আমাদের ভারত, ১৩ মার্চ: ডিএর দাবিতে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছেন রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের একাংশ। শহিদ মিনারে কয়েক সপ্তাহ ধরেই ধর্না দিচ্ছেন তারা। কিন্তু সেখানে একটি হুমকি পোস্টার ঘিরে রাজ্য রাজনীতি বেশ সরগরম হয়ে উঠছে। পোস্টারে লেখা, এই নাটক বন্ধ করুন, না হলে বোমা মেরে ধর্না মঞ্চ উড়িয়ে দেব। আবার ডিএর দাবিতে এই আন্দোলনকে নাটক বলেই কটাক্ষ করেছেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা কলকাতা পৌরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিমও। আর তাতেই বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার প্রশ্ন তুলেছেন, ফিরহাদ হাকিমও ডিএ’র দাবিতে আন্দোলনকারীদের ধর্না মঞ্চে বোমা মারার উদ্যোক্তাদের মনের মিল কীভাবে?
সুকান্ত মজুমদার বলেন, “আমি জানতে পেরেছি গত ৬ তারিখ নাগাদ এরকম একটি পোস্টার আন্দোলনকারীদের ওখানে পড়েছিল। ওনারা বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে চাননি। কিন্তু অদ্ভুতভাবে যে কথা ওই পোস্টারে লেখা আছে, বোমা মারার কথা বা নাটকের কথা, সেই নাটক শব্দটি আবার ফিরহাদ হাকিমের মুখে শোনা যাচ্ছে। এই শব্দ শোনার পর থেকেই আন্দোলনকারীরা এই পোস্টারটিকে গুরুত্ব দিতে শুরু করেছে বলে মনে হচ্ছে। গুরুত্ব দেওয়ার কারণ ফিরহাদ হাকিমের মতো অত বড় নেতা, অত বড় মন্ত্রী যদি একই শব্দ বলেন, যে শব্দ অজ্ঞাত পরিচয়রা আন্দোলনকারীদের হুমকি দিয়েছেন। সার্বিকভাবে আন্দোলনকারীদের সুরক্ষা নিয়ে সবাই চিন্তিত, আমরাও চিন্তিত।” এরপরই তিনি প্রশ্ন তোলেন, “ফিরহাদ হাকিম এবং বোমা মারার যারা উদ্যোক্তা তাদের মধ্যে এত কী করে মনের মিল হচ্ছে আমরা বুঝতে পারছি না।”
প্রসঙ্গত, ফিরহাদ বলেছিলেন, “আন্দোলনকারীরা যে হারে ডিএ চাইছেন সেই হারে যদি ডিএ দিই আর অন্য রাজ্যের মত কেন্দ্রের মতো আমরাও পেনশন বন্ধ করে দিই তাতে মানুষের বেশি ক্ষতি হবে। যারা আন্দোলন করছেন, চাকরি করছেন তারাও তো একদিন অবসর নেবেন তারাও তো পেনশন নেবেন। তাহলে ক্ষতিটা কাদের হবে?” এরপরই অনশনরতদের উদ্দেশ্যে ফিরহাদ বলেন, “তাদের জন্য চিকিৎসক পাঠানো যায় না। নাটক আর আন্দোলনের মধ্যে তফাৎ আছে। সুপ্রিম কোর্টে মামলা চলছে। সেখানে বিশ্বাস না করে আন্দোলনে নামলাম এর অর্থ কি?”
ডিএর দাবিতে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছেন রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের একাংশ। কেন্দ্রের মতো সমহারে ডিএ’র দাবিতে অনড় তারা। বিধানসভার বাজেট অধিবেশনে রাজ্য সরকারের ৩ শতাংশ ডিএ ঘোষণা খুশি করতে পারেনি ডিএ আন্দোলনকারীদের। তাই শহিদ মিনারে কয়েক সপ্তাহ ধরেই ধর্না দিচ্ছেন তারা। সেই মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন একাধিক বিরোধী দলের নেতারাও। সেই ধর্ণা মঞ্চেই পাওয়া গেছে হুমকি পোস্টার। বোমা মেরে ধর্না মঞ্চ উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে। যা ঘিরে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়েছে আন্দোলনকারীদের মধ্যে। পোস্টারে লেখা, “এই নাটক বন্ধ করো, নইলে বোমা মেরে মঞ্চ উড়িয়ে দেব।” এই পোস্টার নিয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন আন্দোলনকারীরা। তবে এখন ফিরহাদের মুখেও হুমকি পোস্টারের “নাটক” শব্দ ঘিরে জল্পনা ও তর্জা যে তুঙ্গে উঠতে চলেছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।