অধ্যাপক স্বাতী মৈত্র
আমাদের ভারত, ১৩ আগস্ট: স্বাধীনতার ৭৫বছর পূর্তিতে সারা দেশ তাদের সাধ্য মতন এই বিশেষ দিনটি পালনে ব্যস্ত। স্বাধীনতার ইতিহাস নিয়ে তাই বিদ্যাসাগর মেট্রোপলিটন কলেজের ইতিহাস বিভাগ এক বিশেষ প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে। যেখানে স্বাধীনতা সংগ্রামের ১৮৫৭ থেকে ১৯৪৭ সালকে তুলে ধরা হয়েছে।
১৮৫৭ সালকে বেছে নেবার কারণ, এই সময়থেকে বৃটিশ শক্তিকে বেশ কঠিন প্রতিরোধের সম্মুখীন হতে হয়েছে। একের পর এক বীর যোদ্ধাদের আগমনে বৃটিশ শাসন টলে ওঠে। সমাপ্তি ঘটে কোম্পানির শাসনের, শুরু হয় ইংল্যান্ডের রাণীর পার্লামেন্টের শাসন। অবিভক্ত বাংলার ব্যারাকপুরে সেনা অভ্যুত্থান ঘটে, তারপর একে একে লক্ষ্ণৌ, মিরাট, গোয়ালিয়রে ছড়াতে থাকে বিদ্রোহের আগুন। ঠিক পরের বছরেই ১৮৫৮ সালে রাণী লক্ষ্মীবাই তাঁর ঝাঁসিকে বৃটিশ আগ্রাসন থেকে রক্ষার জন্য সশস্ত্র প্রবল প্রতিরোধ করেন, সম্মুখ সমরে তিনি বীরগতি লাভ করেন। ঝাঁসি বৃটিশ করতলগত হয়। এভাবেই একের পর এক ভারতীয় রাজ্যগুলি বিদেশি আগ্রাসনের মুখে পড়ে।
১৮৭৫ সালে প্রিন্স অফ ওয়েলস আলবার্ট এডওয়ার্ড, তাঁর মা ইংল্যান্ডেশ্বরী ভিক্টোরিয়ার রাজপ্রতিনিধি হিসাবে ভারতে আসেন। ইংল্যান্ডের রাণীকে ‘এমপ্রেস অফ ইন্ডিয়া’ বলে সম্বোধন করা হয়। আমাদের দেশমাতৃকা চীরকাল রত্নগর্ভা, এই বিদেশী শাসনের সময়ে, তেমনি পরপর এসেছেন বহু মনীষী, মহাপুরুষ, স্বাধীনতা সংগ্রামী, যাঁরা তাঁদের সম্পূর্ণ জীবন দেশ ও দশের সেবায় নিয়োজিত করেছিলেন, এ ভিন্ন তাঁদের কর্মপ্রবাহ অন্য কোন বিষয়কে প্রাধান্য দেয়নি। এই সময়ে ঘটে যাওয়া এমন বেশ কিছু ঘটনা, যেমন বঙ্গভঙ্গ, জালিয়ানওয়ালাবাগ এর হত্যাকান্ড ইত্যাদি ঘটনা মরণবান হয়ে জনজীবনে নেমে আসে।
সংগ্রামের এই ৯০টি ঘটনাবহুল বছরকে প্রদর্শনীতে ৯টি ভাগে ভাগ করা হয়েছে, প্রত্যেকটি ভাগে ১০ বছরের সংগ্রামের ইতিহাস দেখানো হয়েছে। কলেজ ভবনে এই প্রদর্শনীটি স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে প্রদর্শিত হবে। কলেজের ইতিহাস বিভাগের ছাত্রছাত্রীরা তাদের আলোচ্য বিষয়কে অত্যন্ত সুচারুভাবে দেখানোর চেষ্টা করেছেন৷ এই প্রদর্শনীর নানা বিষয়ের প্রকাশের পরিকল্পনা ও ভাবনার রূপায়নে এগিয়ে যেতে সহায়তা করেছেন সংগ্রহশালাবিদ্যার প্রাক্তন ছাত্র সায়ন্তন মুখার্জ্জী। ১৫ই আগষ্ট, সোমবার প্রদর্শনীটি থাকবে। সেটি আরও কিছুদিন ছাত্রছাত্রী ও দর্শকদের জন্য প্রদর্শিত হবে কি না তা কলেজ কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবেন।“