প্রাচীনরীতি মেনে ‘লবনা কার্তিক’ পুজোয় মাতল বীরভূমের কৃষ্ণপুর গ্রাম

আশিস মণ্ডল, রামপুরহাট, ১৬ ডিসেম্বর : অন্নপূর্ণা নয়, নবান্ন উপলক্ষ্যে কার্তিক পুজোয় মাতে বীরভূমের নলহাটি ২ নম্বর ব্লকের কৃষ্ণপুর গ্রাম। গ্রামবাসীদের কাছে দেবতার নাম ‘লবনা কার্তিক’। এই উপলক্ষ্যে তিনদিন ধরে গ্রাম থাকে জমজমাট। কিন্তু করোনা আবহে সেই আনন্দে এবার ভাটা পড়েছে।

নতুন ধানের অন্ন নবান্ন। অন্নপূর্ণার পুজো না দিয়ে বাংলার মানুষ সাধারণত নতুন অন্ন গ্রহণ করেন না। এলাকা বিভেদে নিজেদের মতো করে গ্রামবাংলার মানুষ এই নবান্ন উৎসব পালন করে থাকেন। কৃষ্ণপুর গ্রামের মানুষ প্রাচীনকাল থেকে নবান্ন উপলক্ষ্যে কার্তিক ঠাকুরের আরাধনা করে আসছেন। কিন্তু অন্নপূর্ণার বদলে কার্তিকের আরাধনা কেন সেই ইতিহাস কেউ বলতে পারেননি। গ্রামের এক প্রান্তে কয়েক যুগ ধরে হয়ে আসছে ‘লবনা কার্তিক’ পুজো।

অগ্রহায়ন মাসের শেষে সেই উৎসবেই মেতেছেন ঠাকুর অনুকূল গ্রাম।” গ্রামের বাসিন্দা সুপ্রকাশ অধিকারী ওরফে ভুদেব বলেন, “আমরা পূর্বপুরুষের অমল থেকে নবান্নে কার্তিক পুজো দেখে আসছি। এখনও তার কোনও ব্যতিক্রম হয়নি।” পুজো উপলক্ষ্যে গ্রামে বড় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। কিন্তু করোনা মহামারীর কারণে এবার গ্রামের ছেলেমেয়েরা নিজেদের মতো করে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান মঞ্চস্থ করেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গ্রামের আনন্দ সাগর পুকুরে মূর্তি নিরঞ্জন করা হবে। ভুদেববাবু বলেন, “অন্যান্যবার একাধিক কীর্তনের দল, আদিবাসী নৃত্যের মাধ্যমে নিরঞ্জন করা হয়ে এসেছে। কিন্তু এবার সব বাতিল করা হয়েছে। শুধু গ্রামের কীর্তনদলকে সামনে রেখেই নিরঞ্জন করা হবে। তবে প্রথা মেনে ডিজে বক্স থাকছে না। মদ্যপ অবস্থায় কাউকে শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হবে না।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *