আমাদের ভারত, ব্যারাকপুর, ২১ মে: সাধুসন্তদের নিশানা করায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামল বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। রামকৃষ্ণ মিশন, ইসকন ও ভারত সেবাশ্রম সংঘ এবং বেলডাঙ্গার ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের অধ্যক্ষ স্বামী প্রদীপ্তানন্দ মহারাজের সম্বন্ধে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির মন্তব্যের প্রতিবাদে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ব্যারাকপুর জেলার তরফ থেকে আজ ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটে ডেপুটেশন দেওয়া হল।
গত শনিবার হুগলির গোঘাটে একটি নির্বাচনী জনসভায় যোগ দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। সেখানে তিনি অভিযোগ করেন, “এই যে বহরমপুরের একজন মহারাজ আছেন। আমি শুনেছি অনেক দিন ধরে, কার্তিক মহারাজ। ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘকে আমি খুব শ্রদ্ধা করতাম। আমার শ্রদ্ধার্ঘ্যের তালিকায় তাঁরা দীর্ঘ দিন ধরে আছে। কিন্তু যে লোকটা বলে, তৃণমূলের এজেন্ট বসতে দেব না, সেই লোকটাকে আমি সাধু বলে মনে করি না। তার কারণ, সে ডাইরেক্ট পলিটিক্স করে দেশটার সর্বনাশ করছে।’’ একই সঙ্গে তিনি রামকৃষ্ণ মিশন এবং ইসকনের সমালোচনা করেন।
মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যের প্রতিবাদে আজ ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটে ডেপুটেশন দেওয়া হয় বিশ্ব হিন্দু পরিষদের পক্ষ থেকে। সংগঠনের ব্যারাকপুর জেলা সম্পাদক পিনাকী চ্যাটার্জি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ এবং তার বেলডাঙ্গার অধ্যক্ষ স্বামী প্রদীপ্তানন্দ মহারাজ সম্পর্কে যে কুরুচিকর এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মন্তব্য করেছেন তাতে আপামর ভক্তকূল ছাড়াও সকল সাধারণ সনাতনী হিন্দু অপমানিত। মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশনের কতিপয় মহারাজও নাকি “প্রত্যক্ষ রাজনীতি” করছেন। এই প্রসঙ্গে তিনি আসানসোলের রামকৃষ্ণ মিশনের নামও উল্লেখ করেছেন। আমরা সকলেই জানি, রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশন, ভারত সেবাশ্রম সংঘ ও ইসকন অরাজনৈতিক ধর্মীয় সংগঠন, যার পরিধি আন্তর্জাতিক স্তরে বিস্তৃত। সনাতন হিন্দু পরম্পরার এমন সব প্রাচীন সংগঠনের নামে মিথ্যা অপবাদ শুধুমাত্র লজ্জার নয়, বরং ততোধিক অপমানের।”
এই প্রসঙ্গে পিনাকী চ্যাটার্জি বলেন, “তৃণমূলের একাধিক নেতা-নেত্রী মুখ্যমন্ত্রীকে শ্রীশ্রীমা সারদাদেবীর অবতার হিসাবে উল্লেখ করেছেন। স্বামী বিবেকানন্দের হাতে দলীয় পতাকা ধরিয়ে দেওয়া সহ ঘৃণ্য কাজ করেছে।
বিশ্ব হিন্দু পরিষদের ব্যারাকপুর জেলা মাতৃশক্তি প্রমূখ সুমন শ্রীবাস্তব বলেন, ভোটব্যাঙ্কের লোভে সাধুসন্ত সমাজকে প্রকাশ্যে এই অপমানের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাতে আমরা ডেপুটেশন দিলাম। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের ব্যারাকপুর জেলা ধর্মাচার্য সম্পর্ক প্রমূখ সুব্রত চ্যাটার্জি বলেন, আদর্শ নির্বাচনী বিধির কথা মাথায় রেখে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ শুধুই এই ডেপুটেশন কর্মসূচি রেখেছে, কিন্তু আগামীতে এই ধরণের ঘটনা ঘটলে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ পথে নেমে আন্দোলন ও লাগাতার ধরনা সহ প্রতিবাদ জানাতে বাধ্য হবে।