পার্থ খাঁড়া, আমাদের ভারত, ঝাড়গ্রাম, ২৫ আগস্ট : ফের হাতির হানায় মৃত্যু হল জঙ্গলমহলে। ১০ দিনে হাতির হানায় ঝাড়গ্রামে ৪ জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটলো। হাতির হানায় মৃত যুবকের নাম স্বপন মাহাতো (২৬)। বাড়ি সাঁকরাইল থানার অন্তর্গত তুঙ্গাধুয়া গ্রামে।
জানা গিয়েছে, শনিবার রাতে কাজ শেষ করে বাড়ি ফেরার সময় খড়্গপুর বন বিভাগের অন্তর্গত তুঙ্গাধুয়া মোড়ে একটি দলছুট হাতির সামনে পড়ে যায় ওই যুবক। শুঁড়ে তুলে আছাড় মারে হাতিটি। উদ্ধার করে তাকে ঝাড়গ্রাম গর্ভমেন্ট মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
মৃত যুবকের কাকু জয়ন্ত মাহাতো বলেন, “স্বপন গাড়ির চালকের কাজ করতেন। শনিবার রাতে গাড়ি রেখে হেঁটে হেঁটে বাড়ি ফিরছিল। সেই সময় হঠাৎ করে একটি দলছুট হাতি তাকে ধরে ফেলে দেয় এবং শুঁড়ে তুলে আছাড় মারে। হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত বলে জানায়।”
জানা গিয়েছে, খড়্গপুর বন বিভাগের কলাইকুন্ডা রেঞ্জের বারডাঙ্গা বিট এলাকায় একটি হাতির দল রয়েছে। সেই দল থেকেই দলছুট হয়ে একটি হাতি তুঙ্গাধুঁয়া এলাকায় ঢুকে পড়ে এবং সেই হাতির হানায় মৃত্যু হয় স্বপনের।
খড়্গপুরের ডিএফও মণিশ যাদব বলেন, “একটি দলছুট হাতির হানায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। সরকারি নিয়ম মেনে পরিবারকে ক্ষতিপূরণ তুলে দেওয়া হবে”। তিনি আরো বলেন, “হাতির দলটির উপর নজর রাখা হচ্ছে। হাতির দলটিকে অন্যত্র পাঠানোরও ব্যবস্থা করা হয়েছে”।
প্রসঙ্গত, স্বাধীনতা দিবসের দিন বৃহস্পতিবার ঝাড়গ্রাম শহরে পাঁচটি হাতির একটি দল ঢুকে পড়ে। হাতির দলের হানায় ঝাড়গ্রাম শহরের বিদ্যাসাগরপল্লী এলাকার বাসিন্দা অনুপ মল্লিক (৫৪) মৃত্যু হয়। তারপর শনিবার ভোরে ঝাড়গ্রাম থানার অন্তর্গত পশরো গ্রামে হাতির হানায় চাঁদ খিলাড়ির (৬১) মৃত্যু হয়। তারপর গত মঙ্গলবার সকালে ঝাড়গ্রাম থানার আঁধারীসল গ্রামে হাতির হানায় মৃত্যু হয় খগেন পাতর(৪৬) নামের এক ব্যক্তির। ১৫ আগস্ট থেকে শুরু করে ২৪ আগস্ট মধ্যরাতের মধ্যে হাতির হানায় মৃত্যু হয় ৪ জনের।
অপরদিকে, স্বাধীনতা দিবসের দিন শহরে ঢুকে পড়া হাতিগুলিকে জঙ্গলে পাঠানোর সময় হুলা পার্টির জ্বলন্ত শলাকায় বিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় একটি স্ত্রী হাতির। স্ত্রী হাতির মৃত্যুতে রাজ্যজুড়ে শুরু হয়েছে প্রতিবাদ। ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতারও করেছে বনদপ্তর। পরে তাদের পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।