টাকা দিয়ে গুন্ডা জড়ো করিয়ে কি অশান্ত বিশ্বভারতী! তদন্তে নেমে নথি তলব ইডির

রাজেন রায়, কলকাতা, ১৯ আগস্ট: রবীন্দ্রচর্চার পীঠস্থান শান্তিনিকেতন তথা বিশ্বভারতী প্রাঙ্গণে পাঁচিল নির্মাণ ঘিরে শাসক-বিরোধী লড়াইয়ে রাজ্য থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত রাজনীতি সরগরম। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ অনুমতি দেওয়া নিয়ে সমালোচনার পাশাপাশি তৃণমূল নেতাদের ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে থেকে জনতাকে মদত দেয়ার অভিযোগ উঠেছে বিভিন্ন মহলে। যদিও বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের দাবি, জমি মাফিয়াদের হাত থেকে বাঁচানোর জন্যই এ সিদ্ধান্ত। এর মধ্যেই ওই ঘটনার দিন যারা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেছিল, সীমানা, প্রাচীর, গেট ভাঙ্গচুর চালিয়েছিল, তাদের আদৌ কেউ এসবের জন্য ফান্ডিং অর্থাৎ টাকা দিয়েছিল কিনা, তা খতিয়ে দেখতে এবার তদন্তে নামল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট।

ইতিমধ্যেই বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী, রাজ্য পুলিশের ডিজি বীরেন্দ্র ও বীরভূমের পুলিশ সুপার শ্যাম সিংকে বীরভূমের পুলিশ সুপারের কাছে এই মামলার এফআইআর কপি ও অন্য তদন্তের স্বার্থে উপযুক্ত অন্যান্য নথি চেয়ে চিঠি দিয়েছে এনফর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। ঘটনায় কারা যুক্ত ছিল, তদন্তকারীরা কী নথি জোগাড় করেছেন, সমস্ত কিছু জানতে চাওয়া হয়েছে।
গোয়েন্দাদের দাবি, আচমকা অশান্তিতে এত বড় ঘটনা নাও হতে পারে। এর পিছনে নির্দিষ্ট পরিকল্পনা থাকতেও পারে। বাইরে থেকে টাকা দিয়ে গুন্ডা জোগাড় করে এই অশান্তি বাধানোর অভিযোগও তুলেছেন অনেকে। সেই কারণেই তলব করা সমস্ত নথি তারপরে এই নিয়ে মামলা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, সোমবার ৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়েরের পর মঙ্গলবার বিশ্বভারতীর তরফে তৃণমূল বিধায়ক নরেশ বাউড়ি, বিশ্বভারতীর তৃণমূল নেতা গগন সরকার-সহ
১০০-র বেশি ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছেন ১২ জন তৃণমূল নেতা। তাদের বিরুদ্ধে অনধিকার প্রবেশ, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট ও প্রমাণ লোপাটের অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই সরাসরি শাসক দলের প্রত্যক্ষ ভাবে যুক্ত থাকার অভিযোগ উঠেছে। এরমধ্যে সোমবারই স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করে ৮ জনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ।

যদিও গোটা ঘটনার দায় বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের উপর চাপিয়েছে তৃণমূল। এই প্রসঙ্গে শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ভুবনডাঙার মাঠের সঙ্গে বাঙালির সেন্টিমেন্ট জড়িয়ে আছে। ভিসি সাধারণ নাগরিকদের সঙ্গে কথা বলে করতে পারতেন। মানুষের আবেগের কথা মাথায় রাখেননি তিনি। তৃনমূলের বিধায়ক এলাকার মানুষ। তিনি মানুষের আবেগকে না গুরুত্ব দিলে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবেন। তাই তিনি ওই জায়গায় গিয়েছিলেন।’ ওইদিনই বিকেলে গোটা ঘটনাকে পরোক্ষ সমর্থন জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রীও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *