আমাদের ভারত, উত্তর দিনাজপুর, ১৫ জুন: বিজেপি পরিচালিত গ্রামপঞ্চায়েত প্রধান ও পঞ্চায়েত সদস্যরা টাকার বিনিময়ে অপেক্ষাকৃত কম বয়সীদের
“তফসিলি বন্ধু” ও “জয় জোহার” প্রকল্পের টাকা পাইয়ে দিচ্ছেন এই অভিযোগ তুলে বীরঘই গ্রামপঞ্চায়েতের বাসিন্দারা সোমবার রায়গঞ্জ বিডিও অফিসে ধর্না অবস্থান ও বিক্ষোভ দেখালেন। ইতিমধ্যেই রায়গঞ্জ ব্লক প্রশাসন থেকে এলাকার ৩৪ জন উপভোক্তার বিরুদ্ধে ভুয়ো নথি পেশ করার জন্য এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। এই ঘটনা নিয়ে রায়গঞ্জ বিডিও অফিসে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে।
তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত রায়গঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি মানস ঘোষ অবশ্য জানিয়েছেন, প্রকৃত উপভোক্তারা সকলেই এই দুই প্রকল্পের টাকা পাবেন। বঞ্চিত গ্রামবাসীদের বিডিও অফিসে সরাসরি এসে আবেদন করার পরামর্শ দেন তিনি।

রাজ্যের মানবিক মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় রাজ্যের তফসিলি ও আদিবাসী সম্প্রদায়ের ষাট বছরের উর্দ্ধে বাসিন্দাদের সকলের জন্য মাসিক ১ হাজার টাকা ভাতা প্রদান করার জন্য “তফসিলি বন্ধু” ও “জয় জোহার” নামে দুটি প্রকল্প চালু করেছেন। উত্তর দিনাজপুর জেলার রায়গঞ্জ ব্লকে এই প্রকল্পের সুবিধা নিতে ৯৭০০ জনের আবেদন জমা পড়েছে। যার মধ্যে ৫২০০ জন উপভোক্তার অ্যাকাউন্টে টাকা ঢোকা শুরু হয়ে গিয়েছে। কিন্তু রায়গঞ্জ ব্লকের বিজেপি পরিচালিত বীরঘই গ্রামপঞ্চায়েতে এই প্রকল্পের স্বচ্ছতা নিয়ে বহু অভিযোগ উঠে এসেছে। গ্রামের বয়স্ক বহু মানুষের অভিযোগ, বিজেপির পঞ্চায়েত সদস্য ও প্রধান টাকার বিনিময়ে অপেক্ষাকৃত কম বয়সী মানুষদের এই প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত করে টাকা পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করছে। ওই গ্রামপঞ্চায়েত থেকে বেশকিছু অভিযোগ রায়গঞ্জ বিডিও অফিসেও জমা পড়েছে। ব্লক প্রশাসন তদন্ত করে বীরঘই অঞ্চলের ৩৪ জন উপভোক্তার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছেন। ভোটার কার্ডের বয়সের চাইতে কম বয়স দেখিয়ে অনলাইনে আবেদন করে সরকারি এই সুবিধা নিতে চাইছেন। অভিযোগ টাকার বিনিময়ে স্থানীয় বিজেপি পঞ্চায়েত সদস্যরা এই কাজ করছেন। এরই বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে এবং নিজেদের প্রাপ্য অধিকার পাওয়ার আশায় সোমবার রায়গঞ্জ বিডিও অফিসে ধর্না ও বিক্ষোভ দেখান বীরঘই গ্রামপঞ্চায়েতের বঞ্চিত ষাটোর্ধ বাসিন্দারা।

তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত রায়গঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি মানস ঘোষ অবশ্য তাদের আশ্বস্ত করেন মুখ্যমন্ত্রীর এই স্বপ্নের মানবিক প্রকল্পের সুবিধা যোগ্য ব্যক্তিরাই পাবেন। সহ সভাপতির আশ্বাস পেয়ে বীরঘই অঞ্চলের বাসিন্দারা বিক্ষোভ কর্মসূচি তুলে নেন।

