স্বরূপ দত্ত, আমাদের ভারত, উত্তর দিনাজপুর, ১৮ মে: “যে সিস্টেমটার জন্য এই ঘটনাগুলো ঘটেছে সেই সিস্টেমটাকে পাল্টাতে হবে। যাদের দায়িত্ব তারা দায়িত্বটাকে ঝেড়ে ফেলে দিয়ে দুর্নীতির সাথে আপোষ করে। সরকার যখন তাদের মাথায় হাত রাখে এবং বলে যে ঠিক আছে, মানুষের জন্য কাজ করতে হবে না তুমি নিজের জন্য করো তখনই এই ঘটনাগুলো বাড়ে।” বৃহস্পতিবার কালিয়াগঞ্জে মৃতদের বাড়ি গিয়ে এমনটাই মন্তব্য করেন বাম নেত্রী মীনাক্ষী মুখার্জি।
উল্লেখ্য, কালিয়াগঞ্জ কাণ্ডে নিহত নাবালিকার পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ প্রদান ও গুলিতে খুন হওয়া মৃত্যুঞ্জয় বর্মনের পরিবারের একজনকে চাকরির দাবিতে বিভিন্ন বাম সংগঠনের ডাকে কালিয়াগঞ্জ চলো কর্মসূচি পালিত হল বৃহস্পতিবার৷ এদিন এই কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন মীনাক্ষী মুখার্জি, কলতান দাশগুপ্ত, পুলিন বিহারী বাস্কের মতো রাজ্য নেতৃত্বরা৷ ডিওয়াইএফআই,
এসএফআই, সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতি, পশ্চিমবঙ্গ সামাজিক ন্যায় মঞ্চ, আদিবাসী অধিকার মঞ্চের ডাকে এদিন প্রথমে তারা যান সাহেবঘাটায় মৃত নাবালিকার বাড়িতে। এরপর সেখান থেকে প্রতিনিধি দল যায় মুস্তাফানগর গ্রাম পঞ্চায়েতের ডাঙ্গিপাড়া এলাকার অসীম দেবশর্মার বাড়িতে। যিনি ক’দিন আগে
অ্যাম্বুলেন্সের ভাড়া যোগাড় করতে না পেরে ব্যাগে করে মৃত শিশুপুত্রকে বাড়িতে নিয়ে এসেছিলেন। এই অমানবিক ঘটনায় নিন্দার ঝড় ওঠে রাজ্যজুড়ে৷ তার বাড়িতে আসে কংগ্রেস নেতৃত্বও৷ এদিন প্রতিনিধি দলের সদস্যরা কথা বলেন মৃত শিশুর বাবা মায়ের সঙ্গে। সেখানে বাম প্রতিনিধিদল যায় রাধিকাপুর অঞ্চলের চাঁদগাঁও গ্রামে গুলিতে নিহত মৃত্যুঞ্জয়ের বাড়িতে।
উল্লেখ্য, গত ২১ শে এপ্রিল কালিয়াগঞ্জের সাহেবঘাটা সংলগ্ন পালোইবাড়ি এলাকা থেকে উদ্ধার হয় এক দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রীর মৃতদেহ। এই ঘটনায় দফায় দফায় উত্তাল হয় কালিয়াগঞ্জ। পুলিশের সঙ্গে পুলিশের খণ্ডযুদ্ধে কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় কালিয়াগঞ্জ। প্রতিবাদে জ্বালিয়ে দেওয়া কালিয়াগঞ্জ থানার একাংশ৷ এর পালটা পুলিশি ধরপাকড়ের জেরে রাধিকাপুরের চাঁদগা গ্রামে পুলিশের গুলিতে মৃত্যুঞ্জয় বর্মনের মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ ওঠে। পরপর জোড়া মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ক্ষোভে ফুঁসছিল কালিয়াগঞ্জ। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে মৃতদের বাড়িতে সরেজমিনে যায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। এবারে এই ইস্যুতে রাজ্যস্তরের নেতৃত্বকে আসরে নামালো সিপিআইএম। এদিন সভায় এসে মীনাক্ষী মুখার্জি রাজ্যের কড়া সমালোচনায় সরব হন। তিনি বলেন, “পরিবারগুলোর কি হবে? সরকার হয়তো এককালীন টাকা দিয়ে দেবে। তাতে কি হবে? পরিস্থিতিটা বদলাতে হবে।”