আমাদের ভারত,১১ অক্টোবর: দুর্গাপুর বেসরকারি মেডিকেল কলেজের এক ছাত্রীকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। নির্যাতিতা তরুণীর বাড়ি ওড়িশায়। তিনি যে মেডিকেল কলেজে পড়তে দুর্গাপুরে এসেছেন তাকে ওই মেডিকেল কলেজের পেছনের জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। গণধর্ষণের ঘটনায় অভিযোগ দায়ের করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। প্রাথমিকভাবে অনুমান ঘটনায় অভিযুক্তরা কলেজের কেউ নয়, প্রত্যেকেই বহিরাগত দুষ্কৃতি। আর জি কর, কসবার পর দুর্গাপুরের ঘটনায় এই রাজ্যে নারী নিরাপত্তা তথা আইন শৃঙ্খলা নিয়ে সরব হয়েছেন বিজেপি নেতা তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার।
কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার বলেন, দুর্গাপুরের ঘটনাটি কলেজের বাইরে ঘটেছে। কলেজের ভেতরে ঘটলে তবু সেখানকার নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তোলার অবকাশ থাকতো। কিন্তু যেহেতু ঘটনাটি কলেজের বাইরে ঘটেছে, ফলে রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন উঠতে বাধ্য। মহিলারা যে এই রাজ্য সুরক্ষিত নয়, সেটা আবার প্রমাণিত। তিনি মনে করিয়ে দেন, এখানে তৃণমূল কংগ্রেস নিজের দলের মহিলা আদিবাসী প্রধানকেও মারধর করে মুখে কালি লেপে দিচ্ছে। ফলে নারী সুরক্ষা শিকেয় উঠেছে।
প্রসঙ্গত, নির্যাতিতার পরিবার জানিয়েছে, শুক্রবার রাত সাড়ে আটটা নাগাদ এক সহপাঠীর সঙ্গে ওই তরুণী কলেজের বাইরে বেরিয়েছিলেন খাবার খেতে। সেই সময় কয়েকজন যুবক ওই তরুণীর পথ আটকায় এবং জোর করে হাসপাতালের পিছনে থাকা একটি জঙ্গলে নিয়ে যায়। এদিকে দুষ্কৃতিদের তাড়া খেয়ে তরুণীর সঙ্গে থাকা ওই সহপাঠীরা পালিয়ে যায় বলে জানা যায়। গণধর্ষণের পর ডাক্তারি পড়ুয়ার মোবাইলটি ছিনিয়ে নেয় দুষ্কৃতীরা। তার কাছে টাকাও দাবি করে মোবাইল ফেরানোর জন্য। এমনকি মুখ খুললে প্রাণে মারার হুমকি দেওয়া হয়।
এরপর নাকি এই সহপাঠীই ফিরে গিয়ে ওই নির্যাতিতাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে এনে ভর্তি করে। যদিও ওই সহপাঠীর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন পরিবারের লোকজন।
এর আগেও রাজ্যে আর জি কর- এ তরুণী ডাক্তারকে ধর্ষণ ও খুন করা হয়েছিল। তার কয়েক মাস পরেই কসবা ল’ কলেজে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছিল। এবার দুর্গাপুর বেসরকারি হাসপাতালে ধর্ষণের শিকার হলেন ডাক্তারি পড়ুয়া। ঘটনার তদন্ত শুরু করলেও পুলিশ এখনো কোনো অভিযুক্তকে ধরতে পারেনি।
ঘটনায় জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্য অর্চনা মজুমদার দোষীদের সঠিকভাবে ধরে শাস্তি না দেওয়ার কারণেই এই যৌন নির্যাতনের ঘটনা বেড়ে চলেছে বলে অভিযোগ করেছেন। তাঁর কথায়, আমরা যতই দৌড়াই না কেন, কোন এক অদৃশ্য হাতের জন্য সেভাবে শাস্তি হচ্ছে না।
দুর্গাপুরের এই ঘটনায় রিপোর্ট করেছে স্বাস্থ্য ভবন। ঘটনায় সহপাঠীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে নির্যাতিতার পরিবার। তার বাবা বলেছেন, দশটা নাগাদ মেয়ের সহপাঠীরা আমাদের ফোন করে জানায় মেয়ের গণধর্ষণ হয়েছে। এখানে পড়তে পাঠিয়েছিলাম মেয়েকে, শুনলাম মেয়েকে খাবার খাওয়াতে ক্যাম্পাসের বাইরে নিয়েগিয়েছিল ওর সহপাঠীরা, তখন দু’ তিনজন মেয়েকে ঘিরে ফেললে ওই সহপাঠীরা ওকে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় না। মেয়ের গণধর্ষণ করা হয়। রাত আটটা থেকে ন’টার মধ্যে ঘটনাটি ঘটে। ঘটনাস্থল থেকে হোস্টেল অনেক দূরে। তাঁর অভিযোগ, এখানে কোনো নিরাপত্তা নেই। এমন একটা ভয়াবহ ঘটনা কিভাবে ঘটে গেল? কোনো পদক্ষেপ এখনো করা হয়নি। কোনো সিস্টেম নেই এখানে। কোনো দায়িত্ব নেই।

