আমাদের ভারত, ১৯ আগস্ট: রাজ্যে এমবিবিএস- এ প্রথম বর্ষের ভর্তি প্রক্রিয়া অনির্দিষ্ট কালের জন্য স্থগিত করে দিয়েছে রাজ্য সরকার। এ নিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে রাজ্য স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা। ওবিসি সংরক্ষণের জটের কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে খবর। আর তাতেই সরব হয়েছেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার সহ বিজেপি নেতৃত্ব। তাদের অভিযোগ, ভোটব্যাঙ্ক সুরক্ষিত রাখতে একটি বিশেষ সম্প্রদায়কে সুযোগ করে দিতে রাজ্য সরকার সমস্ত পড়ুয়ার ভবিষ্যত অন্ধকারে ঠেলে দিচ্ছে।
এই বিজ্ঞপ্তির ফলে এমবিবিএস- এর প্রথম বর্ষের কাউন্সিলিং প্রক্রিয়া আটকে গেছে, এবং ডেন্টালে ভর্তি প্রক্রিয়া আপাতত স্থগিত। স্বাস্থ্য ভবনের তরফে যে অতি সংক্ষিপ্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে কী কারণে এই সিদ্ধান্ত তা স্পষ্ট করা হয়নি। এমনকি কতদিন এই ভর্তি প্রক্রিয়া বন্ধ থাকবে তারও উল্লেখ নেই। ফলে ঘটনার জেরে উদ্বেগ বেড়েছে পড়ুয়াদের মধ্যে। বিষয়টি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ার পোস্ট করেছেন বিজেপি নেতা তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। তিনি লিখেছেন, রাজ্য মেডিকেলে ভর্তির ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। হঠাৎ করে পশ্চিমবঙ্গ সরকার একটি জরুরি বিজ্ঞপ্তি জারি করে অনির্দিষ্টকালের জন্য মেডিকেল ডেন্টাল কাউন্সিলিং- এর ভর্তি প্রক্রিয়া বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে রাজ্যের হাজার হাজার মেডিকেল প্রার্থী ও তাদের অভিভাবকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
এই পরিপ্রেক্ষিতেই সুকান্ত মজুমদার প্রশ্ন তুলেছেন, ভোট রাজনীতির জন্য একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীকে তুষ্ট করতেই কি কাউন্সিলিং বন্ধ করে দেওয়া হলো? সংরক্ষণের নামে কোনো বিশেষ গোষ্ঠীকে সুবিধা পাইয়ে দিতে কি এই পদক্ষেপ? তাঁর কথায়, এই সিদ্ধান্ত নিয়ে পরীক্ষায় সফল ছাত্র-ছাত্রীদের ভবিষ্যৎ কার্যত অন্ধকারে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি প্রক্রিয়া বন্ধ ও জয়েন্টের ফল না প্রকাশিত হবার ইস্যুতে রাজ্যকে বিঁধেছেন বিরোধী দলনেতা। শুভেন্দু অধিকারী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করে বলেছেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নিয়ে ব্যবসা চালু করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। যতো সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভেঙে পড়বে, ততো মমতার ঘনিষ্ঠদের প্রাইভেট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা বাড়বে, ফুলে ফেটে উঠবে। তাঁর দাবি, এইভাবে এক হাজার কোটি টাকা ব্যবসা করার সুযোগ করে দিচ্ছে তৃণমূল সরকার।
বিজেপির অন্যান্য নেতৃত্বের মতে, জাতীয় ওবিসি তালিকার বাইরে থাকা ৭৬টি মুসলিম জনগোষ্ঠীকে ভোট ব্যাঙ্কের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারি তালিকায় ঢোকাতে চায়। একই সঙ্গে ভর্তি প্রক্রিয়াতেও যাতে এরা সুবিধা লাভ করে সেই চেষ্টা করা হচ্ছে। আর এর ফলে সমস্ত পড়ুয়ার ভবিষ্যৎ অন্ধকারের দিকে এগোচ্ছে।