আমাদের ভারত, ৮ ফেব্রুয়ারি: শেখ শাজাহানকে এখনো গ্রেফতার করেনি পুলিশ। আর এর প্রতিবাদে এবার ক্ষোভে ফুঁসছে সন্দেশখালি। শুধু শেখ শাহজাহান নয়, সন্দেশখালি গ্রামের মহিলাদের মুখে উঠে এসেছে এলাকার আরো একাধিক শাসক দলের আশ্রিত গুন্ডার নাম। অভিযোগ, তেরো বছর ধরে তারা অত্যাচারের শিকার। তাই দেওয়ালে পিঠ ঠেকার অবস্থায় পৌঁছে আজ পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে লাঠি, বাঁশ, ঝাঁটা হাতে রাস্তায় নেমে আসেন গ্রামের মহিলারা।
প্রতিবাদী মহিলাদের দাবি, শাহজাহান ছাড়াও উত্তম সর্দার, শিবু হাজরা, আমির গাজি, পিন্টু বোস, দেবাশীষ, লালটু বোসেরা গ্রামবাসীদের উপর অত্যাচার চালাতো। দিনের পর দিন তারা অত্যাচারের শিকার বলে অভিযোগ করেন তারা।
ভয়াবহ অভিযোগ তুলেছেন গ্রামের মহিলারা। তাদের অভিযোগ, স্কুলের বাচ্চাদের পড়াশোনা বন্ধ করে তাদের হাতে বন্দুক ধরিয়ে দেওয়া হতো। বিক্ষোভকারী আরো এক মহিলার দাবি, তাদের ছোট ছোট বাচ্চাদের ডেকে নিয়ে গিয়ে রাজনীতি করতে বলতে বলা হত। রাজনীতি না করলে ভাত দেওয়া হবে না, বলা হতো তোদের ভাত দিচ্ছে দিদি, তাহলে রাজনীতি না করলে ভাত পাবি কোথা থেকে?
আরেক বিক্ষোভকারী মহিলা বলেন, তাদের বাচ্চাগুলোকে স্কুল থেকে নিয়ে গিয়ে ডানহাতে বন্দুক আর বাঁ হাতে মদের বোতল ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এরপর বলা হচ্ছে , “তোরা মাকে বাবাকে মার। কোনো পরিচিতি নেই, যাকে ইচ্ছা মারার নির্দেশ দেওয়া হতো, ওরা বলতো চল ঘর ভাঙ্গতে যাব, ওকে মারতে হবে, জমি আদায় করতে হবে।” এভাবেই বছরের পর বছর গুন্ডারাজ চলেছে সেখানে বলে দাবি ওই বিক্ষোভকারী মহিলাদের।
এইসবের প্রতিবাদ করলে বাড়ির পুরুষদের তুলে নিয়ে গিয়ে কোদালের বাঁট দিয়ে পেটানো হতো।
শেষে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার পরিস্থিতি এসেছে। ফলে বৃহস্পতিবার তার বিস্ফোরণ ঘটে। সকাল থেকেই উত্তপ্ত সন্দেশখালি। লাঠি, বাঁশ, ঝাঁটা হাতে মহিলাদের পুলিশের কাছে দাবি, শেখ শাহজাহান ও তার ঘনিষ্ঠদের গ্রেপ্তার করতে হবে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে পুলিশ তাদের আশ্বস্ত করেন। তদন্ত চলছে, দু’জন গ্রেপ্তার হয়েছে। কিন্তু তাতে ব্যর্থ হয় পুলিশ। মহিলারা পাল্টা পুলিশকে প্রশ্ন করেন, কাকে কাকে গ্রেফতার করেছেন? কিন্তু তার উত্তর দিতে পারেনি পুলিশ। তদন্ত চলছে বলে কোনক্রমে দায় ঝেড়েছেন তারা। বিক্ষোভকারী মহিলাদের দাবি, পুলিশ কাঠের পুতুল, ওরা চুপ, ওদের কিছু করার নেই। কিছু বললেই মিটিয়ে নেওয়ার কথা বলছে পুলিশ।সন্দেশখালির মহিলাদের দাবি তারা এলাকায় শান্তি চান।