Sukanta, BJP, টালা থেকে কি টালির দিকে এগোবে সিবিআই? এই চিন্তাতেই মুখ্যমন্ত্রী বৈঠক বাতিল করেছেন, দাবি সুকান্তর

আমাদের ভারত, ১৫ সেপ্টেম্বর: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আরো একবার কটাক্ষ করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। শনিবার দিনভর টানাপোড়েন চলেছে রাজ্য রাজনীতিতে। প্রথমে জুনিয়র ডাক্তারদের ধর্না মঞ্চে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপর জুনিয়ার ডাক্তাররা কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে যান। বৈঠকের লাইভ স্ট্রিমিং ভিডিও রেকর্ডিং নিয়ে ফের মতবিরোধে জেরে শেষ পর্যন্ত বৈঠক ভেস্তে যায়। কিন্তু এই বৈঠক ভেস্তে যাওয়ার কারণ হিসেবে টালা থানার ওসি ও সন্দীপ ঘোষের গ্রেফতারের খবর মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আগে চলে আসায় বৈঠক তিনি বাতিল করেছেন বলে দাবি বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের। তাঁর দাবি, মুখ্যমন্ত্রী চিন্তায় পড়েছেন, এবার সিবিআই এর হাত কি টালা থেকে টালির দিকে এগোবে?

সুকান্ত মজুমদার বলেন, আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের বলা হয়েছে এখন আর সময় নেই, দেরি হয়ে গেছে। কিন্তু কেন দেরি হয়ে গেছে আমরা বুঝতে পারলাম না। তখন রাত সাড়ে ন’টা বাজছে, আমাদের মুখ্যমন্ত্রী সাড়ে ন’টা পর্যন্ত জেগে থাকেন। কিন্তু বিষয় সেটা নয়। পরবর্তী সময় যখন আমরা টালা থানার ওসি এবং সন্দীপ ঘোষের গ্রেফতারের খবর পেলাম তখন বুঝতে পারলাম বৈঠকটা কেন বাতিল হয়েছে। আসলে এই দুটো খবর মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আগেই পৌঁছে গিয়েছিল। মিডিয়া কিংবা আমাদের কাছে পৌঁছানোর আগেই। স্বাভাবিকভাবেই তারপর মুখ্যমন্ত্রী বৈঠক বাতিল করে দেন। কারণ তার মন ভালো ছিল না। কারণ তিনি চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলেন, এরপর সিবিআই-এর হাতটা কার দিকে এগোবে? টালা থেকে টালির দিকে এগোবে কি? এই বিষয় চিন্তিত হয়েছিলেন বলেই তিনি বৈঠক বাতিল করেছেন, দ্বিতীয় কোন বিষয় নেই।

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, কিছুদিন অপেক্ষা করুন টালা দিয়ে শুরু হয়েছে, টালিতে গিয়ে শেষ হবে। তাঁর কথায়, টালা থানার ওসিকে গ্রেফতার করা হয়েছে তথ্য প্রমাণ লোপাটের জন্য। পুলিশের কাজ তথ্য প্রমাণ জোগাড় করে অপরাধীর শাস্তির ব্যবস্থা করা। কিন্তু এখানে পুলিশ রক্ষক নয়, ভক্ষকের ভূমিকায় নেমেছে। পুলিশই তথ্য প্রমাণ লোপাট করেছে। এবার ভাবার বিষয়, কোনো একজন আইসি কিংবা ওসির পক্ষে এত বড় সিদ্ধান্ত নেওয়া কি সম্ভব? যুক্তি বলছে সম্ভব নয়। বাস্তবেও সম্ভব নয়। এর মাথার ওপরে কেউ আছে। অন্যের যুক্তি বুদ্ধি এক্ষেত্রে প্রবল ভাবে কাজ করেছে।

বিজেপি নেতা বলেন, নির্লজ্জ বলেই মুখ্যমন্ত্রী সিপিকে এখনো তার চেয়ারে বসিয়ে রেখেছেন। সিপির সাথে ফোনে কার কার কথা হয়েছে তা তদন্তের মধ্যে আনা উচিত। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা হয়েছে কিনা সেটাও দেখা উচিত। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে বলেছেন, তিনি গোটা রাত জেগেছেন। তাহলে সেদিন মুখ্যমন্ত্রী কার কার সঙ্গে কথা বলেছেন, কি কথা বলেছেন সেটাও তদন্তের আওতায় আসা উচিত বলে দাবি করেছেন সুকান্ত মজুমদার।

জুনিয়র চিকিৎসকদের পাঁচ দফা দাবি রয়েছে। সেই দাবিতে আন্দোলন, ধর্না, কর্ম বিরতি করছেন। সুকান্ত মজুমদার প্রশ্ন তোলেন, কেন মুখ্যমন্ত্রী দাবি মেনে নিচ্ছেন না? সমস্যা কোথায়? মুখ্যমন্ত্রী গতকাল স্বাস্থ্য ভবনে ধর্না মঞ্চে গিয়েছিলেন। কেন পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলকে অপসরণের দাবি মানতে পারছেন না? আপনার দাবি মত পূর্ববর্তী মুখ্যমন্ত্রী
সিপিকে সরিয়ে দিয়েছিলেন। কেন আপনি উদারতা দেখাতে পারছেন না? এত ন্যারো মাইন্ডেড কেন?

মুখ্যমন্ত্রী ও আন্দোলনকারীদের বৈঠকে সরাসরি সম্প্রচারের জটিলতা প্রসঙ্গে সুকান্ত মজুমদার বলেন, দেশের শীর্ষ আদালতের দোহাই দিয়ে লাইফ স্ট্রিমিং নিয়ে রাজ্য সরকারের তরফে যে আপত্তি তোলা হচ্ছে তা সঠিক নয়। লাইভ স্ট্রিমিং করতে কোথায় আপত্তি? শীর্ষ আদালতে শুধু ধর্ষণ, খুনের মামলা চলছে। বাকি বিষয়ে লাইভ স্ট্রিমিং- এ বাধা নেই। মুখ্যমন্ত্রী লাইভে কাউকে বলতে দেবেন না। উনি একাই বলবেন, হরি থার মধ্য প্রবচন দিয়ে ফিরে চলে গেলেন কালকেও। প্রশাসনিক বৈঠকেও কেউ কিছু বললে ধমকে দিয়ে থামিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। অন্য মত, অন্য কথা, অন্য চিন্তা ভাবনা, কোনটাই গ্রহণ করেন না। সুকান্ত মজুমদারের দাবি, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে পয়েন্ট জিরো পার্সেন্টও নেই।

একটি মন্তব্যের সঙ্গে তিনি আবারও জানিয়ে দেন, জুনিয়র চিকিৎসকদের এই আন্দোলনের মধ্যে তারা নেই। বাইরে থেকে আন্দোলনকে সমর্থন করছেন। সব রকম ভাবে তাদের তরফ থেকে সাহায্য করার আশ্বাস দিয়েছেন, যদি চিকিৎসকরা চান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *