সাথী দাস, পুরুলিয়া, ৩ সেপ্টেম্বর: পা দিয়ে লিখে টিউশন পড়িয়ে মা ও দাদাকে নিয়ে সংসার চালাচ্ছেন চেলিয়ামার প্রতিবন্ধী যুবক। এখানে যেন অদম্য জেদ আর পরিস্থিতির কাছে হার মেনেছে প্রতিবন্ধকতা।
জন্ম থেকেই দুটো হাত অকেজো। তবুও হাল ছাড়েনি পুরুলিয়ার রঘুনাথপুর-২ ব্লকের চেলিয়ামা সরকার পাড়ার যুবক ভোলানাথ ব্যানার্জি। হাত অকেজো হলেও মানসিকভাবে ভেঙে পড়েননি, রাখেননি নিজেকে গুটিয়ে।মনের জোরকে সম্বল করে তিনি ছোট বেলা থেকেই পায়ের আঙুলের মাঝে কলম ধরে লিখতে শেখেন। তারপর পায়ে লিখেই ২০০২ সালে দ্বিতীয় বিভাগে মাধ্যমিক পাশ করেন। ২০০৪ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন। তারপর কলেজে পড়া। রঘুনাথপুর কলেজে ভর্তি হন ভলু। কিন্তু কলেজের প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষে পায়ে লিখেই পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হলেও তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষার সময় ২০০৬ সালে হঠাৎ তাঁর বাবা যামিনী ব্যানার্জি মারা যান। সেই কারণে তাঁর আর পরীক্ষা দেওয়া হয়নি। এরপর মা বকুল ব্যানার্জি ও বেকার দাদা চন্দন ব্যানার্জিকে নিয়ে তাঁর শুরু হয় সংসার ধর্ম পালন। প্রতিমাসে এক হাজার টাকা করে প্রতিবন্ধী ভাতা পান তিনি। কিন্তু তাতে কি আর সংসার চালানো যায়? তাই, পেটের তাগিদে ভোলানাথ এলাকার পড়ুয়াদের খুব অল্প পারিশ্রমিকের বিনিময়ে পায়ে লিখেই টিউশন পড়াতে শুরু করেন।

তাঁর আবেদন, “সরকার থেকে কোনও কাজের ব্যবস্থা করে দিলে আর্থিক অনটন থেকে রক্ষা পাবে পরিবারটি।” তিনি আরও জানান, দুই বোনের বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর বেকার দাদা ও বিধবা মাকে নিয়ে তাঁর বেঁচে থাকার লড়াই চালিয়ে যাবেন তিনি। এটাই তাঁর সংকল্প।

