Dhirendra Krishna Shastri, ৫ লক্ষ কণ্ঠে গীতাপাঠ দেখে মনে হচ্ছিল কলকাতায় মহা কুম্ভ বসেছে, বললেন বাগেশ্বর বাবা ধীরেন্দ্রকৃষ্ণ শাস্ত্রী

আমাদের ভারত ৭ ডিসেম্বর: রবিবার কলকাতায় ব্রিগেডের মাটিতে হয়ে গেল পাঁচ লক্ষ কন্ঠে গীতা পাঠ অনুষ্ঠান। এই মহাসমাবেশের সঙ্গে বাগেশ্বর ধাম সরকারের আচার্য ধীরেন্দ্র কৃষ্ণ শাস্ত্রী তুলনা টানলেন মহা কুম্ভের।

তাঁর কথায়, আজ কলকাতার পবিত্র ভূমিতে ৫ লক্ষ মানুষ একসঙ্গে গীতা পাঠ করলেন। যে উচ্ছ্বাস যে ভক্তির জোয়ার চোখে পড়ল, তাতে মনে হচ্ছিল যেন কলকাতায় মহা কুম্ভ বসেছে।

গীতা পাঠে এমন বিপুল সমাগম দেখে বাংলার মানুষকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে শাস্ত্রী বলেন, পশ্চিমবঙ্গ কলকাতার মানুষকে আমাদের অন্তরের ধন্যবাদ। সনাতনী ঐক্য এ দেশের ও বিশ্বশান্তির সর্বোচ্চ পথ। ভারতে চাই সনাতনী, চাই না টানাটানি। ভারতে চাই ভাগবত এ হিন্দ, চাই না গজবা এ হিন্দ।

হুমায়ুন কবীরের বাবরি মসজিদের শিলান্যাস নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে শাস্ত্রীর মন্তব্য, যার যা ভক্তি তিনি নিজের বিশ্বাস অনুযায়ী গ্রহণ করতে পারেন। এতে কোনো অপরাধ নেই, কিন্তু আমাদের ভগবান রামচন্দ্র সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করলে সেটা বরদাস্ত করা হবে না। মন্দির তৈরির সময় যদি কেউ কটাক্ষ করে তাতে দাম্ভিকতা প্রকাশ পাবে।

বাগেশ্বর ধামের প্রধান পুরোহিত ধীরেন্দ্র কৃষ্ণ শাস্ত্রী বহু জনের কাছে বাগেশ্বর ধাম সরকার বাগেশ্বর বাবা নামে পরিচিত। দেশের অন্যতম পরিচিত ধর্মগুরু তিনি। তাঁর প্রভাব মধ্যপ্রদেশ সহ দেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে পড়েছে। রাজনৈতিক মহলেও তাঁর যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে। তাঁর অনুগামীরা তাকে অলৌকিক শক্তির অধিকারী বলেও বিশ্বাস করেন।

রবিবার সকালে উপচে পড়া ভিড় চোখে পড়েছে ব্রিগেডে। সনাতনী সংস্কৃতি সংসদের উদ্যোগে আয়োজিত এই মহাসমারোহে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের পাশাপাশি ওড়িশা, বিহার, ঝাড়খন্ড, অন্ধ্রপ্রদেশ এমনকি বাংলাদেশ, নেপাল থেকেও বহু মানুষ এসেছিলেন। সকাল ন’টা থেকে শুরু হয়েছিল অনুষ্ঠান। চলেছে দুপুর ২টোর পর পর্যন্ত। উপস্থিত ছিলেন শমীক ভট্টাচার্য, সুকান্ত মজুমদার, দিলীপ ঘোষ, শুভেন্দু অধিকারী, তথাগত রায় সহ বিজেপির প্রথম সারির সকল নেতৃত্ব।

গীতা পাঠের মঞ্চ তিন ভাগে তৈরি হয়েছিল। মূল পার্থসারথি মঞ্চ। সেখানে ছিলেন দেড়শ সাধুসন্ত। মূল মঞ্চের বাঁদিকে ছিল চৈতন্য মহাপ্রভু মঞ্চ। ডানদিকে শঙ্করাচার্য মঞ্চ। ভিড় নিয়ন্ত্রণে নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে ২৫টি গেট তৈরি হয়েছিল। এসম্পর্কে কার্তিক মহারাজ জানান, আয়োজন একদম পূর্ণাঙ্গ। চতুর্দিক থেকে মানুষ এসেছেন কোনো অসুবিধা হয়নি। রাজ্য প্রশাসন সহযোগিতা করেছে।

আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচন, তার আগে এই গীতা পাঠের বিরাট আয়োজন। এত বড় ধর্মীয় সমাবেশ রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে কৌতুহল বাড়িয়েছে বৈকি। যদিও উদ্যোক্তরা বারবার দাবি করেছেন, এই আয়োজন সম্পূর্ণ ধর্মীয়। এর সঙ্গে রাজনৈতিক কোনো যোগ নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *