আমাদের ভারত, ৩১ অক্টোবর: ভারতে থাকা সব অনুপ্রবেশকারীদের তাড়িয়েই ছাড়বো। সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেলের ১৫০তম জন্মদিন উপলক্ষে বক্তব্য রাখার সময় এমনটাই ঘোষণা করলেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
একতা দিবসে তিনি বলেন, আজ অনুপ্রবেশকারীদের জন্য দেশের সুরক্ষা, নিরাপত্তা অনেক বড়সড় প্রশ্নের মুখে দাঁড়িয়ে আছে। দেশের ভিতরে দশকের পর দশক অনুপ্রবেশকারীরা এসেছে। তারা ডেমোগ্রাফির ভারসাম্য বদলে দিয়েছে। দেশের একতাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে। কিন্তু পুরাতন সরকার এই এত বড় সমস্যার দিকে না তাকিয়ে একেবারে চোখ বন্ধ করে বসেছিল। ভোট ব্যাঙ্কের জন্য রাষ্ট্রীয় সুরক্ষাকে বিপদের মুখে ঠেলে দিয়েছিল।
মোদী দাবি করেন, প্রথমবার দেশ এই বড় বিপদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য প্রস্তুত হয়েছে। আর যখন এই বিষয়টা নিয়ে আমরা কাজ করছি তখন কিছু লোক দেশের বদলে নিজের স্বার্থ আগে দেখছে। এরা মনে করে দেশের একতা একবার ভেঙেছে, আগামীতেও ভাঙতে থাকবে। এরা জানে না দেশের সুরক্ষা বিপদে পড়লে সব ব্যক্তি বিপদে পড়বে। তাই আমি আজ রাষ্ট্রীয় একতা দিবসে নতুন করে সংকল্প নিচ্ছি, ভারতে থাকা সব অনুপ্রবেশকারীদের তাড়িয়ে ছাড়বো।
পশ্চিমবঙ্গ সহ ১২ রাজ্যে এসআইআর ঘোষণার আবহে প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণা ব্যাপক তাৎপর্য বহন করছে বলেই মত রাজনৈতিক মহলের।
মোদী দেশবাসীকে সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেলের জন্মদিন ও রাষ্ট্রীয় একতা দিবসের অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, সর্দার প্যাটেল মনে করতেন ইতিহাস তৈরি করার জন্য বেশি সময় নষ্ট করবে না। আমাদের পরিশ্রম করা উচিত। আর সেটা ওনার জীবনেও দেখা যায়। সর্দার প্যাটেল যে নীতি তৈরি করেছেন সেই অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, আর তাতে নতুন ইতিহাস তৈরি করেছেন। স্বাধীনতার পর অসম্ভবকে সম্ভব করেছেন। এই জন্যেই সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেলের জন্মদিন রাষ্ট্রীয় একতা দিবস হিসেবে পালন করা হয়। আজ কোটি কোটি মানুষ একতার শপথ নিয়েছেন। তিনি বলেন, “আজ থেকে এমন কাজ করবো যাতে দেশে একতা বৃদ্ধি পায়। দেশের একতা ভেঙে যেতে পারে এমন কোনো কাজ করা চলবে না। সব দেশবাসীকে এমন কাজ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।”
তিনি দাবি করেন, প্যাটেলের দেখানো পথে চলেনি সেই সময়ের সরকার। তাই কাশ্মীর সমস্যা থেকে শুরু করে উত্তর পূর্বে জটিলতা তৈরি হয়েছে। নকশালবাদ, মাওবাদ দেশে একতা ভাঙার চেষ্টা করেছে, হিংসা রক্তপাত বেড়েছে।
মোদী বলেন, সর্দার প্যাটেল চেয়েছিলেন কাশ্মীর ভারতের সঙ্গে জুড়ে থাক, কিন্তু নেহেরু তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিলেন। যার ফলে কাশ্মীরকে আলাদা বিধানে ভাগ করে দেওয়া হয়। কংগ্রেসের সেই ভুলের কারণে দেশ আজকেও জ্বলছে। কাশ্মীরের একটা অংশ চলে গিয়েছে পাকিস্তানের দখলে। পাকিস্তান জঙ্গিদের মদত দিচ্ছে, কিন্তু কংগ্রেস জঙ্গিদের সামনে মাথা নিচু করেছিল। আজ ৩৭০ ধারা অব্যাহতির কারণে কাশ্মীর দেশের মূল ধারার সঙ্গে জুড়ে গিয়েছে। পাকিস্তান দেখেছে যে জঙ্গিদের সামনে ভারত ঝুঁকবে না। অপারেশন সিঁদুরে পাকিস্তানকে জবাব দেওয়া হয়েছে। এটা ভারতের শত্রুদের কাছে একটা ইঙ্গিত বটে। তিনি জানান, গত ১১ বছরে দেশ থেকে মাওবাদ নকশালবাদকে মুছে ফেলার কাজ চলছে। ২০১৪- এর আগে মাওবাদী নকশালবাদী এলাকায় পুলিশ নিজের কাজ করতে পারত না। স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল বোম মেরে উড়িয়ে দেওয়া হতো। এই সরকার আসার পরে এদের বিরুদ্ধে লড়াই হয়েছে। গোটা দেশকে জানাচ্ছি মাওবাদ ও নকশালবাদ থেকে পুরো মুক্তি পাবে দেশ।

