আমাদের ভারত, ৩ জুন:
লোকসভা ভোটের প্রচার পর্ব সেরে কন্যাকুমারীতে ধ্যান করতে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেখানে বিবেকানন্দরক মেমোরিয়ালে ৪৫ ঘন্টা ধ্যানে বসেন তিনি। ধ্যান ভাঙার পর বিমানে ফেরার পথে দেশবাসীর উদ্দেশ্যে চিঠি লিখেছেন প্রধানমন্ত্রী। সেই চিঠিতে একদিকে তিনি গোটা লোকসভা ভোটের প্রচারের অনুভূতি তুলে ধরেছেন, অন্যদিকে আগামী দিনের ভারতের জন্য কি কি নতুন সংকল্প নেওয়ার কথা ভাবছেন সেটা জানিয়েছেন।
দেশবাসীর উদ্দেশ্যে খোলা চিঠিতে নরেন্দ্র মোদী লিখেছেন লোকসভা ভোট শেষ হয়েছে। আমার মধ্যে এখন সীমাহীন এনার্জি। এতদিনের প্রচার পর্বের প্রতিটা অনুভূতি এবং অভিজ্ঞতা আমার চোখের সামনে ভাসছে। ভোট প্রচারের সভায় অজস্র মুখের ভিড় দেখেছি। নারীশক্তি অনুভব করেছি। মানুষের আশীর্বাদ আমি পেয়েছি। এত ভালবাসা পেয়ে আমার চোখ ছল ছল করেছে। কিন্তু ধ্যানে বসার পর আমি যেন বাহ্যিক জগৎ থেকে একেবারে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিলাম।
মোদীর চিঠিতে একাধিকবার স্বামী বিবেকানন্দের নাম উঠে এসেছে। মোদী জানিয়েছেন, বিশাল দায়িত্বের মাঝে এত ঘন্টা ধরে নীরবে ধ্যান করাটাও ছিল চ্যালেঞ্জ। তবে স্বামীজির অনুপ্রেরণায় তা করতে তিনি সক্ষম হয়েছেন। মোদী লিখেছেন, আমি নিশ্চিত স্বামীজিরও ধ্যান করার সময় এত ভাবনা এসেছে।
এই চিঠিতে করোনাকাল থেকে শুরু করে জি-টোয়েন্টি শীর্ষ সম্মেলনের প্রসঙ্গ তুলে ধরেছেন নরেন্দ্র মোদী। তিনি লিখেছেন, প্রত্যেক দেশের কিছু বলার থাকে একটা গন্তব্য থাকে। আর এখন তো ভারতের প্রশাসনিক মডেল বিশ্বের অনেক দেশের কাছে মডেল হয়ে উঠেছে। করোনাকালেও ভারত যেভাবে লড়াই করেছে তাও বহু দেশকে অনুপ্রাণিত করেছে। মোদীর কথায়, ভারত বিশ্বের কাছে একটা উদাহরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। চিঠিতে নরেন্দ্র মোদী দাবি করেছেন, দশ বছরে ২৫ কোটি মানুষকে দারিদ্র সীমার উপরে তুলে এনে সরকার নজির তৈরি করেছে। আজকের দিনে দাড়িয়ে ভারতের উন্নতি শুধু এই দেশকে নয় ভারতের ওপর নির্ভরশীল একাধিক দেশের উন্নয়ন করেছে। প্রধানমন্ত্রীর মতে দেশকে বিকশিত ভারত তৈরি করার ক্ষেত্রে আরো কঠিন পরিশ্রম করতে হবে। কাজ করতে হবে জিরো ডিফেক্ট জিরো এফেক্ট মন্ত্র নিয়ে। গতি, মাপ, পরিসর ও মান এই চারটি ক্ষেত্র বজায় রেখে কাজ করতে হবে।
আগামী দিনে কাজ করার বার্তা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী ২০৪৭ সালের মধ্যে ভারত যাতে উন্নতির শিখরে পৌঁছতে পারে সেই মাত্রা বেঁধে দিয়েছেন। নরেন্দ্র মোদী এই প্রসঙ্গে মনে করিয়েছেন, স্বামী বিবেকানন্দের কথা। তিনি বলেছেন, ১৮৯৭ সালে স্বামীজি আগামী ৫০ বছর জন্য দেশের জন্য কাজ করার বার্তা দিয়েছিলেন। দেখা যায় ঠিক ৫০ বছর পরই ১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীনতা পেয়েছিল। তাই এখন থেকে আমাদেরও পরবর্তী অন্তত ২৫ বছর দেশের প্রতি নিযুক্ত হতে হবে। ১৪০ কোটি মানুষকে সঙ্ঘবদ্ধ হওয়ার ডাক দিয়েছেন মোদী।