পার্থ খাঁড়া, আমাদের ভারত, পশ্চিম মেদিনীপুর, ২২ সেপ্টেম্বর: প্রায় হাজার বছরের পুরনো সুপ্রাচীন এক প্রস্তর মূর্তি। তাতে দেবী দুর্গার অবয়বই ফুটে উঠেছে বলে মনে করছেন আধিকারিক ও জনপ্রতিনিধিরা। দেবীপক্ষের সূচনা লগ্নে সোমবার সেই সুপ্রাচীন মূর্তিকেই দেবী দুর্গা রূপে আরাধনা করা হলো পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদে। মহালয়ার ঠিক পরের দিনই এই পুজো ঘিরে আনন্দ-উৎসবে মেতে উঠলেন আমলা, আধিকারিক, জনপ্রতিনিধি ও জেলা পরিষদের কর্মীরা। সকলেই একবাক্যে বললেন, “জেলাবাসীর মঙ্গল কামনায় এই পুজো।”

প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, বিভিন্ন সময়ে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এই ধরনের কিছু মূর্তি উদ্ধার করা হয়। প্রত্নতাত্ত্বিক গুরুত্ব থাকায় এতদিন সেগুলি জেলা গ্রন্থাগারেই সংগ্রহ করে রাখা হয়েছিল। চলতি বছরের মে মাসে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে ‘বর্ণপরিচয় গ্রন্থাগার ও সংগ্রহশালা’-র উদ্বোধন হয়। সেই উপলক্ষেই কিছু ঐতিহাসিক বইপত্র ও নথির খোঁজে সম্প্রতি জেলা গ্রন্থাগারে গিয়েছিলেন শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ শ্যামপদ পাত্র সহ কয়েকজন আধিকারিক। সেখানেই এই মূর্তিগুলি দেখে শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ তা বর্ণপরিচয় মিউজিয়ামে নিয়ে আসার বিষয়ে পরিকল্পনা করেন। বিষয়টি তিনি জেলা পরিষদের সভাধিপতি ও অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ)-কে জানালে তাঁরা রাজি হন এবং প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করেন। সম্প্রতি রাজ্যের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অনুমতি মেলার পর, সোমবারই এই মূর্তিগুলি জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ হাতে পান। কাকতালীয়ভাবে রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দেবীপক্ষের সূচনা হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই সোমবার দুর্গা মূর্তি হাতে পেয়ে উচ্ছ্বসিত সভাধিপতি থেকে আমলা ও আধিকারিকরা। এরপরই সিদ্ধান্ত হয়, জেলাবাসীর মঙ্গল কামনায় দুর্গা মূর্তিটি পুজো করা হবে। আর সেই পুজো হবে পুরোপুরি পরিবেশ বান্ধব। সেই মতোই এদিন পুজোর আয়োজন করা হয়। যেখানে উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি প্রতিভা মাইতি, অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলাশাসক) শ্রীনিবাস রাও পাটিল সহ জেলা পরিষদের সকল কর্মাধ্যক্ষ, আধিকারিক ও কর্মীরা।

জেলা পরিষদের সভাধিপতি প্রতিভা মাইতি বলেন, “এক শুভ সন্ধিক্ষণে মা আমাদের কাছে এসেছেন। তাই জেলাবাসীর মঙ্গল কামনায় এই পুজোর আয়োজন। এই মূর্তিখানি এখানেই (জেলা পরিষদে) স্থাপন করার ইচ্ছে রয়েছে।”
অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) শ্রীনিবাস রাও পাটিল বলেন, “আমরা দেবী দুর্গার আরাধনা করলাম। পরিবেশবান্ধব উপকরণের মাধ্যমেই পুজো হয়েছে।”

