চাকরি না পাওয়ার ক্ষোভেই বালিগঞ্জে সানি পার্কে অপহরণ, গ্রেফতার ৬, মামলা অপহৃতের বিরুদ্ধেও

সৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা, ১৭ নভেম্বর: সকলের চোখের সামনে বালিগঞ্জের সানি পার্ক থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এক ব্যবসায়ীকে। সেই অপহরণের ঘটনায় ৬ জন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করল পুলিশ। প্রত্যক্ষদর্শীদের তোলা অপহরণে ব্যবহৃত গাড়ির ছবি দেখেই খোঁজ মেলে অভিযুক্তদের। একই সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগে মামলা করা হয়েছে অপহৃত ব্যবসায়ী শশীভূষণ দীক্ষিতের বিরুদ্ধেও।

পুলিশ জানিয়েছে, অপহরণ করার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে দেশপ্রাণ শাসমল রোডের বাসিন্দা জিতেন্দ্র প্রসাদ (২৭), আগ্রার বাসিন্দা সোনপাল সিংহ সিসৌদিয়া (১৮), আগ্রার ফতেহাবাদের বাসিন্দা সতীন্দ্র সিংহ (২০), বরানগরের বাসিন্দা মুন্না সিংহ (৪৫), রিষড়া নয়াবস্তির বাসিন্দা চন্দন কুমার পোদ্দার (২৮) এবং হাওড়ার প্রদীপ সিং (৩৫)কে।

পুলিশ সূত্রে খবর, উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুরের বাসিন্দা অপহৃত ওই ব্যক্তির নাম শশীভূষণ দীক্ষিত। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, শশীভূষণ চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে একাধিক লোকের কাছ থেকে টাকা নিয়েছিল। সেনায় চাকরি দেওয়ার শর্তে মুলায়ম সিংহ, টিকাম সিংহ, সোনপাল সিংহ সিসৌদিয়া এবং সতীন্দ্র সিংহের কাছ থেকে প্রায় সাড়ে ১০ লক্ষ টাকা নিয়েছিলেন শশীভূষণ। অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার, আই কার্ড সহ চাকরির কিছু কাগজপত্রও দেওয়া হয়েছিল। লখনউয়ের কম্যান্ডো হাসপাতালে বেশ কিছু যুবকের মেডিক্যাল টেস্ট ও হয়েছিল। কিন্তু তার পরে খতিয়ে দেখতে গিয়ে ওই যুবকেরা জানতে পারেন, সবটাই ভুয়ো।

এরপরই শশীভূষণকে অপহরণের ছক কষেন তাঁরা। তারা জানতেন, শশীভূষণ এতটাই বিত্তশালী এবং প্রভাবশালী যে, মামলা করলে ঠিক প্রভাব খাটিয়ে ছাড়া পেয়ে যাবেন। তাই আইন আদালত পেরিয়ে অপহরণ করে নিজেদের মতো ফয়সালা করতে চেয়েছিলেন প্রতারিতরা।

সেইমতোই শনিবার বিকাল সাড়ে চারটে নাগাদ বালিগঞ্জ থানা এলাকার সানি পার্ক থেকে অপহরণ করা হয় শশীভূষণকে। একটি সাদা রঙের এসইউভি গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। এরপর গাড়ির নম্বর প্লেটের সূত্র ধরে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। তদন্তে উঠে আসে গাড়িটি ব্যারাকপুর এলাকার। তারপরেই তল্লাশি চালিয়ে খোঁজ মেলে অপহরণকারীদের। আর তাদের জেরা করে আর তথ্যপ্রমাণ দেখেই উঠে আসে অপহৃত ব্যবসায়ীর প্রতারণার কথা। যা দেখে স্তম্ভিত খোদ তদন্তকারীরাই!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *