Environment court, State, তারাপীঠের দ্বারকা নদীর জল এখন কেন দূষিত? রাজ্যকে শো-কজ পরিবেশ আদালতের

আশিস মণ্ডল, রামপুরহাট, ১৯ অক্টোবর: জাতীয় পরিবেশ আদালত, পূর্বাঞ্চল শাখার নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও ছয় বছরেও তারাপীঠের দ্বারকা নদীর জল সংশোধন করার পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়নি। ফলে এবার বীরভূমের জেলা শাসক, জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের প্রধানদের সশরীরে কিংবা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন পরিবেশ আদালতের বিচারপতি। সেই সঙ্গে সাধারণ মানুষ এবং আবেদনকারী জয়দীপ মুখোপাধ্যায়কে কেন ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না সেটাও জানতে চেয়েছেন বিচারপতি।

প্রসঙ্গত, তারাপীঠে বিভিন্ন ভাবে দূষণের মাত্রা বাড়তে থাকায় ২০১৪ সালে জাতীয় পরিবেশ আদালত, পূর্বাঞ্চল শাখায় মামলা করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী, অল ইন্ডিয়া লিগ্যাল এইড ফোরামের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক জয়দীপ মুখোপাধ্যায়। তাঁর দায়ের করা মামলার প্রেক্ষিতে ২০১৯ সালের ২৯ জুলাই আদালত রাজ্য সরকারকে তারাপীঠের দূষণ নিয়ন্ত্রণে বেশ কিছু নির্দেশ দেন। তার মধ্যে অন্যতম দ্বারকা নদীর জলকে পরিশুদ্ধ করে পরিবেশের উপযোগী করা। পয়ঃনিষ্কাশন এবং কঠিন বর্জ্য নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা। তারাপীঠকে প্লাস্টিক মুক্ত করা। কিন্তু জাতীয় পরিবেশ আদালত, পূর্বাঞ্চল শাখার আদেশ দেওয়ার ছয় বছর হয়ে গেলেও এখনও সম্পূর্ণ কাজ হয়নি বলে বলে আদালতের কাছে দাবি করেছেন জয়দীপবাবু। সরকার পক্ষের আইনজীবী বিকাশ করগুপ্ত আদালতকে জানিয়েছেন, বনভূমি হস্তান্তর না হওয়ার জন্য কিছুটা সমস্যা হয়েছে। বনবিভাগ জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরকে জমি হস্তান্তরের ছয় মাসের মধ্যে প্রকল্পটি সম্পন্ন হবে। তিনি আশা করেন, ১৫ দিনের মধ্যে বনভূমি হস্তান্তর হবে।

আদালতের বিচারপতি অরুণ কুমার ত্যাগী এবং ঈশ্বর সিং জানিয়েছেন, পরিস্কার ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশের অধিকার ভারতের সংবিধানে মৌলিক অধিকার। সেটা বাস্তবায়িত করা রাষ্ট্র এবং তাঁর সংস্থাগুলি নিশ্চিত করতে বাধ্য। বর্তমানে স্থানীয় বাসিন্দা এবং আবেদনকারীর সেই অধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে। সেই জন্য আবেদনকারী এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের ক্ষতিপূরণ দিতে হতে পারে। জয়দীপবাবুর পুনরায় আবেদনের ভিত্তিতে আদালতের বিচারপতি নির্দেশ দিয়েছেন, চলতি বছরের ১৯ ডিসেম্বর বীরভূমের জেলা শাসক এবং জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের প্রধানদের সশরীরে কিংবা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে হাজিরা দিতে হবে।

জয়দীপবাবু বলেন, “দ্বারকা নদীতে এখনও বিভিন্ন লজের নোংরা জল মিশছে। ফলে দূষিত হচ্ছে নদীর জল। অথচ লক্ষ লক্ষ পুন্যার্থী দ্বারকা নদীতে স্নান সেরে মা তারার পুজো দিতে যান। আমি আদালতের কাছে ওই জল পরিশুদ্ধ করার আবেদন জানিয়েছিলাম। আদালত সব দিক বিবেচনা করে সেই নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু এখনও সেটা কার্যকর হয়নি। যেটা উদ্বেগের। এর ফলে নদীতে স্নান করে অসুস্থ হচ্ছেন পুন্যার্থীরা। আদালত নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে। এখন দেখা যাক প্রশাসন আদলতের নির্দেশ কতটা পালন করে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *