পার্থ খাঁড়া, আমাদের ভারত, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৮ জুন: মেদিনীপুরে শুরু হলো মুষলধারে বৃষ্টি। সকাল থেকে গুমোট যুক্ত আবহাওয়া ছিল, বেলা বাড়ার সাথে সাথে বাড়ছিল গরম। অবশেষে দুপুর ১টা নাগাদ কালো মেঘে ঢাকলো আকাশ, আর তারপরই নেমে এলো স্বস্তির বৃষ্টি। আর এই বৃষ্টিতে ভিজলো মেদিনীপুর শহরবাসী। স্বস্তি এলো জনজীবনে। অনেককেই দেখা গেল স্বস্তির বৃষ্টিতে গা ভেজাতে। আর সামান্য বৃষ্টিতেই রাস্তায় জল জমতে শুরু করে।
সাধারণ মানুষের বক্তব্য, ঐতিহাসিক মেদিনীপুর শহরে শতাব্দী প্রাচীন একটি যে পৌরসভা আছে তার কোনো নমুনা পাওয়া যায় না। রাজনৈতিক দলগুলোর মদতে শহরের নালা নর্দমা অবৈধ দখলদারদের দখলে। শহরে নিকাশি নালা থাকলেও তা পরিষ্কার করতে পারছে না, শুধুমাত্র অবৈধ দখলদারদের জন্য। শহরে দিন দিন জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে, পাশাপাশি বাড়ছে যানবাহন। কিন্তু প্রতিনিয়ত যানবাহন চলাচলের রাস্তা বৃদ্ধির বদলে সংকোচন হচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলোর মদতে গজিয়ে ওঠা বেআইনি দখলদার। পৌরসভা চলছে? না চৌরসভা চলছে বোঝা দায়। পৌরপ্রধান জেনেশুনেও অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছেন না অজ্ঞাত কারণে।
পৌরসভাগুলিকে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠকের পর অনেকের আশা ছিল এবার মেদিনীপুর শহরেও অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ হবে, বা কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু পৌরসভা যে তিমিরে সেই তিমিরে। মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠক শেষেই মেদিনীপুর সৌমেন খান জমা জল দেখতে নেমে পড়েন রাস্তায়। মেদিনীপুর পুরসভার পুরপ্রধান সৌমেন খান বলেন, ড্রেনগুলি পরিষ্কার করা সত্ত্বেও ড্রেনগুলির উপরে স্ল্যাপ দিয়ে যেভাবে দোকানগুলি বসে রয়েছে যার ফলে পুরোটা কমপ্লিট করা যাচ্ছে না। বললেও কেউ সরাচ্ছে না, এরপরেও যদি সহযোগিতা তারা না করে আমরা কিভাবে পরিষ্কার করব। পৌরসভার কর্মীরা সেখানে নেমে কাজ করতে পারছে না।
তাদের বলেছি স্ল্যাপগুলো তুলে দেওয়ার জন্য। যাবতীয় দোকানের জিনিসপত্র ড্রেনের মধ্যে ফেলছে। পৌরসভা থেকে তাদের বালতি দেওয়া হয়েছে, অথচ সেখানে তারা ফেলছে না। পৌরসভার সাফাই কর্মীরা দুপুরবেলায় রাস্তা পরিষ্কার করলেও চায়ের কাপ পড়ে থাকছে গোটা শহরে। ফুটপাতে ব্যবসা করছে কোন ট্যাক্স দিচ্ছে না তাদের তো নির্দিষ্ট জায়গায় জিনিসপত্র রাখা উচিত। যার কারণে রাস্তাটাই ড্রেনে পরিণত হয়ে গেছে। মানুষ সচেতন না হলে পৌরসভা, প্রশাসন কিভাবে তার মোকাবিলা করবে।
আসলে মেদিনীপুর পৌর প্রশাসন সাধারণ মানুষের উপর দোষ চাপিয়ে দায় এড়ানোর চেষ্টা। ভোট রাজনীতির স্বার্থে কঠোর ব্যবস্থা গ্ৰহণ করার মতো কোনো ক্ষমতা নেই। আর কর প্রদানকারী শহরবাসী জল যন্ত্রণা এবং যান যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে চাতক পাখির মতো তাকিয়ে থাকবে।