স্নেহাশীষ মুখার্জি, আমাদের ভারত, নদীয়া, ১৪ মে: বাংলাদেশে আটকে পড়েছেন পশ্চিমবঙ্গের তিনশো শ্রমিক। তারা ফিরতে পারছেন না। এক ভিডিও বার্তায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে হাতজোড় করে আবেদন করলেন রাজ্যে ফিরিয়ে আনার জন্য।
পশ্চিমবঙ্গের মালদা, মুর্শিদাবাদ, মেদিনীপুর এবং নদীয়া থেকে ৩০০ জন শ্রমিক বাংলাদেশের রামপাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কাজ করতে গিয়ে লকডাউনে আটকে পড়েছেন। ফলে তারা পড়েছেন সমস্যায়। তাদের হাতে পয়সা কড়িও নেই যে তারা প্লেনের টিকিট কেটে বাড়ি ফিরবে। তাই এবার তারা এক ভিডিওর মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন করেছেন তাদের ফিরিয়ে আনবার জন্য।
জানা যায়, ভারত এবং বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে বাংলাদেশের খুলনা জেলায় রামপাল নামে এক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে তোলার কাজে পশ্চিমবঙ্গ থেকে ৩০০ শ্রমিক গিয়েছেন। সেখানে তারা কেউ ৬ মাস কেউ ৮ মাসের পাসপোর্ট ভিসায় কাজ করছে। ইতিমধ্যে বাংলাদেশেও শুরু হয়েছে করোনা ভাইরাসের আক্রমণ। তাই শ্রমিকদের কাজ কর্ম ও বন্ধ হয়ে গেছে। প্রায় দেড় মাস কর্মহীন হয়ে বসে আছে তারা। তাদের ঠিকাদারের কাছে যতদিন পয়সা ছিল ততদিন ঠিকাদার তাদের খাবার খাইয়েছে। এখন তারা একবেলা খেতে পারছে এক বেলা উপোস করে থাকছে বলে জানিয়েছেন।
ভিডিওতে এই শ্রমিকরা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে আবেদন করেন, দিদি যেন তাদের দেশে ফেরাবার ব্যবস্থা করে। দিদি যেমন যেখানে যেখানে শ্রমিক আছে তাদের বাড়ি নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করছেন, বাসে বা ট্রেনে যেভাবেই হোক তাদেরও যেন দিদি এভাবেই কোনও ব্যবস্থা করেন। তাদের বলা হচ্ছে প্লেনে যাবার জন্য কিন্তু প্লেনে গেলে যে টাকা খরচা সেই টাকা খরচ করা তাদের পক্ষে সম্ভব নয় বলেও তারা এই ভিডিওতে দিদিকে জানিয়েছেন।
তারা সংশয় প্রকাশ করছে যে ১৬ তারিখ বাংলাদেশের লকডাউন উঠে যাবে। এই লকডাউন উঠে গেলে বাংলাদেশের যত শ্রমিক আছে তারা সব বেরিয়ে পড়বে। সেখানে কোনো ভালো ডাক্তার নেই, ওষধ নেই, ভাইরাসের আক্রান্ত বেড়েই চলেছে। তাই তাদের আতঙ্ক আরো বেড়ে গেছে। এর ফলে তারা বাঁচতেও পারে মরতেও পারে। তাই এই শ্রমিকরা হাতজোড় করে অনুরোধ করেন, “আমাদের যে কোন বর্ডার দিয়ে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করুন। প্লেনের টিকিটের ভাড়া বা জাহাজের ভাড়া দেওয়ার ক্ষমতা আমাদের নেই। আমাদের যদি বেনাপোল বর্ডার খুলে দেন তাহলেও আমরা ভিক্ষা করে হলো বাড়ি পৌঁছতে পারব। যদি গেদে বর্ডার খুলে দেন তাহলে আমরা যেতে পারব। কিন্তু দিদি আমাদের এয়ারপোর্ট যাবার ক্ষমতা নেই। তাই দিদি আমরা হাতজোড় করে আপনার কাছে অনুরোধ করছি আমরা শ্রমিক শ্রেণির মানুষ পেটের দায়ে এসেছি কাজের জন্য, না খেয়ে রয়েছি আমাদের বাঁচান।”