Villagers, furious, elephant, borjora, বড়জোড়ায় হাতির হানায় বৃদ্ধের মৃত্যু, ক্ষোভে ফুঁসছে গ্ৰামবাসীরা

সোমনাথ বরাট, আমাদের ভারত, বাঁকুড়া, ৯ মার্চ: ফের হাতির হানায় মৃত্যু হলো এক বৃদ্ধের। এই ঘটনায় ব্যাপক ক্ষোভ দেখা দিয়েছে বড়জোড়ার গ্ৰামাঞ্চলে। আজ খুব সকালে এই ঘটনা ঘটে বাঁকুড়া উত্তর বনবিভাগের বড়জোড়া রেঞ্জের শ্যামপুর গ্রামে। মৃতের নাম কালীপদ বাউরি (৬৫)। তার মৃতদেহটি নিয়ে মত্ত দাঁতালটি যেভাবে খেলা করেছে তাতে মাথার অংশ যেমন মাটিতে পিষে দিয়েছে তেমনি পুরো শরীরটাকে ছিন্ন ভিন্ন করে দিয়েছে। এই ঘটনা চাউড় হতেই গ্ৰামবাসীরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। ঘটনার খবর পেয়ে বনকর্মী ও পুলিশ গ্ৰামে এলে তাদের ঘিরে ক্ষোভ উগরে দেন গ্ৰামবাসীরা।

পেশায় দিন মজুর কালীপদ বাউরির ৫ মেয়ে ও এক ছেলে। ছোটো মেয়ে গীতার এখনও বিয়ে হয়নি। ছেলে চন্দন ও মেয়ে গীতা তাদের বাবার মৃতদেহ দেখেই জ্ঞান হারাচ্ছিলেন বারবার। ভৈরব বাউরি নামে এক বাসিন্দা ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন, আর কত মানুষ মরলে বন দফতরের ঘুম ভাঙবে।

জানাগেছে, এদিন সকাল ৬টা নাগাদ প্রাত:কৃত‍্য সারতে গ্রামের প্রান্তে একটি পুকুরে গিয়েছিলেন কালীপদবাবু। সেই সময় জঙ্গল থেকে বেরিয়ে আসা বুনো দাঁতালের সামনে পড়ে তিনি দৌড়ে পালাতে উদ্যত হতেই শুঁড় দিয়ে পেঁচিয়ে ধরে পা দিয়ে থেঁতলে মারে ওই উন্মত্ত হাতিটি। এই ঘটনার খবর পেয়ে কালীপদ বাউরির বাড়িতে আসেন হাতি সমস্যা নিয়ে গড়ে ওঠা সংগঠন সংগ্রামী গণমঞ্চের জেলা সম্পাদক শুভ্রাংশু মুখার্জি, সভাপতি পূর্ণেন্দু সরকার সহ একাধিক সদস্য।

শুভ্রাংশু মুখার্জি বলেন, গত ২০/২২ বছরে শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে হাতির আক্রমণে। ৫০/৬০ জন কর্মক্ষমতা হারিয়েছেন।কয়েক হাজার গরিব মানুষের বাড়ি ঘর ভেঙ্গেছে বুনো হাতির দল। কিন্তু বাঁকুড়ার জঙ্গল এলাকার মানুষের প্রাণ বাঁচানোর কোনোও হেলদোল নেই রাজ্য বন মন্ত্রকের।

সংগঠনের সভাপতি পূর্ণেন্দু সরকারের অভিযোগ, হাতি সমস্যার স্থায়ী সমাধানের দাবি নিয়ে আমরা যতবার আন্দোলনে নেমেছি ততবারই ফাটা রেকর্ড বাজিয়েছে জেলা বন কর্তা থেকে রাজ্য বন মন্ত্রক। ক্ষতিপূরণ নয়, আমরা নিরাপদে বাঁচতে চাই বলে দাবি করে পূর্ণেন্দু সরকার বলেন, হাতিগুলিকে ময়ূরঝর্ণা এলাকায় নিয়ে যাওয়া হোক। মৃত্যু হলে ১০ লাখ টাকা সঙ্গে সঙ্গে দিতে হবে, এবং ঘটনার ৩ মাসের মধ্যে পরিবারের ১ জনকে স্থায়ী চাকরি দিতে হবে। বাড়ি ভাঙ্গলে ক্ষতিপূরণ নয়, বাড়ি করে দিতে হবে।

গ্ৰামবাসীদের বক্তব্য, বুনো হাতির দল বড়জোড়া এলাকায় ঘাঁটি গেড়ে রয়েছে। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা চলাকালীন হাতির সংখ্যাগরিষ্ঠ একটি দলকে পশ্চিম মেদনীপুর এলাকায় পাঠানো হয়। এখনও বেশ কয়েকটি হাতি এই এলাকার শ্যামপুর, ডাকাইসিনি, পাবয়ার জঙ্গলে ঘোরাফেরা করছে। এবিষয়ে বড়জোড়ার রেঞ্জার ঋত্বিক দে বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত মর্মান্তিক। নিয়মানুযায়ী মৃতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের ৫ লাখ টাকা ১৫ দিনের মধ্যেই দেওয়া হবে। পুলিশ মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *