আমাদের ভারত, হুগলী, ২১ নভেম্বর: দুবছর আগের আতঙ্ক কি আবার ফিরছে গঙ্গা পাড়ের শহরে! সেই আতঙ্কেই হুগলী শিল্পাঞ্চলের প্রাচীন শহর শ্রীরামপুর। জেলার পাশাপাশি দুই শহরের বাসিন্দাদের ভরসা এখন ভগবান, কারণ ডেঙ্গুর মশা নিয়ন্ত্রণে পুরসভার কার্যকলাপ অনেকটা তেমনই। এই শহরেই গত মঙ্গলবার ডেঙ্গু কেড়েছে ফুটফুটে এক শিশুর প্রাণ। আক্রান্ত বহু। মহকুমা হাসপাতাল, বেসরকারি নার্সিংহোম থেকে নামি ডাক্তার সব জায়গাতেই রোজই ভিড় করছেন বহু রোগী। প্রায় রোজই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। রক্ত পরীক্ষা, চিকিৎসা সবই হচ্ছে, কিন্তু মশার ওপর নিয়ন্ত্রণ এখনও দূরঅস্ত। গতকাল এই জেলারই ভদ্রেশ্বরে এক যুবকেরও মৃত্যু হয় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে। নড়েচড়ে বসে জেলা প্রশাসন। সকাল থেকেই, আচমকা পৌর প্রতিনিধিদের তৎপরতায় এলাকার মানুষ হতবাগ। এহেন তৎপরতা দেখে নিজেদের মধ্যে বলা কওয়া শুরু করেন সাধারণ মানুষ। এতদিন পর টনক নড়েছে তাহলে।
ডেঙ্গুতে শিশুর প্রাণ কেড়ে নেওয়ার পর অবশেষে প্রশাসনকে একেবারে কোমর বেঁধে রাস্তায় নামতে দেখা গেল। বৃহস্পতিবার মাহেশ এলাকার ২৪ নং ওয়ার্ড সহ বিভিন্ন ওয়ার্ডে যুদ্ধ কালীন পরিস্থিতিতে ডেঙ্গু দমনে পৌরসভার পৌরপ্রধান সহ বিভিন্ন প্রতিনিধিদের দেখা যায় রাস্তায়। মশা মারার কামান দাগানো থেকে শুরু করে, মশার হদিস পেতে আকাশে ওড়ানো হল ড্রোন।
গত ১৯ শে নভেম্বর শ্রীরামপুরে ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয় পাঁচ বছরের একটি শিশুর। প্রায় মাস দুয়েক ধরে ডেঙ্গুতে অাক্রান্ত হয়ে বিভিন্ন চিকিৎসা কেন্দ্রে এখনো ভর্তি বহু। অবশেষে জেলা শাসক ওয়াই রত্নাকর রাও গতকাল বিকেলে শ্রীরামপুরে এসে পুর প্রশাসনের কর্তাদের সাথে ডেঙ্গু সংক্রান্ত একটি জুরুরি বৈঠক করেন। তিনি দাবি করেন, সব মিলিয়ে বর্তমানে প্রায় দু হাজার মানুষ ডেঙ্গুতে অাক্রান্ত। গতকালই তিনি ঘোষণা করেছিলেন ডেঙ্গু দমনে ড্রোন ব্যাবহার করা হবে। সেই মতো অাজ মশা মারতে ওড়ানো হল ড্রোন। মাইকের মাধ্যমে প্রচার করে বাসিন্দাদের কি করতে হবে ও কি করা উচিত নয় তা বলা হয়।
এদিকে ডেঙ্গুকে হাতিয়ার করে পথে নামল বিজেপি। একদিকে যখন ডেঙ্গু দমনে পুর প্রতিনিধিরা পথে, ঠিক সেই সময় শ্রীরামপুর পৌরসভার সামনে বিক্ষোভ দেখালো বিজেপি। রীতিমত মশারি খাটিয়ে তার মধ্যে বিক্ষোভে সামিল হয় বিজেপি নেতৃত্ব। সব মিলিয়ে
মশা দমনে এতদিনে সরগরম শ্রীরামপুর। অন্যদিকে এহেন কান্ড দেখে কেউ কেউ ফিস ফিস করে বলে উঠলেন ছবি তো অনেক উঠল, মশা কটা মরলো?