Student, mahishadal, মহিষাদলে ফেলে রাখা বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে প্রাণ গেল চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রের, দোষীদের শাস্তির দাবিতে সোচ্চার এলাকাবাসীরা

আমাদের ভারত, পূর্ব মেদিনীপুর, ২৯ জুন: গ্রামের মাঝে গজিয়ে ওঠা অবৈধ মাছের ভেড়িতে নিয়ে যাওয়া বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে মর্মান্তিক মৃত্যু হলো এক চতুর্থ শ্রেণির স্কুল ছাত্রের। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদল থানার মলুবসান গ্রামে। মৃত ছাত্রের নাম শুভম রাঙা (১০)।

পুলিশ সূত্রে খবর, শনিবার বিকেলে মৃত ছাত্রের দেহের ময়না তদন্ত হচ্ছে। এরপর দেহটি তার পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে।

গ্রামবাসীদের অভিযোগ, অবৈধ ভাবে মাছের ভেড়িতে বিদ্যুতের তার টেনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেই খোলা তারে জড়িয়েই এক রত্তির মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসীরা।

স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, শুক্রবার বিকেল ৫টা নাগাদ অন্যান্য দিনের মতো বাড়ির অদূরে বল নিয়ে খেলা করছিল শুভম। বলটি রাস্তার পাশে পড়ে গেলে সেটি কুড়োতে গিয়েই বিদ্যুতের খোলা তারে জড়িয়ে যায় ছেলেটি। সেই সময় ঘটনাস্থলে কেউ না থাকায় বিষয়টি কারোর নজরে আসেনি। এদিকে সন্ধে নেমে এলেও শিশুটি বাড়িতে না ফেরায় পরিবারের লোকেরা তাকে খোঁজাখুজি শুরু করে। সেই সময়ই শুভমকে সঞ্জাহীন অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। স্থানীয়রা তড়িঘড়ি শিশুটিকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। শুভম মহিষাদলের একটি বেসরকারি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ত। শনিবার স্কুলের পরীক্ষা ছিল। তবে শুভমের মৃত্যুতে এদিন স্কুল ছুটি দেওয়া হয়েছে।

মৃতের বাবা গৌরাঙ্গ রানা পেশায় একটি টায়ারের দোকানে কর্মী হিসেবে কাজ করেন। বাড়িতে একটি ছেলে ও মেয়ে রয়েছে। গৌরাঙ্গবাবু জানান, “গ্রামের অদূরে গড়ে ওঠা এই মাছের ভেড়ি সম্পূর্ণ অবৈধ উপায়ে বিঘার পর বিঘা ধান চাষের জমি কেটে তৈরি হয়েছে। আর সেই ভেড়িতে একটি বাড়ি থেকে দীর্ঘ পথ খোলা তারে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেই তার রাস্তার পাশে সামান্য মাটি দিয়ে চাপা দেওয়া রয়েছে। সেই তারের একটি জোড়া লাগানো জায়গায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে শিশুটির মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। যারা এই অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত তাদের কঠোর শাস্তির দাবি জানাচ্ছি”।

স্থানীয় সূত্রে খবর, মহিষাদল থানা এলাকায় গত কয়েক বছরে হাজার হাজার বিঘা ধান জমি লিজ চুক্তির মাধ্যমে নিয়ে গড়ে উঠেছে একের পর মাছের ভেড়ি। প্রশাসনের নাকের ডগায় বিপুল পরিমাণে জমির চরিত্র বদল না করেই সেগুলিকে কেটে ঝিল বানিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই ভেড়িগুলিতে পাকাপাকি ভাবে বিদ্যুতের সংযোগ না থাকায় গ্রামের কোনও বাড়ি থেকে খোলা তারে বিদ্যুৎ টেনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ভেড়িগুলিতে। মলুবসান গ্রামের বাসিন্দাদের দাবি, এই এলাকায় এভাবেই একাধিক মাছের ভেড়ি তৈরি হয়েছে। এদের বিরুদ্ধে প্রশাসন কঠোর ব্যবস্থা নিক।

যদিও মহিষাদল থানা সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় কোনও লিখিত অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ এলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *