কুমারগঞ্জে ছাত্রী খুনের ঘটনায় মহাবুর মিঞা সহ গ্রেপ্তার তিন, সামনে এল গণধর্ষণ করে পেট্রোল ঢেলে পোড়ানোর ঘটনা

আমাদের ভারত, বালুরঘাট, ৭ জানুয়ারি: কিশোরী খুনের ঘটনায় মহাবুর মিঞা সহ তিন জনকে গ্রেপ্তার করেছে কুমারগঞ্জ থানার পুলিশ। তদন্তে সামনে এল গণধর্ষণ করে খুন এবং তারপর বাইকের পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা। নৃশংস এই ঘটনায় মঙ্গলবার দিনভর অবরুদ্ধ জাতীয় সড়ক। অভিযুক্তদের ফাঁসির দাবিতে সরব স্কুলের ছাত্র ছাত্রীরা। পুলিশ জানিয়েছে ধৃতরা হল মহাবুর মিঞা, গৌতম বর্মন এবং পঙ্কজ বর্মন। মহাবুর মিঞা গঙ্গারামপুর থানার উদয় গ্রাম পঞ্চায়েতের পঞ্চগ্রামের বাসিন্দা হলেও গৌতম ও পঙ্কজ যথাক্রমে তপন ব্লকের রামপুরের কৃষ্ণবাটি এবং মুশাপাড়ার বাসিন্দা। সোমবার রাতে প্রত্যেককে তাঁদের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে কুমারগঞ্জ থানার পুলিশ। এদিন ধৃতদের বিরুদ্ধে গণধর্ষণ (৩৭৬ডি), খুন (৩০২) এবং প্রমাণ লোপাটের (২০১) ধারায় মামলা রুজু করে বালুরঘাট জেলা আদালতে পাঠায় পুলিশ। ঘটনার তদন্তের স্বার্থে পুলিশ ধৃতদের ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানালেও বিচারক ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

জেলা পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত জানিয়েছেন, পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠিয়ে রিমান্ড নিয়েছে। নৃশংস ভাবে ছাত্রী খুনের এই ঘটনায় মঙ্গলবার সকাল থেকেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা। গঙ্গারামপুরের ফুলবাড়িতে বালুরঘাট – গাজোল ৫১২ জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখিয়ে অভিযুক্তদের ফাঁসির সাজার দাবি করেন সাধারণ মানুষ। স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি একই দাবিতে সরব হন স্কুলের ছাত্রছাত্রীরাও। প্রতিবাদে সরব হন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলিও। ধৃতদের পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে উঠে আসে নৃশংসতার ভয়াবহ চিত্র।

জানাগিয়েছে, রবিবার দুপুরে চাদর কেনার জন্য বাড়ি থেকে বের হয় ওই কিশোরী। ফুলবাড়িতে এই ঘটনার মূল অভিযুক্ত মহাবুর তাঁর দুই বন্ধুকে নিয়ে দুটি মোটর বাইক করে ওই ছাত্রীকে কুমারগঞ্জের দিকে নিয়ে যায়। রাতে অশোকগ্রাম এলাকায় জলসা দেখার পর সাফানগরের বেলখোর পাকুড়তলার একটি জনশুন্যহীন এলাকায় খড়ের গাদার ভেতর প্রথমে মহাবুর ও পঙ্কজ রাতভর গণধর্ষণ করে ওই স্কুল ছাত্রীকে। ঘটনায় সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়লে সেই অবস্থাতেই তাঁকে পুনরায় ধর্ষণ করে অপর অভিযুক্ত গৌতম বর্মন বলে অভিযোগ। যার পরেই মহাবুর নিজের কাছে থাকা ছুরি ওই কিশোরীর পেটে ঢুকিয়ে দেয়, এবং পরবর্তীতে কালভার্টের উপরে নিয়ে গিয়ে শ্বাসনালী কেটে ওই স্কুল ছাত্রীকে নৃশংস ভাবে খুন করে মহাবুর বলে অভিযোগ। শেষে প্রমাণ লোপাট করতে মোটর বাইক থেকে পেট্রোল বের করে কালভার্টের হিউম পাইপের নীচে মৃতদেহ নিয়ে গিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় ওই অভিযুক্তরা। যার পরেই এলাকা থেকে পালিয়ে বাড়ি চলে যায় অভিযুক্তরা। সোমবার রাতে গৌতম বর্মন পুলিশের কাছে সমস্ত ঘটনা স্বীকার করে কান্নায় ভেঙ্গে পড়লেও বাকিরা অনড় থাকে।

এদিন অভিযুক্তদের ফাঁসির সাজার দাবি করেছেন ছাত্রীর মা। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর নিষ্পাপ মেয়েকে নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশ প্রশাসন এই ঘটনার অভিযুক্তদের ফাঁসির সাজা দিক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *