পিকনিকের আমেজে যখন মেতেছে জেলাবাসী, তখন মন খারাপ গোয়ালতোড়ের

কুমারেশ রায়, আমাদের ভারত, মেদিনীপুর, ১ জানুয়ারি: গত ২৫ ডিসেম্বর থেকেই পিকনিকের আমেজে মেতে উঠেছে রাজ্যবাসী৷ বাদ যায়নি মেদিনীপুরও। কিন্তু মেদিনীপুরবাসী যখন পিকনিকের আমেজ উপভোগ করেছেন তখন মনমরা হয়ে রয়েছে মেদিনীপুরেরই গোয়ালতোড়। কারণ চন্দ্রকোনা রোড, গড়বেতা, মেদিনীপুর, সহ জেলার বিভিন্ন স্থানে পিকনিক স্পট থাকলেও গোয়ালতোড় ব্লকে কোনও পিকনিক স্পট নেই। তাই বাধ্য হয়ে গোয়ালতোড়বাসীকে এই আনন্দ উপভোগ করতে ছুটতে হয় গড়বেতার গনগনি, চন্দ্রকোনা রোডের পরিমল কানন, মেদিনীপুরের গোপগড়, কিম্বা দীঘা, কেশিয়াড়ির প্রত্যুষাতে। আর যাদের দূরে যেতে সমস্যা তারা ব্লকের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা জঙ্গলের ধারে কিম্বা নদীর পাড়ে বসেই দুধের সাধ ঘোলে মেটানোর চেষ্টা করছেন।

বাম আমলে গোয়ালতোড় সনকা মন্দিরকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছিল সনকা শিশু উদ্যান আর পাথরপাড়ার রুপাঘাগরাতে গড়ে উঠেছিল ইকোপার্ক। বিপুল পরিমাণ টাকা খরচ করে দুটি পার্ককেই সাজিয়ে তোলা হয়েছিল। বসানো হয়েছিল দোলনা, স্লিপার। কংক্রিটের রাস্তা গড়ে রাস্তার দুপাশে লাগানো হয়েছে রকমারি পাতা বাহারি গাছ, ফুল গাছ। সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য রাস্তাজুড়ে সোলার লাইট বসানো হয়েছিল। সনকা শিশু উদ্যান উদ্বোধনের পর যখন উদ্যানটি সাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয় তখন প্রতিদিন অসংখ্য শিশু আর বয়স্কারা গিয়ে বিনোদন ও অবসর কাটাতেন৷ অপর দিকে রুপাঘাগরা ইকোপার্কটি গড়ে তোলা হয়েছিল পিকনিক স্পট হিসেবে৷ শহরের কংক্রিটের জাল থেকে বেড়িয়ে সবুজের শ্বাস নিতে শাল, মহুয়ায় ঘেরা জঙ্গলের মাঝে এই পার্কটি নির্মাণ করা হয়। পার্কটিকে পর্যটকদের কাছে আরও আকর্ষনীয় করে তুলতে একটি অগভীর জলাশয় নির্মাণ করে পাখিরালয় করা হয়। ফলে শীতের এই সময় জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এমন কি পড়শি জেলা বাকুড়া থেকেও পর্যটকরা আসতেন এখানে৷ কিন্তু পরিবর্তনের পর সরকারি উদাসীনতা আর রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে দুটি পার্কই আজ ধ্বংস স্তুপে পরিণত হয়েছে। পাতাবাহার ফুল গাছ শুকিয়ে গিয়েছে, খোয়া গিয়েছে দোলনা, সোলার লাইট। মজে গিয়েছে পাখিরালয়।

গোয়ালতোড়ের বাসিন্দারা জানান, রুপাঘাগরার এই পার্কটি সরকারি ভাবে রক্ষনাবেক্ষণ করা হলে আজ আমাদের দূরদূরান্তে যেতে হত না৷ প্রশাসনের কাছে আবেদন শালবনীর কর্ণগড় মন্দিরকে কেন্দ্র করে যেমন পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা হচ্ছে সেরকম ভাবে সনকা
মন্দিরকে কেন্দ্র করেও এই রকম পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা হোক৷ পাশাপাশি গোয়ালতোড়ের বেশ কিছু স্থান আছে যেখানে অল্প খরচের মধ্য দিয়েই পিকনিক স্পট গড়ে তোলা যাবে, সেদিকে নজর দিয়ে অতি দ্রুত তা গড়ে তুলুক সরকার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *