মদের আসরে হাতির হানা, শালবনিতে মৃত্যু এক যুবকের

পার্থ খাঁড়া, আমাদের ভারত, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২৮ জুলাই: এলাকাতে হাতি রয়েছে বলে আগেই সতর্ক করেছিল বনদপ্তর। সতর্ক করা হয়েছিল বাড়িতে চোলাই রাখবেন না। সেই সতর্কতার তোয়াক্কা না করে বুধবার রাতে নিজের বাড়ির সামনেই চোলাই খেতে মত্ত হয়ে গিয়েছিল দুই বন্ধু। পাশেই জঙ্গলে থাকা হাতি গন্ধ পেয়েছিল চোলাইয়ের। জঙ্গল থেকে বেরিয়ে সোজা চোলাইয়ের আসরে হাজির হয়ে যায় চুপিসারে। দুই বন্ধুর একজন বিষয়টি বুঝতে পেরে কোনোভাবে পালাতে সক্ষম হলেও অপর যুবক অজিত মাহাতো(২৮) পালাতে পারেনি। হাতি তাকে সেখানেই আছড়ে পিষ্ট করে মেরে ফেলে। বৃহস্পতিবার রাত ২ টো নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনী থানার আমজোড় এলাকায়। ঘটনার পর নতুন করে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে এলাকায়।

এই খবর পাওয়ার পর গ্রামবাসীরা হাতিটিকে দ্রুত তাড়ানোর উদ্যোগ নেয়। পরে গ্রামবাসীদের তাড়ায় হাতিটি জঙ্গলে ফিরে যায়। সকালে ঘটনাস্থলে বন দফতর ও পুলিশের কর্মীরা গিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠায়।

স্থানীয় ও বনদফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সন্ধে থেকে একটি হাতি পাশের শিমূলডাঙ্গা এলাকায় ছিল। রাত একটা নাগাদ আমজোড় গ্রামে প্রবেশ করে। স্থানীয়রা বুঝতে পেরে তাকে অন্যত্র তাড়িয়ে নিয়ে যায়। ওই সময় রাত দুটো নাগাদ গ্রামের একটি বাড়িতে বসে অজিত এবং তার বন্ধু চোলাই মদ পান করছিল। দু’জনেই নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। এক বন্ধু পালাতে সক্ষম হলেও অজিত পালাতে না পারায় হাতি তাকে শুঁড়ে ধরে আছাড় মারলে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। যে বাড়িতে চোলাই পান করছিল দুই বন্ধু, ওই বাড়ির একটি জানালাও ভেঙ্গেছে হাতিতে।

সম্প্রতি জেলাজুড়ে পুলিশ ও আবগারি দপ্তর চোলাইয়ের বিরুদ্ধে অভিযান চালালেও পুরোপুরি তা যে বন্ধ করতে যে পারেনি তা পরিষ্কার। অনেকে আবার বলছেন, পুলিশ ও আবগারি দফতর সমস্ত গ্রামে চোলাই বন্ধ করতে অভিযান চালায়নি। ঘটনার পর পরিবার ও এলাকায় নেমেছে শোকের ছায়া। জানা গিয়েছে, অজিতের দুই কন্যা সন্তান রয়েছে, স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা। অসহায় হয়ে পড়েছে পরিবারটি। বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী সমস্ত রকম সাহায্য করা হবে পরিবারটিকে। হাতিটিকেও অন্যত্র সরানো হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *