আমাদের ভারত, ১২ জুন: বাংলাদেশজুড়ে কেবল অরাজকতা। শুধু মন্দির নয়, বাঙালির গর্বের ইতিহাসকেও ভূ- লুন্ঠিত করে চলেছে ইউনুস নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ। রবীন্দ্রনাথ বা নজরুলের মতো বিশ্ববন্দিত কবিদের স্মৃতি বিজড়িত স্থপতিগুলোতে একের পর হামলার ঘটনা ঘটেই চলেছে ওপার বাংলায়। কবিগুরুর পৈতৃক বাড়ি কাছারিবাড়ি ভাঙ্গচুর করলো দুষ্কৃতিরা
পদ্মা পাড়ের চরম অরাজকতার নির্লজ্জতা আবারো প্রকাশ্যে এলো। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পৈত্রিক ভিটে ব্যপক ভাবে ভাঙ্গচুর চালালো দুষ্কৃতীরা। প্রবল অশান্তির পর অনির্দিষ্টকালের জন্য দর্শনার্থীদের প্রবেশ বন্ধ করেছে স্থানীয় প্রশাসন। প্রশ্ন উঠেছে, ঐতিহাসিক বাড়িটির নিরাপত্তা ও পুলিশের ভূমিকা নিয়েও।
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার অন্যতম আকর্ষণ রবীন্দ্রনাথের পৈত্রিক ভিটে। কাছারি বাড়ি হিসেবে এটা জনপ্রিয়। বিশ্বকবির স্মৃতি বিজরিত বাড়িটিতে মানুষ ভিড় জমান।
ইন্দো ইউরোপিয়ান স্থাপত্য শৈলীতে নির্মিত দোতলা বাড়িতে বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধীনে রয়েছে। সূত্রের খবর, মঙ্গলবার দুপুরে সেখানে ঘুরতে আসা এক পরিবারের সঙ্গে বচসা বাধে বাড়ির দায়িত্বে থাকা সরকারি কর্মীদের। পার্কিং সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে ঝামেলা শুরু হয়, যা বচসা ও হাতাহাতিতে গড়ায়। অভিযোগ, ওই দর্শনার্থীদের আটকে রাখা হয়। এই গোলমালকে কেন্দ্র করেই শাহজাদপুর প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন করে বিক্ষুব্ধ জনতা। পরে বিক্ষোভ মিছিলটি কাছারি বাড়িতে ঢুকে পড়ে। ওই পরিবারটির লোকজন দলবল নিয়ে হামলা চালায় বাড়িটির কাস্টোডিয়ান- এর অফিসে। অডিটোরিয়াম ভাঙ্গচুর করা হয় বলে অভিযোগ।
ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বহু মূল্যবান জিনিস। এখনো পর্যন্ত ঘটনায় পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করেনি। ফলে প্রশ্ন উঠেছে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে। এত অশান্তির সময় পুলিশ কোথায় ছিল? সেখানে কেন কোনো পদক্ষেপ করা হয়নি? আর্কিওলজিক্যাল বিভাগের তরফে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে পাঁচ দিনের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।
১৯৪০ সালে রবি ঠাকুরের পিতামহ প্রিন্স দ্বারকা নাথ ঠাকুর শাহজাদপুরে জমিদারি কিনে নেন। সেই সময় কাছারি বাড়ি ঠাকুর পরিবারের হাতে আসে। কবিগুরু জীবনের বেশ কিছুটা সময় বাড়িতে কাটিয়েছেন। এরপর ১৯৬৯ সালে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর বাড়িটি সংরক্ষণের দায়িত্ব নেয়। পরে এটিকে মিউজিয়ামে পরিণত করা হয়। বাড়িটি বর্তমানে রবীন্দ্র জাদুঘর হিসেবে পরিচিত। এই ঐতিহাসিক জায়গায় ভাঙ্গচুরের ঘটনায় নিন্দার ঝড় উঠেছে নানা মহলে।