই দিনগুলিতে কাউকে পুজো দিতে বা নমাজ পড়তে দেওয়া হয় না।
ঐতিহাসিক সৌধটিতে এই ব্যবস্থা বন্ধ করতে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি। ২০২২ সালে হিন্দুত্ববাদী একাধিক সংগঠনের পক্ষে আইনজীবী হরিশংকর জৈন মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্টকে জানান, ২০০৩ সালে মুসলিমদের ভোজশালায় নমাজ পড়তে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পুরাতত্ত্বিক প্রমাণ খতিয়ে দেখলে বোঝা যাবে সেটি আসলে হিন্দু মন্দির।
বারানসির জ্ঞান ব্যাপীর মত ভোজ শালাতে এএসআইয়ের বৈজ্ঞানিক সমীক্ষার আবেদন জানানো হয়েছিল হিন্দু পক্ষের তরফে। ১১ মার্চ মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্টের আবেদন মেনে সমীক্ষার চালানোর ঘোষণা করে। এরপর সমীক্ষার কাজ শুরু হয়। কিন্তু মুসলিম পক্ষ সেই রায় চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানিয়েছিল। চলতি বছরের ১ এপ্রিল বৈজ্ঞানিক সমীক্ষায় ছাড়পত্র দিয়েছিল শীর্ষ আদালতও। তবে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ঋষিকেশ রায় এবং বিচারপতি পি কে মিশ্রের ডিভিশন বেঞ্চ বিতর্কিত কাঠামো চরিত্র বদলের চেষ্টা বরদাস্ত করা হবে না বলেও জানিছিল। কেন্দ্রীয় সরকার, মধ্যপ্রদেশ সরকার এবং সে রাজ্যের ধার জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ পালন করতে বলা হয়েছিল।
যদিও হিন্দুত্ববাদীদের পক্ষে আইনজীবী হরিশংকর সোমবার বলেন, ভোজশালায় মন্দিরের ৯৪টি ভাঙ্গা দেব দেবীর মূর্তির সন্ধান মিলেছে। সেই সঙ্গে পাথরে খোদাই করা পশুদের অবয়বও শনাক্ত হয়েছে। তাঁর দাবি, মুসলিমদের ধর্ম স্থানে পশুদের মূর্তি থাকে না। তাই ভোজশালায় নমাজ বন্ধ করা উচিত। এর আগে এএসআই রিপোর্টে হিন্দুত্বের অস্তিত্বের কথা জানানোর পরেই জ্ঞানব্যাপীতেও ব্যাসখানায় পূজা অর্চনার অনুমতি দিয়েছিল বারানসি জেলা আদালত।