Shuvrangshu Shukla, Space, ভারতের মহাকাশ চর্চায় ইতিহাস রচয়িতা শুভ্রাংশু শুক্লা কেমন মানুষ? জানালেন অভিযানের ব্যাকআপ পাইলট প্রশান্ত নায়ার

আমাদের ভারত, ২৫ জুন: ভারতের মহাকাশ চর্চায় বুধবার এক ইতিহাস তৈরি হয়েছে। এদিন সফল উৎক্ষেপণ হয়েছে অক্সিয়াম ফোর মিশনের। রাকেশ শর্মার পর দ্বিতীয় ভারতীয় হিসেবে মহাকাশে পাড়ি দিয়েছেন ক্যাপ্টেন শুভ্রাংশু শুক্লা। আজ তাঁর জন্য গর্বিত প্রতিটি ভারতীয়। কেমন মানুষ শুভ্রাংশু? তাঁর ব্যাকআপ পাইলট জানালেন, অসম্ভব আত্মবিশ্বাসী ও লক্ষ্য স্থির রেখে ঠাণ্ডা মাথায় এগিয়ে যাওয়ার মতো মানুষ তিনি।

শুভ্রাংশুর সঙ্গে আরো যারা এই মিশনে গেছেন তারা সকলেই শুভ্রাংশুর প্রশংসা করেছেন। তবে তাঁর প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়েছেন এই মিশনের ব্যাকআপ পাইলট প্রশান্ত নায়ার। তাঁর কথায় শুভ্রাংশুর মত আত্মবিশ্বাসী মানুষ তিনি খুব কম দেখেছেন। লক্ষ্মৌ- এর বাসিন্দা ভারতের বায়ুসেনা পাইলট শুভ্রাংশুর সম্পর্কে বলতে গিয়ে প্রশান্ত বলেন, দারুন ফোকাসড একজন মানুষ। একবার কোনো সিদ্ধান্ত নিলে পিছু হটে না। অনেক আগেই আইএসএস’এ প্রথম ভারতীয় হওয়ার লক্ষ্য ঠিক করেছিল শুভ্রাংশুর। তারপর কোনো কিছুই ওকে আটকে রাখতে পারেনি।

প্রশান্ত জানান, গগণ যান মিশনের ট্রেনিং- এর জন্য কয়েক মাস আগে শুভ্রাংশুর সঙ্গে আলাপ হয়েছিল তাঁর। দশ মাস টানা একসঙ্গে ট্রেনিং করেছেন তারা। ট্রেনিং- এর অভিজ্ঞতার দারুন ছিল। এই ধরনের অভিযানে ব্যক্তিগত নৈপুণ্যের চেয়েও বড় হয়ে ওঠে দলের মধ্যে বোঝাপড়া। সেই প্রেক্ষিতেই প্রশান্ত বলেন, দলের মধ্যে একে অনেকের শক্তি ও দুর্বলতা জানা থাকা জরুরি। কারণ, মহাকাশে পাড়ি দেওয়ার সময় যদি একজন কিছুটা পিছিয়ে পড়ে তখন অন্যদের সেই ফাঁক ভরাট করতে হয়। এক্ষেত্রে একেবারে পারদর্শী শুভ্রাংশু।

জাতীয় প্রতিরক্ষা অ্যাকাডেমির প্রাক্তনী শুভ্রাংশু ২০০৬ সালে ভারতীয় বায়ু সেনা পাইলট হিসেবে যোগদান করেন। যেখানে তিনি চালিয়েছেন, ৩৬ এম কে আই, মিগ ২১, জাগুয়ার, ডার্নিয়ার সহ একাধিক যুদ্ধবিমান।

অক্সিয়াম মিশন ফোরের নেতৃত্বে রয়েছেন, নাসার অভিজ্ঞ মহাকাশচারী পেগি হুইটসন। এছাড়াও অভিযানে রয়েছেন পোল্যান্ড এবং হাঙ্গেরির দু’জন। এরা মিশন স্পেশালিস্ট হিসেবে অংশগ্রহণ করছেন। এই অভিযানটি কেবল ভারতের জন্য নয়। নাসা, ইসরো, ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির মতো আন্তর্জাতিক মহাকাশ সংস্থার মিলিত প্রয়াস।

মহাকাশে গিয়ে মিশনের কন্ট্রোল রুমে পাঠানো প্রথম বার্তায় শুক্লা বলেছেন, এই অভিযান শুধু আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনের উদ্দেশ্যে যাত্রা নয়, ভারতের মহাকাশ কর্মসূচির সূচনা। তিনি বলেন, “নমস্কার আমার প্রিয় দেশের মানুষ। অত্যন্ত মজার এই যাত্রা। ৪১ বছর পর আমরা আবার মহাকাশে পাড়ি দিলাম। দারুন লাগছে। এখন আমরা পৃথিবীকে প্রতি সেকেন্ডে সাড়ে সাত কিলোমিটার গতিতে প্রদক্ষিণ করছি। তিরঙ্গা আমার কাঁধে রয়েছে, যে আমাকে বারবার মনে করিয়ে দিচ্ছে আমি আপনাদের সকলের সঙ্গে আছি। আমি চাই আপনারাও সকলে আমার এই যাত্রার সঙ্গী হন। আপনাদের বুক নিশ্চয়ই গর্বে ফুলে উঠবে। মহাকাশে ভারতের মানুষ পাঠানোর স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে, জয় হিন্দ, জয় ভারত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *