BJP, Ayodhya, অযোধ্যায় কেন পরাজিত বিজেপি? সমীক্ষায় উঠে এল রাম মন্দির তৈরি নয়, অযোধ্যাবাসীর মনে তৈরি হয়েছে অন্য ইস্যুতে ক্ষোভ

আমাদের ভারত, ১৯ জুন: ফৈজাবাদ লোকসভা কেন্দ্রে এবার বিজেপি পরাজিত হয়েছে। প্রাচীন শহর ফৈজাবাদ থেকে দেড়- দুই কিলোমিটার দূরে অবস্থিত অযোধ্যা। যেখানে গত ২২ জানুয়ারি সুবিশাল সুদৃশ্য রাম মন্দিরের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই দিনই রামলালা অর্থাৎ শিশুরামের প্রাণ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তিনি। অনেকেই দাবি করেছেন, বিগত পাঁচশো বছরে হিন্দুদের এর থেকে বড় প্রাপ্তি সম্ভবত কিছু নেই। কিন্তু এত বড় মন্দির নির্মাণের পরেও কেন পরাজিত হল বিজেপি। সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে অযোধ্যার মানুষের মত জানতে একটি সমীক্ষা হয়। সেই সমীক্ষার ফলাফলে দেখা গেছে, মন্দির নির্মাণের চেয়ে অযোধ্যার মানুষের কাছে বেকারত্ব, মূল্যবৃদ্ধি বড় বিষয় ছিল এবারের লোকসভা ভোটে।

এবারের লোকসভা নির্বাচনে রামমন্দির বিজেপির বড় ইস্যু ছিল। কিন্তু সেই ইস্যু সেভাবে কাজ দেয়নি, এমনকি আযোধ্যাতেও না। অযোধ্যায় পদ্ম শিবিরের পরাজয়কে বড় ধাক্কা হিসেবেও দেখছেন একাধিক পদ্ম নেতা।

কিছুদিন আগে রাম মন্দিরের প্রধান পুরোহিত আচার্য সত্যেন্দ্র দাস এক সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, স্থানীয় বিজেপি সাংসদ এবং দল রাম মন্দির তৈরীর অহংকারে সাধারণ মানুষের অভাব, অভিযোগে উপেক্ষা করেছেন। প্রধান পুরোহিতের মতে বেকারত্ব এবং জিনিসপত্রের অগ্নি মূল্যের জেরে ক্ষুব্ধ মানুষ বিজেপিকে শিক্ষা দিয়েছে তাঁর কথায়, ভগবান রাম কাউকে ভোটে জেতান না।তিনি সকলের মঙ্গল চান।

পুরোহিতের মতামতই অযোধ্যাবাসীর মনের কথা হিসেবে ধরা পড়েছে দিল্লির প্রখ্যাত সংস্থা সিএসডিএস লোক নীতির সমীক্ষায়। ভোটের পর অযোধ্যাবাসীর মনের কথা জানতে সমীক্ষা চালিয়েছিল এই সংস্থা। সমীক্ষার ফল বলছে রামভক্তিকে ছাপিয়ে মানুষের মধ্যে কাজ করেছে বেকারত্ব এবং জিনিসপত্রের মূল্য বৃদ্ধি, জনিত যন্ত্রণা। সিএসডিএস লোকনীতির প্রশ্ন ছিল আগের পাঁচ বছরে কেন্দ্রের মোদী সরকারের কোন কাজগুলিকে তারা ভালো কাজ বলে মনে করেন? তাতে অযোধ্যার ২২.৪ শতাংশ মানুষ মন্দিরের কথা বলেছেন।

চাকরি, কর্মসংস্থান, দরিদ্র মুক্তি সরকারকে কৃতিত্ব দিয়েছেন যথাক্রমে ৫.৬ ও ৬.৪ শতাংশ মানুষ। অর্থাৎ দুই ক্ষেত্রেই সরকারকে সামান্যই কৃতিত্ব দিয়েছেন অযোধ্যার মানুষ। দ্বিতীয় প্রশ্নটি করা হয়েছিল কোন কোন ক্ষেত্রে মোদী সরকারের কাজকর্ম সবচেয়ে খারাপ ছিল বলে তাদের মনে হয়েছে। দুই ক্ষেত্রেই ২৩ শতাংশ
অযোধ্যাবাসী বেকারত্ব এবং মূল্যবৃদ্ধির জন্য ব্যর্থতার দায় চাপিয়েছে সরকারের উপরে, অর্থাৎ অযোধ্যাতেও মানুষের নিত্য দিনের জীবন যন্ত্রণা প্রতিফলন ইভিএম-এ ঘটেছে।

সিএসডিএস লোকনীতি অবশ্য ভোটের আগেই জানিয়েছিল রাম মন্দিরকে নিয়ে ভাবাবেগের তুলনায় বেকারত্ব ও মূল্যবৃদ্ধি এবারের ভোটের প্রধান ইস্যু হতে চলেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *