লক্ষ্য বিধানসভা নির্বাচন! যুবশক্তির সদস্যদের ১০টি পরিবারের দায়িত্ব নিতে আহ্বান অভিষেকের

রাজেন রায়, কলকাতা, ১৮ জুলাই: ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনকে মাথায় রেখে বিরোধীদের এক ইঞ্চিও জমি না ছাড়তে রীতিমত ছক কষে পদক্ষেপ করতে চাইছে তৃণমূল। করোনা আবহে বাড়ি বাড়ি গিয়ে জনসংযোগ সম্ভব নয়। সেই কারণে তার নিজের তৈরি বাংলার যুবশক্তিকে কাজে লাগিয়েই নিবিড় জনসংযোগে নামার নির্দেশ দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার ফেসবুক লাইভে তিনি নির্দেশ দেন, প্রত্যেক যুবশক্তি সদস্য অন্তত ১০ টি করে পরিবারের দায়িত্ব নিন। তৃণমূলের এই অভিযানকে কটাক্ষ করেছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ।

আমফান থেকে করোনা, একাধিক সমস্যায় জেরবার পশ্চিমবঙ্গের মানুষ। এই পরিস্থিতিতে অনেকেই হারিয়েছেন তাঁদের জীবিকাও। তাই বিপদের দিনে মানুষের পাশে থাকলে যেমন জনসংযোগ তৈরি হবে একইসঙ্গে পরবর্তী বিধানসভা নির্বাচনে তা কাজে আসবে বলে মনে করছেন ডায়মন্ড হারবার সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এই সংগঠনের শুরুতেই প্রথমেই এক লাখ যুবক যোগ দিয়েছিল পরে সেখানে সদস্য সংখ্যা বেড়ে পাঁচ লাখ হয়েছে বলে শনিবার এক ফেসবুক লাইভে জানিয়েছেন তৃণমূল যুব সভাপতি তথা ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এই যুবশক্তির সদস্যরা প্রত্যেক মাথাপিছু দশটি করে পরিবারের কাছে পৌঁছে গিয়ে খোঁজ রাখবেন তাদের সুবিধা-অসুবিধার। এমনকি যদি এলাকার কারোর করো না হয় বা নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য দ্রব্যের দরকার হয় সে ক্ষেত্রে সমস্ত রকম ভাবে সাহায্যের হাত বাড়াবে এই যুবরা।

এদিন অভিষেক জানান, “১১ই জুন, ২০২০তে আমরা ‘বাংলার যুব শক্তি’ উদ্যোগটির সূচনা করেছিলাম যাতে পশ্চিমবঙ্গের ১ লক্ষ যুব যোদ্ধাদের সাথে হাত মিলিয়ে আমরা মানুষের সাহায্য করতে পারি।আজ ৫ লক্ষেরও বেশি রেজিস্ট্রেশনের সাথে আমরা এই উদ্যোগের দ্বিতীয় পর্বে পা রাখছি। আগামী ১০০ দিনের পথ চলার পরিকল্পনায় তাঁদের দায়িত্ব সম্মন্ধে অবগত করছি।” এরপর তিনি আরও বলেন,”পাড়া, গ্রাম বা ব্লকের ১০টি করে পরিবার চিহ্নিত করবেন যুব যোদ্ধারা। তাদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করবেন। তাদের কী প্রয়োজন, জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন। তাদের ওযুধ লাগতে পারে, বাজার করে দিতে হতে পারে। নিজের সর্বশক্তি দিয়ে তাদের সাহায্য করুন। বিপদের দিনে মানুষের পাশে থাকুন।” পাশাপাশি এই সংক্রান্ত তথ্য আদান প্রদানের জন্য হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করবেন বাংলার যুবশক্তির সদস্যরা। সবাই সেই গ্রুপে তাদের অসুবিধের কথা জানাবেন। এরপর পরিস্থিতি বুঝে ব্যবস্থা নিতে হবে। নিজে ব্যবস্থা না করতে পারলে ফিল্ড ইউনিটকে জানাবেন।

অভিষেক জানান খুব শীঘ্রই এই বিষয়ে একটি পোর্টাল খোলা হচ্ছে। সেখানে যুব যোদ্ধারা সংশ্লিষ্ট এলাকার সমস্যা লিখলে সঙ্গে সঙ্গে সেখান থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একইসঙ্গে যাঁরা যোগ্য হবেন তাঁদের উপযুক্ত সম্মান জানানো হবে। অভিষেকের দাবি, যে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত থাকুন না কেন, তা বিবেচ্য নয়। যাঁরা যুবযোদ্ধা হবেন তাদের রাজনৈতিক মতাদর্শ কোনও বাধা হবে না। এখন প্রধান কাজ বাংলাকে বাঁচানো। তাই কে বিজেপি, কংগ্রেস, কে সিপিএম তা দেখা হবে না। মানুষের জন্য কাজ করুন। আপনি যে দলেরই সমর্থক হন না কেন, আপনি যদি যুবযোদ্ধা হন তাহলেও আপানাদের সম্পূর্ণ সাহায্য করা হবে। বাংলাকে করোনা মুক্ত করতে হবে। এখানে রাজনৈতিক মতাদর্শ কোনও বাধা নয়।”

অভিষেকের এই প্রস্তাবকে কটাক্ষ করেছেন দিলীপবাবু। তিনি বলেন,’আগে উনি ১ লক্ষ সদস্য জোগাড় করেছিলেন। তারা সব রেশনের চাল আর আমফানের টাকা চুরিতে ব্যস্ত ছিল। চোর বোধ হয় কম পড়েছে। তাই এবার সাড়ে পাঁচ লক্ষ নিয়ে নেমেছেন। নিজেকে মনীষী ভাবছেন নাকি অভিষেক! টুকলি করে পাশ করা যায় না।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *