সৌভিক বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা, ২০ ফেব্রুয়ারি: একই সঙ্গে ছিপে খেলাছিল দিদি বোন দু’জনকেই। এমনকি দু’জনের সঙ্গে বিভিন্ন সময়ে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়ে মজাও লুটে নেয় ওই যুবক। কিন্তু বহুবিবাহের অনুমতি নেই ভারতে। তাই বয়স্ক দিদিকে সরিয়ে ছোট বোনকে বিয়ে করে নেয় ওই যুবক।
ঠিক যেন এ আরেক টুকরো, ‘মেঘে ঢাকা তারা’ অথবা বলা যায় দো ফুল, এক মালি। দিদির সঙ্গে প্রেম করে বিয়ে বোনকে। সিনেমার নীতা মুখ বুজে মেনে নিয়েছিল প্রেমিকের বিশ্বাসঘাতকতা, বোনের বিশ্বাসভঙ্গতা। কিন্তু নিজের জীবনে এই ঘটনা কানে আসতে উত্তর কলকাতার এক তরুণী সেই ঘটনা মেনে নেয়নি। তাঁরই প্রেমিক তাঁর সঙ্গে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে দিনের পর দিন ধরে তাঁকে লুটেপুটে খেয়ে যে তাঁরই বোনকে বিয়ে করেছে! সোজা সিঁথি থানায় গিয়ে ভগ্নিপতির বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও মারধরের অভিযোগ করেছেন তিনি। ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই ছড়িয়েছে চাঞ্চল্য।
জানা গিয়েছে, প্রায় ৪ বছর আগে অভিযুক্ত যুবকের সঙ্গে পরিচয় হয় ওই তরুণীর। যুবকের বাড়ি সিঁথির দমদম রোডে। তরুণীর দাবি, আলাপের সময়েই নাবালিকা ছিলেন তিনি। সেই সময় থেকেই প্রেম ও তার হাত ধরে শারীরিক সম্পর্ক। ওই যুবকের বাড়িতে ও দীঘা, শান্তিনিকেতন, মাইথন প্রভৃতি জায়গায় ঘুরতে গিয়েও ওই যুবকের সঙ্গে একাধিকবার সহবাসে জড়ান ওই তরুণী। তাকে বিবাহের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ওই যুবক। বছর দুই আগেই তরুণী ১৮ বছর পূর্ণ করায় ওই যুবককে বিয়ে করতে বলেন। অভিযোগ, এরপর থেকেই ওই তরুণীকে ক্রমশ এড়িয়ে চলতে শুরু করে ওই যুবক। কিন্তু সম্পূর্ণ সম্পর্ক ছেড়ে দেননি।
এক বছর আগে ওই তরুনী জানতে পারেন, তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার সুবাদে তাঁর বোনের সঙ্গেও সম্পর্ক গড়েছে ওই যুবক। এই নিয়ে ওই তরুণী অভিযুক্ত যুবককে চেপেও ধরেন। তার ওপর জোর দিতে থাকেন তাঁকে বিয়ে করার জন্য। কিন্তু তাতে হিতে বিপরীত হয়। তরুণী জোর করতে শুরু করলে তাঁকে মারধর করা হয়। সঙ্গে হুমকি দিতে থাকে এই যুবক। এরই মধ্যে জোর করে ওই অভিযোগকারিনী তরুণীর সঙ্গে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে ওই যুবক।
গত জানুয়ারি মাসে তরুণীর কাছে তাঁর বোনের সঙ্গে ওই যুবকের সম্পর্ক ও তাঁদের বিয়ের বিষয়টি সামনে আসে।
অভিযোগ, তাঁর বাড়ির লোকের সামনে দাঁড়িয়ে ওই তরুণীর বোন জানায়, ওই যুবকের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের কথা। কিন্তু অদ্ভুত ভাবে তাঁর বাড়ির লোকেরা ওই যুবককেই সমর্থন করে। এমনকি তরুণীর বোনও জানিয়ে দেয়, দিদির প্রেমিককেই সে বিয়ে করবে। জানুয়ারি মাসের শেষ দিকে ওই তরুণীর বাড়ির লোকেরাও ওই যুবকের সঙ্গে বাড়ির ছোট মেয়ের বিয়েও দিয়ে দেন। এরপরই মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন ওই তরুণী। সিঁথি থানায় তাঁর প্রেমিক তথা ভগ্নিপতির বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও মারধরের অভিযোগ দায়ের করেছেন। যদিও অভিযুক্ত যুবক এখনও গ্রেফতার হয়নি। তবে এতদিন কেন অভিযোগকারিনী সব জেনেও চুপ করে ছিলেন, অভিযোগ করে পুলিশের সাহায্য চাননি, সেই বিষয়টিও ভাবাচ্ছে পুলিশকে।