রাজনীতিবিদ যখন চাষী! ১৫ কেজি ওজনের কপি চাষ করে তাক লাগিয়ে দিলেন বীরভূমের তৃণমূল নেতা

আশিস মণ্ডল, রামপুরহাট, ১৬ ফেব্রুয়ারি: কথায় আছে ‘যে রাঁধে সে চুলও বাঁধে’। এটা যে শুধু কথার কথা নয় তার প্রমাণ দিলেন বীরভূম জেলা পরিষদের কো-মেন্টর ধীরেন্দ্র মোহন বন্দ্যোপাধ্যায়। ১৫ কেজি ওজনের কপি চাষ করে প্রমাণ দিলেন সফল রাজনৈতিক নেতার পাশাপাশি সফল কৃষকও তিনি। তার কপি এখন সমাজমাধ্যমে ভাইরাল।

ধীরেন্দ্র মোহন বন্দ্যোপাধ্যায়। বাড়ি বীরভূমের মল্লারপুর থানার ফতেপুর গ্রামে। ছাত্র জীবন থেকে ডানপন্থী রাজনীতিতে হাতেখড়ি তাঁর। ১৯৮৩ সালে প্রথমবার কংগ্রেসের টিকিটে পঞ্চায়েত নির্বাচনে দাঁড়িয়ে জয়ী হন। প্রথমবার জয়ী হয়েই মল্লারপুর ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মনোনীত হন। তারপর পর পর তিনবার প্রধান নির্বাচিত হন। সংরক্ষণের ধাক্কায় একবার উপ প্রধান পদে বসতে হয়। ২০০৮ সালে ফের প্রধান হন তিনি। তারপর ২০১৩ সাল থেকে পাঁচ বছরের জন্য ময়ূরেশ্বর ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ছিলেন।

পঞ্চায়েতে ভালো কাজের জন্য ২০১০ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত চারবার জাতীয় পুরস্কার এনে দেন পঞ্চায়েতকে। ২০১৫ – ১৬ সালে সভাপতি হিসাবে ফের জাতীয় পুরস্কার নিয়ে আসেন। বর্তমানে তৃণমূলের টিকিটে মহম্মদবাজার ব্লকের ২৩ নম্বর জেলা পরিষদের আসনে নির্বাচিত হয়ে কো-মেন্টরের পদ সামলাচ্ছেন।

সেদিক থেকে দেখলে তিনি একজন সফল রাজনীতিবিদ। পাশাপাশি সফল কৃষকও। সারাদিন মানুষের সমস্যার সমাধান করার পর অবসর সময়ে গো-পালন এবং চাষ আবাদ করেন। বাড়িতে চারটি গরুর লালনপালন করে আসছেন দীর্ঘদিন ধরে। কয়েক বছর ধরে বাড়ির পাশে ফাঁকা জায়গায় আলু, টমেটো, পালংশাক ও কপি চাষ করে চলেছেন। গরুর গোবর থেকে জৈবসার তৈরি করে ফসল চাষ করেন। তাঁর হাতের গুনে এবার ১৫ কেজি ওজনের কপি উৎপন্ন করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। সেই ছবি এখন সমাজ মাধ্যমে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

ধীরেন্দ্র মোহনবাবু বলেন, “চাষ আমার নেশা। খুব ছোটো বেলা থেকেই চাষাবাদ করছি। রাস্তার ধারে কোনও সবজি গাছ পড়ে থাকলেই তুলে এনে বাড়ির বাগানে লাগাতাম। এবার সিউড়ি থেকে কপির বীজ নিয়ে এসে লাগিয়েছিলাম। প্রতিদিন ভোর পাঁচটায় উঠে বাগানের পরিচর্যা করতাম। বাজারের কোনও সার দিতাম না। গোবর, গরুর মুত্র দিয়ে সবজি চাষ করেছি। সেই বাগানেই এবার ১৫ কেজি ওজনের কপি হয়েছে। সকালের দিকে বাগান এবং গরুর দেখভাল করার পর ৯ টা থেকে জনগনের দরবার সামলাতে হয়। এরপর জেলা পরিষদে গিয়ে অফিস সামলাতে হয়।”

রাজনীতিতে যেমন ফাঁকি নেই, তেমনি ১৫ কেজি ওজনের কপি চাষ করে দেখিয়ে দিলেন, কৃষি কাজেও তিনি সমান সফল। রাজনীতিতে কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ একাধিকবার পুরস্কার পেয়েছেন, এবার দেখার কৃষিকাজের সাফল্যের জন্যও তিনি পুরস্কৃত হন কি না। তবে ইতিমধ্যেই সামাজিক মাধ্যমে তিনি সাধারণের প্রশংসা পেয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *