পিকের রিপোর্ট হাতে, আলিপুরদুয়ারে এসে বৈঠকে দলের নেতাদের অবাক করে দিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়

আমাদের ভারত, আলিপুরদুয়ার, ৬ জানুয়ারি: শুধুমাত্র নির্বাচন নিয়ে ভাববেন না। আপনারা নিজেরা নিজেদের দায়িত্ব এবং যে কাজ করার কথা তা নিষ্ঠার সাথে করুন।বুথ স্তরে গিয়ে প্রতিটি মানুষের পাশে থেকে কাজ করতে হবে। তাহলেই আর ফিরে তাকানোর প্রয়োজন হবে না।আলিপুরদুয়ারে এসে এমমই পরিস্কার বার্তা দিয়ে গেলেন সর্ব ভারতীয় যুব তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অভিষেক ব্যানার্জি।

মঙ্গলবার দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত পরপর একটানা বৈঠক করলেন জেলার বিভিন্নস্তরের নেতাদের সঙ্গে। এদিন প্রথমেই জেলা তৃণমূলের কোর কমিটি, তারপর ৫টি বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্ভুক্ত নির্বাচিত নেতাদের সঙ্গে,পরে চা বলয়ের নেতাদের সাথে ও একদম শেষে জেলার ৬ টি ব্লকের যুব কমিটির বাছাই করা নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেন তিনি। প্রাথমিকভাবে দলীয় সুত্রে জানা গেছে, এদিন প্রতিটি বৈঠকে অভিষেক ব্যানার্জি একদিকে নিজে যেমন কম বক্তব্য রেখেছেন, তেমনি জেলা নেতা থেকে যুব নেতা প্রায় সকলকে বলার সুয়োগ দিয়েছেন। প্রত্যেকের বক্তব্য যেমন শুনেছেন তেমনি কোথায় কি সমস্যা রয়েছে, কি দুর্বলতা রয়েছে তাও সকলের সামনেই জানিয়ে দেন।

বৈঠক থেকে মনে হয়েছে, একদিকে পিকের টিমের পাঠানো রিপোর্ট নিয়ে যথেষ্টই হোমওয়ার্ক করেছেন অভিষেক ব্যানার্জি এবং আলিপুরদুয়ারে সংগঠনে কোথায় কি রকম দুর্বলতা রয়েছে সে সম্পর্কেও তিনি ওয়াকিবহাল, যা জেলা নেতারাও এদিন বুঝে গিয়েছেন। এও জানা গেছে তিনি বৈঠকে জানিয়েছেন, কেউ যেন এটা না ভাবে আমি উত্তরবঙ্গে শুধু সবার সাথে দেখা করতেই এসেছি। প্রয়োজন হলে এখন থেকে প্রতি মাসে একবার আসবো। দলের ভেতর কোনও স্তরে কোনও দ্বন্দ্ব যেন না থাকে সেই বার্তাও প্রতিটি বৈঠকে দিয়েছেন। এমনকি ব্লক পর্যায়ে বিগত দিনে কি কি সমস্যা ছিল, কেন ছিল, দলের স্বার্থে কেন তা বাঞ্ছনীয় ছিল না তাও ব্যাখ্যা করেন তিনি। যা শুনে অবাক হয়ে গেছেন অনেকেই। এদিনের বৈঠকে জেলা সভাপতি মৃদুল গোস্বামী, বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তী, আলিপুরদুয়ার জেলা পরিষদ মেন্টর মোহন শর্মা, ঋতব্রত ব্যানার্জি, দীপ্ত চ্যাটার্জি সহ জেলার প্রায় ৩০০ র বেশি নেতা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে অভিষেক ব্যানার্জির বৈঠককে জন্য কার্যত আলিপুরদুয়ার সার্কিট হাউসকে এদিন দুর্গে পরিনত করা হয়। বাইরের কারোর কোনও প্রবেশাধিকার ছিল না। বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তী জানান, “খুবই ফলপ্রসূ হয়েছে আজকের বৈঠক। অভিষেক ব্যানার্জি যে নির্দেশ, বার্তা দিয়ে গেলেন তা দলের প্রতিটি স্তরের কর্মীদের এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে। চা-বলয়ে সংগঠনকে এগিয়ে নিয়ে যেতেও একগুচ্ছ পরিকল্পনার কথা তিনি জানিয়েছেন।”

উল্লেখ্য, উত্তরবঙ্গ সফরের দ্বিতীয় দিনে শিলিগুড়ি থেকে আলিপুদুয়ার যাওয়ার পথে, এদিন হাসিমারার কাছে তোর্সা নদীর শ্মশান কালী মন্দিরে পুজো দেন ডায়মন্ডহারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘড়ির কাঁটায় বেলা ১২.৪০টা নাগাদ সাংসদের কনভয় এসে দাঁড়ায় ৪৮ নম্বর এশিয়ান হাইওয়ের ধারের কালী মন্দিরের সামনে। কড়া নিরাপত্তার বেষ্টনীর মধ্যে মন্দিরে প্রবেশ করেন অভিষেক। প্রায় আধা ঘন্টা ধরে পুজো সেরে আলিপুরদুয়ারের উদ্দেশে রওনা হন তিনি। মন্দির ও শ্মশান উন্নয়নের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *