আমাদের ভারত, ১৬ ডিসেম্বর: যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে বেনজির বিশৃঙ্খলার ঘটনায় শীর্ষ পুলিশ কর্তাদের শোকজ করার মতো পদক্ষেপ নিয়েছে রাজ্য সরকার। একই সঙ্গে ঘটনায় পদত্যাগ করেছেন ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। কিন্তু পদত্যাগের এই পদক্ষেপকে কটাক্ষ করে বিজেপি নেতা সুকান্ত মজুমদারের দাবি, পদত্যাগ করে কি হবে? অরূপ বিশ্বাস, সুজিত বসুকে গ্রেফতার করতে হবে।
সুকান্ত মজুমদার বলেন, পদত্যাগ পত্র আ্যাকসেপ্ট করে কি হবে? জেলে পাঠাতে হবে। শতদ্রু দত্ত যদি জেলে যায় তাহলে অরূপ বিশ্বাসরা কেন যাবে না? এ তো (শতদ্রু দত্ত) চেলা। আসল ফোরে, আসল মালিক তো অরূপ বিশ্বাস। শতদ্রু জেলে গেলে সুজিত বসু এবং অরূপ বিশ্বাস দু’জনকেই জেলে যেতে হবে বলে দাবি করেছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী।
যুবভারতীতে বিশৃঙ্খলার ঘটনায় শোকজ করা হয়েছে ডিজিপি রাজীব কুমারকে। ২৪ ঘন্টার মধ্যে তার জবাব তলব করেছে রাজ্য সরকার। বিধান নগরের পুলিশ কমিশনার মুকেশ কুমারের জবাব তলব করা হয়েছে। দায়িত্বে গাফিলতির অভিযোগে তার বিরুদ্ধে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিভাগীয় তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত ডিজিপি সাসপেন্ড থাকবেন। ক্রীড়া দপ্তরের প্রধান সচিব রাজেশ কুমার সিনহাকেও শোকজ করা হয়েছে। যুবভারতীর দায়িত্ব থেকে সরানো হয়েছে অবসরপ্রাপ্ত আমলা দেবকুমার নন্দনকে।
এই প্রসঙ্গে সুকান্ত মজুমদার বলেন, এগুলো সব লোক দেখানো। মুখ্যমন্ত্রী ছবি তুলতে ভালোবাসেন, সেটা চা বাগান হোক কী মেসির পাশে হোক। ছবি তোলার সুযোগ কখনো ছাড়েন না তিনি। কিন্তু ছবি তোলার সুযোগ ওনার নষ্ট হয়েছে। অন্যান্য মুখ্যমন্ত্রীরা ছবি তুলছেন। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর মেসির সাথে করমর্দনরত ছবি দেখে মুখ্যমন্ত্রীর আঁতে ঘা লেগে গেছে। মুখ্যমন্ত্রীর ইগোতে লেগে গেছে। আমি পারলাম না! তাঁর দাবি, এই সব ইস্তফা, শোকজ আসলে এক রকম ফন্দি ফিকির। চোখ ঘোরানোর জন্য করছেন। তাঁর কথায়, যদি ডিজিপি দায়ী হয়, তাহলে পুলিশ মন্ত্রী দায়ী নয় কেন? পুলিশি ব্যর্থতা যদি হয়ে থাকে তাহলে তার জন্য কি পুলিশ মন্ত্রী দায়ী হবেন না? তাহলে মুখ্যমন্ত্রীকেও শোকজ করা উচিত। মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়া উচিত।
তিনি আরো প্রশ্ন তোলেন, পুলিশের ব্যর্থতা হয়েছে, পুলিশ ভিড়ে আটকাতে পারিনি। পুলিশ ভিড় ম্যানেজ করতে পারেনি। কিন্তু যে জলের বোতল ২০ টাকার বা ৫০ টাকার, সেগুলো ৩০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এটা আটকানো কি পুলিশের কাজ? ওখান থেকেও তো কাটমানি খাওয়ার ব্যবস্থা করেছে তৃণমূল কংগ্রেস।
একই সঙ্গে তিনি প্রশ্ন তোলেন, মুখ্যমন্ত্রীর পরিবারের লোকজন আকাশ ব্যানার্জি, ছোট ব্যানার্জি, বড় ব্যানার্জি, যারা মেসিকে ঘিরে ধরেছিলেন, যাদের জন্য বাংলার মানুষরা টিকিট কেটে, যারা মেসির ফ্যান, ফুটবলের ফ্যান, তারা মেসিকে দেখতে পাননি, তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেবেন? তারা কোথায় ইস্তফা দেবেন? মুখ্যমন্ত্রী ব্যানার্জি পরিবারের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেবেন?
তাঁর দাবি, ওইসব ইস্তফা টিস্তফা দিয়ে কিছু হবে না।যারা বাংলা ও বাঙালির সম্মান ভূলন্ঠিত করল, লজ্জায় মাথা কাটা গেল, মুম্বাই পারলো, দিল্লি পারলো, হায়দ্রাবাদ পারলো, আমরা পারলাম না, তাদের একটাই সাজা হতে পারে, গ্রেফতার।

