পার্থ খাঁড়া, আমাদের ভারত, পূর্ব মেদিনীপুর, ২৩ মে: লোকসভা নির্বাচনের প্রাক মুহূর্তে আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠল নন্দীগ্রাম। বুধবার রাতের অন্ধকারে সোনাচূড়া এলাকায় সশস্ত্র বাইক বাহিনীর হামলায় বিজেপির এক মহিলা কর্মীর মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। সেই সঙ্গে গুরতর জখম হয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন বিজেপি কর্মী। এদের মধ্যে এক জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয়েছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে গোটা এলাকায়। তবে এখনও পর্যন্ত এই হামলার ঘটনায় জড়িত দুষ্কৃতীরা অধরা বলেই পুলিশ সূত্রে জানাগেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, ভোট প্রচারের শেষ লগ্নে সোনাচূড়ার মনসাপুকুর বাজার এলাকায় রাত পাহারা দিচ্ছিলেন বিজেপির কর্মী সমর্থকরা। সেই সময়ই একদল সশস্ত্র বাইক বাহিনী ওই বিজেপি কর্মীদের ওপর চড়াও হয়। ধারালো অস্ত্রের এলোপাথাড়ি আঘাতে রথিবালা আড়ি নামে এক মহিলা বিজেপি কর্মী রক্তাক্ত হয়ে রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন। মা’কে বাঁচাতে গিয়ে গুরুতর জখম হয় ছেলেও। এছাড়াও আরও বেশ কয়েকজন বিজেপি কর্মী ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত হয় বলে দাবি বিজেপির।
এই ঘটনার খবর পেয়েই এলাকাবাসীরা ছুটে গেলে দুষ্কৃতীরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়। গ্রামবাসীরা জখম রথীবালা সহ অন্যদের দ্রুত নন্দীগ্রাম সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা ওই মহিলাকে মৃত বলে জানান। সেই সঙ্গে রথীবালার ছেলে সঞ্জয় আড়ির অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয়। এছাড়াও জখম আরও প্রায় ৭ জন বিজেপি কর্মীকে নন্দীগ্রাম হাসপাতালেই চিকিৎসা করা হয় বলে খবর। এই ঘটনার পরে ব্যাপক উত্তেজনার পারদ চড়েছে গোটা এলাকায়।
নন্দীগ্রামের বিজেপি নেতা মেঘনাদ পাল জানান, “তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা ভোটের মুখে এলাকাকে সন্ত্রস্ত করতে গিয়ে এই হামলা চালিয়েছে”। তাঁর অভিযোগ, “বুধবারই নন্দীগ্রামে সভা করতে এসেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বঁটি নিয়ে হামলার পরামর্শ দিয়েছিলেন। তাঁর সভার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই বিজেপি কর্মীদের ওপর যেভাবে ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালানো হয়েছে তা নক্কারজনক ঘটনা। এই হামলায় জড়িতদের কঠোর শাস্তির দাবি জানাচ্ছি”। সেই সঙ্গে তিনি আরও জানান, “এই ঘটনার প্রতিবাদে সকাল থেকেই নন্দীগ্রামজুড়ে প্রতিবাদ মিছিল শুরু করেছে বিজেপি। এছাড়াও ঘটনার প্রতিবাদে আজ নন্দীগ্রাম বনধ ঘোষণা করা হয়েছে” বলেও জানিয়েছেন তিনি।
যদিও বিষয়টি নিয়ে এই মুহূর্তে মুখে কুলুপ এঁটেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। তবে তৃণমূলের স্থানীয় নেতা কর্মীরা গোটা ঘটনাকে বিজেপির অর্ন্তদ্বন্দ্ব বলেই দায় সেরেছে।