রাস্তার নরক যন্ত্রণা, হাসপাতালে পৌঁছাতে না পেরে রাস্তাতেই সন্তানের জন্ম দিলেন প্রসূতি, প্রতিবাদে বংশীহারিতে পথ অবরোধ মহিলাদের

পিন্টু কুন্ডু, বালুরঘাট, ১৬ সেপ্টেম্বর: স্বাধীনতা পেলেও ৭৪ বছর পরেও গ্রামের লোকেরা পাননি পাকা রাস্তার স্বাদ। আজও এক হাঁটু কাদা জলের নরক যন্ত্রণা যেন তাড়া করে বেড়াচ্ছে গ্রামবাসীদের। অ্যাম্বুলেন্স তো দূর বেহাল সেই রাস্তায় চলতে সাইকেলও যেন ভয় পায়। পেটে যন্ত্রণা নিয়ে সেই রাস্তা দিয়ে প্রসূতিকে নিয়ে যেতেই ঘটল বিপত্তি। খোলা আকাশের নীচেই সন্তান প্রসব করলেন এক মহিলা। যে ঘটনা সামনে এনে পাকা রাস্তার দাবিতে ক্ষোভে ফেটে পড়লেন মহিলারা। একজোট হয়ে আন্দোলনেও নামলেন গ্রামের মানুষ। বৃহস্পতিবার চাঞ্চল্যকর এমন ঘটনায় রীতিমতো শোরগোল পড়েছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বংশীহারী ব্লকের গাঙ্গুরিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের লছুয়াপাড়া এলাকায়। ঘটনার খবর পেয়ে এলাকায় তড়িঘড়ি ছুটে যান জয়েন্ট বিডিও ও পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি। যাদের আশ্বাসেই দীর্ঘক্ষণ পরে অবরোধ তুলে নেন বাসিন্দারা।

জানাগেছে, ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের বাজিহরিপুর হয়ে লছুয়াপাড়া মোড় ভায়া শান্তিপুর পর্যন্ত প্রায় ৬ কিলোমিটার রাস্তা দীর্ঘদিন ধরেই কাঁচা, বেহাল অবস্থায় পড়ে রয়েছে। ওই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে গিয়ে এলাকার বেশ কয়েকটি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ প্রায় প্রতিদিনই চরম দুর্ভোগে পড়েন। গাড়ি তো দূরের কথা রাস্তায় সাইকেল নিয়ে চলাও দুর্বিষহ ব্যাপার। আর যে রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় চরম দুর্ভোগে পড়েন এক প্রসূতি মহিলা। দিন কয়েক আগে যাকে হাসপাতালে নিয়ে যাবার সময় রাস্তাতেই সন্তান প্রসব করেন তিনি। এমন ঘটনার প্রতিবাদে এদিন একত্রিত হন এলাকার মহিলারা। রাস্তার দাবিতে পথ অবরোধ করে তুমুল বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন স্থানীয়রা।

বিপ্লব রায় ও মার্টিনা মুর্মুরা জানিয়েছেন, কাঁচা রাস্তার কারণে প্রচন্ড অসুবিধায় পড়তে হয় গ্রামের বাসিন্দাদের। রাস্তার দুর্ভোগের কারণে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়ছে প্রসূতি মহিলারা। পেটে যন্ত্রণা নিয়ে হেঁটে যেতে গিয়ে রাস্তাতেই সন্তান প্রসব করে ফেলছেন। এমন ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। যার প্রতিবাদেই তাঁরা পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন।

বংশীহারী পঞ্চায়েতের সহ সভাপতি গণেশ প্রসাদ বলেন, এদিন ঘটনার খবর পেয়েই এলাকায় ছুটে গিয়েছেন। রাস্তা তৈরির দ্রুত আশ্বাস দিয়ে স্বাভাবিক করা হয়েছে পরিস্থিতি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *