স্বরূপ দত্ত, উত্তর দিনাজপুর, ১ ফেব্রুয়ারি: অশীতিপর বৃদ্ধ বৃদ্ধাদের আজ যেখানে ঠাঁই মেলে বৃদ্ধাশ্রমে, সেখানে বৃদ্ধ দাদু দিদিমার ৫৫ তম বিবাহবার্ষিকীতে আবার বিয়ে দিয়ে তাদের নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখালো নাতি নাতনিরা। রায়গঞ্জ শহরের মিলনপাড়ায় এমনই এক অভিনব বিবাহের আয়োজন করে অনন্য নজির গড়ল ৮১ বছরের বৃদ্ধ দাদু আর ৭৩ বছরের দিদার বিয়ে দিয়ে। পাত্র ৮১ আর পাত্রী ৭৩, চার হাত এক করে মালা বদল হল দাদু রিলীপ ও দিদিমা গৌরির।

পাত্র আশি ঊর্ধ্ব রিলীপ কুমার রায় আর পাত্রী সত্তরোর্ধ্ব গৌরি রায় ৫৫ তম বিবাহবার্ষিকীতে আবারও বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলেন। আয়োজন করেছে বৃদ্ধ দম্পতির নাতি নাতনিরা। পান দিয়ে মুখ ঢেকে দিদাকনে এসে সাতপাক ঘুরলো বরের চারপাশে। হল মালাবদল, হাতবন্ধন ও সিঁদুর দান। অর্দ্ধ শতকের আগে ১৬ই মাঘ রিলিপ কুমার রায়ের সঙ্গে গৌরি রায়ের বিয়ে হয়েছিল অধুনা বাংলাদেশের আত্রেয়ী নদীর পাড়ে। তারপর কেটে গিয়ে তাঁদের দাম্পত্য জীবনের ৫৫ টি বছর। আত্রেয়ী নদী দিয়ে বয়ে গিয়েছে অনেক জল। ক্রমে ক্রমে রায় পরিবার বংশের কলেবরে বৃদ্ধি পেয়েছে। তাদের নাতি নাতনিরাও এখন প্রাপ্ত বয়স্ক। বৃদ্ধ দম্পতির ৫৫ তম বিবাহবার্ষিকীতে অভিনব আয়োজন করলেন তার পৌত্র ও প্রপৌত্ররা।

সুসজ্জিত ছাদনাতলা, পুরোহিতের মন্ত্রোচ্চারণ, শুভদৃষ্টি, সাতপাক ঘোরা, মালাবদল এমনকি সিঁদুর দান কোনওকিছুই বাদ যায়নি এদিনের আয়োজনে। ছিল প্রীতিভোজের ব্যাবস্থাও। সমস্ত আত্মীয়স্বজনদের ডেকে নৈশভোজের আয়োজন করেছিল করেছিল নাতি নাতনিরা। রিলিপবাবুর নাতনি মধুমিতা দাস জানিয়েছেন, বয়স বাড়লে আনন্দ ক্রমশ জীবন থেকে হারিয়ে যেতে থাকে। তাই দাদু দিদার বিবাহবার্ষিকীতে আমরা তাদের মনে আনন্দ দেওয়ার জন্য এই উদ্যোগ নিয়েছি। ৮১ বছরের বৃদ্ধ পাত্র রিলিপ কুমার রায় বলেন, নাতি নাতনিরা সবাই মিলে আনন্দ করছে। ওদের আনন্দেই আমরা আনন্দিত। এই বৃদ্ধাশ্রমের যুগে এই বিয়েটা একটা আলাদা বার্তা বহন করবে।
বর্তমান সময়ে বৃদ্ধাশ্রমকেই যখন বাবা-মাদের ঠিকানা করার প্রবনতা ক্রমশ বাড়ছে, তখন এমন ঘটনা অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে।

