আমাদের ভারত, নন্দীগ্রাম, ৩ মার্চ: লকডাউনের মধ্যে স্বামীকে মদের আসরে যেতে বাধা দেওয়ায় স্ত্রীকে মারধর। এই নিয়ে অশান্তির জেরে নিজের দু’বছরের শিশুপুত্রকে মেরে আত্মঘাতী স্ত্রী। গ্রেফতার স্বামী ও শাশুড়ি। নন্দীগ্রাম থানার আমদাবাদের বাড়িমাল গ্রামের ঘটনা।
পরিবার সূত্রে জানাগেছে, নন্দদুলাল পাখিরা নন্দীগ্রামের আমদাবাদ এলাকায় নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করে। প্রায় সাড়ে তিন বছর আগে খেজুরির জাহানাবাদ গ্রামের বাসিন্দা অর্চনার সাথে বিয়ে হয় নন্দদুলালের। এদের একটি দুবছরের পুত্র ছিল। নন্দদুলাল কাজের শেষে প্রতিদিনই মদ্যপান করে বাড়ি ফিরত। কিন্তু লকডাউন চলার কারণে করোনার আতঙ্কে লকডাউন শুরুর পর থেকে স্বামীকে বাড়ির বাইরে বের হতে নিষেধ করছিল অর্চনা। এই নিয়ে গত তিনদিন ধরে বাড়িতে অশান্তি হয় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে। অভিযোগ, মদ খেতে যেতে বাধা দেওয়ায় নন্দদুলাল বাড়িতে ব্যাপক মারধরও করে অর্চনাকে। বৃহস্পতিবার রাতে দুজনে আলাদা ঘরে ঘুমিয়েছিলেন। রাতেই অর্চনা পাখিরা (২২) নিজের দু’বছরের পুত্রসন্তান রোহিতকে গলা টিপে খুন করে নিজেই গলায় শাড়ি জড়িয়ে সিলিং ফ্যানে ঝুলে আত্মহত্যা করে। শুক্রবার সকালে নন্দদুলাল ঘরের বাইরে থেকে ডাকাডাকি করলেও সাড়া না পেয়ে জানলা দিয়ে স্ত্রীকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। পরে পরিবারের লোকেরা নন্দীগ্রাম থানায় খবর দিলে পুলিশ দরজা ভেঙ্গে দুটি মৃতদেহ উদ্ধার করে।
নন্দীগ্রাম থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনায় এখনো কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি। শিশুর গলায় আঙুলের ছাপ রয়েছে। প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে শিশুটিকে গলা টিপে খুন করা হয়েছে। এটি আত্মহত্যা না খুন তা খতিয়ে দেখতে একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে। দেহ ময়না তদন্তের জন্য তমলুক জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনায় নন্দীগ্রাম থানার পুলিশ স্বামী ও শাশুড়িকে আটক করেছে।