আমাজনের পর এবার দাবানলের গ্রাসে অস্ট্রেলিয়া, বিলুপ্তির পথে ৫০ কোটি বন্যপ্রাণী

আমাদের ভারত ডেস্ক, ৫ জানুয়ারি: মাস চারেক আগেই টানা দাবানলে দগ্ধ হয়েছিল আমাজনের জঙ্গল। ফের যেন ফিরে এল সেই দুঃস্বপ্নের স্মৃতি। এবার ভয়াবহ দাবানলে পুড়ছে অস্ট্রেলিয়া। এখনও পর্যন্ত ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। দাবানলে সব থেকে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৫০ কোটি বন্যপ্রাণীর।

সূত্রের খবর, ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার দাবানল। গত বছর সবার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু ছিল জলবায়ু সঙ্কট। প্রাণীদের মৃত্যুর মিছিলে এ সঙ্কট আরও তীব্র রূপ ধারণ করার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। আমাজন বনে দাবানলে হারানো প্রাণীদের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই অস্ট্রেলিয়ার দাবানল। নিঃসন্দেহে পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণে গোটা বিশ্ব খুব দ্রুত আরও জটিল পরিস্থিতিতে পড়তে যাচ্ছে বলে দাবি পরিবেশবিদদের।

এখনও পর্যন্ত নিউ সাউথ ওয়েলস এবং ভিক্টোরিয়া জুড়ে, ১২০০ ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়ে গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। দাবানল কবলিত নিউ সাউথ ওয়েলস আর ভিক্টোরিয়ায় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে সরকার। দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার জনপ্রিয় পর্যটনস্থল ক্যাঙারু দ্বীপের বিস্তীর্ণ এলাকা পুড়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন। দাবানলের কারণে নিউ সাউথ ওয়েলসের প্রায় ৩০ শতাংশ কোয়ালা প্রাণ হারিয়েছে বলে ধারণা। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।

ইউনিভার্সিটি অব সিডনির পরিবেশবিদরা জানান, দাবানলে সেপ্টেম্বর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৫০ কোটি স্তন্যপায়ী, পাখি ও সরীসৃপ মারা গেছে। সংখ্যাটা আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দাবানলে পুড়ে ছাই হয়েছে গেছে হাজার হাজার কোয়ালা। বিলুপ্তির ঝুঁকিতে থাকা এ প্রাণীটির বেশিরভাগই বাস করতো অস্ট্রেলিয়ার বনাঞ্চলে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যের মধ্য-দক্ষিণ উপকূলবর্তী অঞ্চলে বসবাসরত প্রায় আট হাজার কোয়ালা মারা গেছে এ দাবানলে, যা এ অঞ্চলের কোয়ালা জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশ। কাকাতুয়াসহ অন্য অনেক পাখি মরে গাছের নিচে পড়ে থাকতে দেখা গেছে। দেখা গেছে, অস্ট্রেলিয়ার পূর্ব উপকূলবর্তী অঞ্চলে দাবানলের লেলিহান শিখা থেকে বাঁচার চেষ্টা করছে ক্যাঙ্গারুরা। অত্যন্ত গরম ও দ্রুত ছড়িয়ে পড়া এ দাবানলে পুড়ে মরে গেছে অসংখ্য প্রাণী।

সোশ্যাল মিডিয়াতেও ছড়িয়ে পড়েছে অস্ট্রেলিয়ার দাবানলে প্রাণ হারানো অসংখ্য প্রাণী ঝলসানো ছবি। এলাকার মানুষকে স্থানান্তর করতেও উদ্যোগ নিয়েছে সেনা। দাবানলের জেরে পরিবেশের বিপুল ক্ষতির মুখে পড়তে হয়। বিপুল ধোঁয়ায় বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে দিনের বেলাতেও অন্ধকার নেমে আসে। স্বেচ্ছাসেবী প্রাণী উদ্ধারকর্মী ট্র্যাসি বার্গেস বলেন, ”প্রত্যাশার চেয়ে খুব কম প্রাণীকে আহত অবস্থায় চিকিৎসার জন্য আনা হচ্ছে, যা বেশ উদ্বেগজনক। আমাদের দুশ্চিন্তার কারণ এটাই যে, হয়তো তারা মরেই গেছে, তাই তাদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য আনা হচ্ছে না।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *