পুলিশমন্ত্রীর মদতেই বিশ্বভারতীতে ভাঙ্গচুর চলেছে: অগ্নিমিত্রা পাল

আশিস মণ্ডল, বীরভূম, ২৮ আগস্ট: পুলিশ মন্ত্রীর আদেশেই বিশ্বভারতীতে ভাঙ্গচুর, লুঠ ও তাণ্ডব চলছে। শুক্রবার শান্তিনিকেতনে এসে মেলামাঠ পরিদর্শনের পর একথা বলেন বিজেপির মহিলা মোর্চার রাজ্য সভানেত্রী অগ্নিমিত্র পাল।এদিন বেলার দিকে শান্তিনিকেতনে আসেন মহিলা মোর্চার রাজ্য সভানেত্রী অগ্নিমিত্র পাল। সঙ্গে ছিলেন সংগঠনের জেলা সভানেত্রী অনুরাধা ঘোষ সহ অনেকে। বিজেপি প্রতিনিধি দল প্রথমে সেন্ট্রাল ভবনে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখান থেকে বেরিয়ে মেলা মাঠ পরিদর্শন করেন। ভেঙ্গে ফেলা গেটের কাছে গিয়ে ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন। এরপরেই তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে সিবিআই তদন্তের দাবি জানান।

তিনি বলেন, “এখানে পেশী শক্তির বলে ভাঙ্গচুর, লুঠ হয়েছে। শাসক দলের সঙ্গে তারা প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত। তা না হলে হাজার হাজার বহিরাগত লোকজন এল আর পুলিশ কিছু জানতে পারল না, হতে পারে না। ঘটনার সময় জেলা পুলিশ সুপার শ্যাম সিং শান্তিনিকেতন থানায় ছিলেন। উপাচার্য তাঁকে একাধিকবার ফোন করেছেন। তিনি শুধু দেখে নিচ্ছি ছাড়া কিছু বলেননি। কার্যক্ষেত্রে তিনি কিছু দেখেননি। পরে আট জনকে গ্রেফতার করে ঘটনার মোড় ঘোরানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু আদালতে ধৃতদের যুক্ত থাকার বিষয়ে কোন প্রমাণ জমা না দিয়ে তাদের জামিন পেতে সাহায্য করেছেন। এর সঙ্গে শুধু এলাকার শাসক দলই যুক্ত তা নয়, যিনি পুলিশমন্ত্রী তার মদতেই এই তাণ্ডব চলেছে। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করব ঘটনার সিবিআই তদন্ত করা হোক”।

এদিকে এদিন বিশ্বভারতীর জনসংযোগ আধিকারিক অনির্বাণ সরকার একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে বহিরাগত বলায় কেউ আঘাত পেয়ে থাকলে দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “তিনি বলেই ওই মন্তব্যের জন্য কেউ কেউ দুঃখিত হয়েছেন। আমিও দুঃখিত এবং মর্মাহত। তবে এটার ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে। আমি বলতে চেয়েছিলাম গুরুদেব ও তাঁর পিতা মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর বোলপুর বা বীরভূমের বাসিন্দা ছিলেন না। তারা কলকাতায় জীবনের বেশ কিছুটা সময় লালিত পালিত। অতএব বহিরাগত সেই অর্থে”। প্রেস বিবৃতিতে পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয় মেলার মাঠে প্রাচীর এবং ফেন্সিং দিয়ে ঘেরা হবে। কারণ একদিকে মাঠে অসামাজিক কার্যকলাপ অন্যদিকে সরকারি নির্দেশিকা মানতে প্রাচীর দিতে হবে”।

পৌষ মেলার ভবিষ্যৎ প্রসঙ্গে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “মেলা বন্ধের পক্ষে বিশ্বভারতী কিংবা শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট নয়। তবে মেলা করার মতো লোকবল কিংবা অর্থনৈতিক রসদ আমাদের নেই। এছাড়া জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশ মেনে মেলা চারদিন পর তুলতে গিয়ে শ্লীলতাহানির মামলা খেতে হয়েছে। পুলিশ আমাদের জেরা করেছে। তার উপর রাজ্য পরিবেশ দফতর ১০ লক্ষ টাকা জরিমানা করেছে বিশ্বভারতীকে। সেই কারণে মেলা না করার কথা বলা হয়েছিল”। সব শেষে বিবৃতিতে সকলকে একযোগে এগিয়ে এসে বিশ্বভারতীকে সহযোগিতার আবেদন জানানো হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *