সোমনাথ বরাট, আমাদের ভারত, বাঁকুড়া, ২ এপ্রিল: রাজ্যে যাদব উন্নয়ন পর্ষদ গঠন, পঞ্চায়েত নির্বাচনে যাদবদের জন্য আসন সংরক্ষণ সহ কয়েক দফা দাবিতে সোচ্চার হলো যাদব সভা। আজ এই জোরালো দাবি উঠে এলো সম্মিলিত যাদব সভার সম্মেলনে।
আজ গঙ্গাজলঘাঁটি ব্লকের খটিয়ালা স্কুল ফুটবল ময়দানে যাদব সভার সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বাঁকুড়া জেলা যাদব সভার সভাপতি সব্যসাচী মন্ডল। উপস্থিত ছিলেন বঙ্গীয় যাদব সভার যুব সম্পাদক উজ্জ্বল গোপ, প্রবীণ সমাজ সংস্কারক কামাক্ষ্যাচরণ মন্ডল, বারিদবরণ মন্ডল, সুবল মন্ডল, শিক্ষাবিদ বিধান আউলি, মাণিক ঢাং, রবিলোচন গোপ, কৃষ্ণ বড়ু, ধীরেন ডাঙ্গর সহ যাদব সম্প্রদায়ের রাজ্য ও জেলা নেতৃত্ব।
জেলা সভাপতি সব্যসাচী মন্ডল বলেন, সম্প্রদায়গত ভাবে সারা দেশে সংখ্যা গরিষ্ঠতার দিক থেকে যেমন ১ নম্বর তেমনি এরাজ্যেও যাদবরা অন্যতম সংখ্যা গরিষ্ঠ সম্প্রদায়। অথচ আমরা এরাজ্যে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ভাবে সব চেয়ে পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়। এদিকে সরকারের কোনও দৃষ্টিভঙ্গি নেই। বর্তমান সরকার রাজ্যের অন্যান্য পিছিয়ে পড়া অনুন্নত সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষদের জন্য উন্নয়ন পর্ষদ গঠন করেছে। কিন্তু যাদবদের জন্য কোনও বোর্ড নেই। অবিলম্বে যাদব উন্নয়ন পর্ষদ গঠন করতে হবে।
সংগঠনের রাজ্য যুব সভাপতি উজ্জ্বল গোপ দাবি করেন, রাজনৈতিক ভাবে যাদবরা এরাজ্যে সব থেকে বঞ্চিত। এতবড় রাজ্যে পঞ্চায়েত স্তরে দুএকটা হাতে গোনা সদস্য পাওয়া গেলেও জেলা পরিষদের কোনও সভাধিপতি পায়নি এখনও। রাজ্য বিধানসভায় ২৯৪ আসনে সব সম্প্রদায়ের জনপ্রতিনিধি থাকলেও যাদব সম্প্রদায়ের একজনও প্রতিনিধি নেই। কে এই সম্প্রদায়ের বঞ্চনার কথা তুলে ধরবেন। উজ্জ্বল বাবুর দাবি সামনের বিধানসভা নির্বাচনে যাদবদের জন্য সংরক্ষিত আসন চাই। পাশাপাশি ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে পঞ্চায়েত প্রধান, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও জেলা পরিষদের সভাধিপতি পদেও সংরক্ষণ চাই।
এই সম্মেলনের অভ্যর্থনা কমিটির সভাপতি অরুণ মন্ডল, সম্পাদক ভৈরব ঘোষ, স্বপন ঘোষ, দয়াময় ঘোষ, তারাপদ ঘোষ বলেন, আমরা এই সম্মেলন মঞ্চে একগুচ্ছ প্রস্তাব নিয়েছি। জেলা সংগঠনের মাধ্যমে সেগুলি রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানো হবে। দাবিগুলি হল, দুগ্ধ ও দুগ্ধজাত শিল্পকে কুটির শিল্পের মর্যাদা দান, যাদব সম্প্রদায়ের পুরুষ ও মহিলাদের ৬০ বছর বয়স হলেই পেনশন দিতে হবে। পশুপালন ক্ষেত্রে বিনা পয়সায় চিকিৎসা ও ওষুধের ব্যবস্থা করতে হবে। দুধের দাম প্রতি লিটার ৮০ টাকা ও ছানার দাম ২৫০ টাকা কেজি ধার্য করতে হবে। গো খাদ্যের ৮০ শতাংশ ভর্তুকি দিতে হবে। ওবিসি শংসাপত্র দেওয়ার ক্ষেত্রে অকারণ হয়রানি ও টালবাহানা বন্ধ করতে হবে।
এদিন সভা শুরুর আগে যদুপতি শ্রীকৃষ্ণের প্রতিকৃতি নিয়ে প্রায় ৩ হাজার নারী পুরুষের একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা এলাকা পরিক্রমা করে।