পার্ক সার্কাসে মহামিলনের মধ্যে এক বৈচিত্র্যের বসতবাড়ি

Park circus আমাদের ভারত, কলকাতা, ২৯ জানুয়ারি: ধর্মের বিভক্তি নয়, চাই হাতে হাত মিলিয়ে উন্নয়ন। বিভেদ নয়, চাই সম্মিলিত জাগরণ। রবিবার সন্ধ্যায় এই সুরটাই ফুটে উঠেছিল পার্ক সার্কাসে বৈচিত্র্যের মাঝে মহামিলনের উৎসবে। এক কথায় বিশিষ্টদের মনের ভাবটা ছিল, তবেই আমরা বলতে পারব “বিবিধের মাঝে দেখো মিলন মহান।“

২৭-৩১ জানুয়ারি পার্ক সার্কাস ময়দানে চলছে একটি খুব বড় মেলা। পশ্চিমবঙ্গ সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও বিত্ত নিগমের সহযোগিতায় প্রতি বছরই হয় এই মিলন উৎসব। মিলনমেলায় বাঙালি সংখ্যালঘুদের কৃষ্টি, ঐতিহ্য, সংস্কৃতির উপর ভিত্তি করে ‘একটি কুসুম’ ও ‘পুবের কলম’ পত্রিকার পক্ষ থেকে আয়োজন করা হয়েছিল রবিবারের সন্ধ্যায় বিশেষ আয়োজনের।

এই মিলন উৎসবের মূল উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করে আয়োজনের উদ্যোক্তা পশ্চিমবঙ্গ সংখ্যালঘু উন্নয়ন কমিশনের চেয়ারম্যান, রাজ্যসভার প্রাক্তন সদস্য আহমেদ হাসান ইমরান বলেন, “সংখ্যালঘুদের সবার জন্য কাজ করার চেষ্টা করছে সংখ্যালঘু কমিশন। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন সম্প্রদায়ের নিজস্ব কুটিরশিল্প, খাবারদাবার ও সংস্কৃতির মেলবন্ধন ঘটে এই মিলনমেলায়।”

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন খাদিজাতুল কুবরা গার্লস মিশনের সভাপতি তথা বিশেষ উদ্যোগপতি সামিনা মালিক। তাঁকে সম্মাননা জানান আহমেদ হাসান ইমরান ও নুসরৎ হাসান। সম্মাননা জানানো হয় মোহতারমা ফাতেমাতুজ জোহরাকে। বক্তব্য রাখেন পায়ে হেঁটে কেরল থেকে মক্কা যাওয়া শিহাব চত্তুর।

আহমেদ হাসান ইমরান ছাড়াও অনুষ্ঠানে বিশিষ্টদের মধ্যে ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও বিত্ত নিগমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর পি বি সালিম, সমাজসেবী নুসরৎ হাসান, আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার শাকিল আহমেদ, শাহিদ আকবর, কুতুবউদ্ধিন তরফদার, তৃণমূল নেতা এ কে এম ফারহাদ, আরফান আলি বিশ্বাস, মুস্তাফিজ হাশমি, মওলানা হুসেইন নুরানী, আবদুস সামাদ, আলহাজ শিহাব চত্তুর প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে অন্যতম প্রধান আকর্ষণ ছিল অনবদ্য সুরেলা কন্ঠে নূপুর কাজীর পরিবেশন। ছিল বারাসত নজরুল চর্চা কেন্দ্র পরিবেশিত নজরুলের ‘দাও শৌর্য, দাও ধৈর্য্য’, এস কে সৈফুদ্দিনের ‘ধর্মযোদ্ধা’ কবিতাপাঠ। “তোমার বাণীরে করিনি গ্রহণ ক্ষমা করো হযরত ”— আবৃত্তি করেন ডাঃ সীমা রায়। শেরে বাংলা একে ফজলুল হকের ওপর পুস্তক প্রকাশ করেন লেখক রামিজ রাজা, মাওলানা আবদুস সামাদ, আহমেদ হাসান ইমরান ও ফারুক আমেদ।

এদিন বিভিন্ন অনুষ্ঠানের জন্য আমন্ত্রিতদের মধ্যে ছিলেন শফিকুল ইসলাম, পিনাকি চট্টোপাধ্যায়, লিটন রাকিব, আরফিনা, নাজমুল হক, সোমঋতা মল্লিক ও তাঁর ছায়ানট গোষ্ঠী, ডোমজুড়ের তাওহিদ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, মেমারির মামুন ন্যাশনাল স্কুল।

সোমঋতার কন্ঠে কাজী নজরুলের ‘জারিন হরফে লেখা আসমানি কোরআন’ পবিত্র গাম্ভীর্যে আচ্ছন্ন করে মানুষের মন। মহাকবি ইকবালের গানের বার্তা ছুঁয়ে যায় সকলের অন্তরকে। সম্প্রতি প্রয়াত সাহিত্য ব্যক্তিত্ব আবদুর রব খানের নাতনি জুলেখা সুলতানা সঙ্গীত পরিবেশন করেন। সব মিলিয়ে ফুটে উঠল বাঙালি মুসলিম সংস্কৃতির এক ঝলক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *