আমাদের ভারত, ১০ ডিসেম্বর:
বিএসএফের সঙ্গে রাজ্য পুলিশ প্রশাসনকে লড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। রাজ্যপালের পর বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এমনটাই অভিযোগ করেছেন। তবে এর সঙ্গে তাঁর আরও অভিযোগ, এই রাজ্যে কোনও ভালো আইএএস আসতে চান না। সেই কারণেই মুখ্যমন্ত্রীকে ডব্লিউবিসিএসদের প্রমোশন দিয়ে সরকার চালাতে হয়।
সুকান্ত মজুমদারের অভিযোগ, মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী বিএসএফ ইস্যুতে যে অবস্থান নিয়েছেন ভারতবর্ষের ফেডারেল স্ট্রাকচার ও পশ্চিমবঙ্গের মানুষের আগামী দিনের জন্য তা খুবই চিন্তার। কারণ বিএসএফ দেশের সীমানা সুরক্ষার কাজে থাকে। তার সঙ্গে ইচ্ছে করে রাজ্য পুলিশ প্রশাসনকে লড়িয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। প্রশাসনিক কর্তারা মুখ্যমন্ত্রী কথা শুনতে বাধ্য। যেহেতু তিনি ভোটে জিতে মুখ্যমন্ত্রী পদে বসেছেন প্রশাসনিক কর্তারা না করতে পারছেন না। কিন্তু দেশের যে আইন, যে সংবিধান সেটা মানতেও তারা বাধ্য। ফলে আগামী দিনে এই দ্বন্দ্ব আরো বাড়বে বলে তাঁর মত।
একই সঙ্গে সুকান্ত মজুমদার বলেন, “আমার মনে হয় এখন যে পরিস্থিতি হয়েছে তাতে ভালো র্যাঙ্ক করা আইএএস এই পশ্চিমবঙ্গে আসতে চান না। পছন্দ হিসেবে পশ্চিমবঙ্গের কথা বলেন না তিনি। এটাতো লজ্জার। কেন আসতে চাইছেন না আইএএস–রা? ডব্লিউবিসিএস’দের প্রমোশন দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে সরকার চালাতে হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী নিজেও বলছেন, এখানে ভালো অফিসার নেই কোনও আইএএস আসতে চান না। যারা পিছনের দিকে র্যাঙ্ক করেন তারা আসেন। ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি পশ্চিমবঙ্গের।”
বৃহস্পতিবার নদীয়ার প্রশাসনিক বৈঠকের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আইসিদের বলব একটু বেশি করে ঘোরাঘুরি বাড়ান। নাকা চেকিং বাড়ান। আপনাদের বাংলাদেশ বর্ডার রয়েছে করিমপুর থেকে শুরু করে।আপনাদের সেদিকে নজর রাখতে হবে। বিএসএফ যাতে এলাকায় গিয়ে কোনো রকমে আপনার অনুমতি ছাড়া কোন কিছুতে জড়িয়ে পড়তে না পারে সেটাও দেখতে হবে। বিএসএফ নিজের কাজ করবে, পুলিশ নিজের কাজ করবে। আইন-শৃঙ্খলা পুলিশের বিষয়। মানুষের উপর কোনো অত্যাচার হোক আমি এটা কখনোই সহ্য করব না।”
এর আগে উত্তর দিনাজপুরের প্রশাসনিক বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, বিএসএফের এক্তিয়ার আন্তর্জাতিক সীমানা থেকে ১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত। সেখানেও বিএসএফ যাতে স্থানীয় পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করে সেটা বিডিও ও আইসি কে দেখতে হবে। এই মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অভিঅধিকারী ও রাজ্যপাল জাগদীপ ধনকার। এ বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছিলেন ধনকর। চিঠিতে তিনি লিখেছিলেন বিএসএফ নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যে উদ্বিগ্ন তিনি। পুলিশ ও বিএসএফ এর মধ্যে সংঘাত কাম্য নয়। দুই বাহিনীর মধ্যে সহযোগিতার মানসিকতা থাকা দরকার। বিএসএফের এক্তিয়ার কেন্দ্রীয় সরকার ১৫ কিলোমিটার থেকে বাড়িয়ে ৫০ কিলোমিটার করেছে। এই পরিস্থিতিতে প্রশাসনের প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর এই বার্তাই সংঘাতের আবহ তৈরি করতে পারে।