আমাদের ভারত, ৬ নভেম্বর: রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও মাদ্রাসা শিক্ষা সংক্রান্ত দপ্তরে মুখ্য উপদেষ্টার পদে যোগ দিয়েছেন বাম জামানার মন্ত্রী তথা প্রাক্তন কংগ্রেস নেতা আব্দুস সাত্তার। আর মুখ্যমন্ত্রীর এই পদক্ষেপকে ফের একবার মুসলিম তোষণ বলে অভিযোগ করে সরব হলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।
মঙ্গলবার রাজ্যে সংখ্যালঘু উন্নয়ন মাদ্রাসা শিক্ষা দপ্তরের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা পদে সাত্তারের নিয়োগের কথা জানানো হয়েছে। তারপরেই বুধবার নিজের এক্স হ্যান্ডেল থেকে একটি পোস্ট করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করেন সুকান্ত মজুমদার। তিনি লিখেছেন, ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ধারাবাহিকভাবে বিভাজনকারী এবং তোষণ নীতিকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন। তিনি ভোট ব্যাঙ্কের রাজনীতির জন্য বাংলার সংখ্যাগরিষ্ঠ সম্প্রদায়ের স্বার্থকে বার বার ক্ষুন্ন করেছেন। তাঁর প্রশাসন হিন্দুদের ধর্মীয় উদযাপন সীমিত করতে প্রায়শই পুলিশকে ব্যবহার করেছে, প্রচুর আকস্মিক ও একপেশে নির্দেশ জারি করেছে, যেমন দেবী দুর্গার বিসর্জন বন্ধ করা।
সুকান্ত মজুমদার আরো লিখেছেন, ২০২৪ সালে বাংলাজুড়ে বিভিন্ন জায়গায় দুর্গাপূজা প্যান্ডেলগুলিতে ভাঙ্গচুর, ভয় দেখানোর মতো অসংখ্য ঘটনা ঘটেছে। তা সত্ত্বেও রাজ্যের প্রধান হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নীরব ছিলেন। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে যারা ব্যাহত করেছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে অনিচ্ছুক রাজ্য সরকার।
সিপিএমের প্রাক্তন বিধায়ক তথা মন্ত্রী আব্দুস সাত্তারকে বিশেষ প্রশাসনিক পদে বসানোর প্রসঙ্গে তিনি লিখেছেন, সম্প্রতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সংখ্যালঘু সম্পর্কিত সমস্যাগুলি পরিচালনা করার জন্য বিশেষভাবে একজন প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগ করেছেন। তার এই নীতি আরও বেশি উদ্বেগ বাড়িয়েছে। প্রাক্তন সিপিআইএম মন্ত্রী পরিষদের মন্ত্রী আব্দুস সাত্তারের নিয়োগ ওবিসি কোটার অধীনে মুসলিমদের চাকরি সংরক্ষণের দিকে এগিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দেয়। এটা আবার সংখ্যালঘু তোষণকেই ইঙ্গিত দেয়। সুকান্ত মজুমদার লেখেন, বাংলায় এমন নেতৃত্বের প্রয়োজন যিনি বিভাজন নয়, একতার কথা বলবেন। কিন্তু তৃণমূল সরকারের এই পদক্ষেপ আসলে মেরুকরণের দিকেই রাজ্যকে এগিয়ে দিচ্ছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, মুসলিমদের ওবিসি কোটা বাড়ানো নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন এই আব্দুস সাত্তার। সেই কারণেই কি ভোট ব্যাঙ্ক ধরে রাখতে এই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব তাকে দিলেন মমতা সরকার? সুকান্ত মজুমদারের মতো প্রশ্ন উঠেছে রাজনৈতিক মহলের বড় অংশে। কারণ সামনেই উপ নির্বাচন। সেখানে জুনিয়ার ডাক্তারদের আন্দোলন থেকে মুখ ঘুরিয়ে দিতেই কি চিরাচরিত বিভাজনের রাজনীতিকে হাতিয়ার করলেন মুখ্যমন্ত্রী?