টুইটারকে আইনি নোটিশ পাঠালো উত্তর-প্রদেশ পুলিশ, ৭ দিনের মধ্যেই হাজিরার নির্দেশ

আমাদের ভারত, ১৮ জুন: গাজিয়াবাদের ঘটনার জেরে এবার বৃহস্পতিবার টুইটারের ভারতের প্রধানকে আইনি নোটিশ পাঠালো উত্তরপ্রদেশ পুলিশ। গাজিয়াবাদের লোনী এলাকায় প্রৌঢ় নিগ্রহের ঘটনায় সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক বিভিন্ন টুইটকে ছড়াতে মদত দেওয়ার অভিযোগে ভারতের ট্যুইটার ম্যানাজিং ডিরেক্টর মণিষ মাহেশ্বরীকে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে। এক সপ্তাহের মধ্যেই তাঁকে থানায় হাজিরা দিয়ে ঘটনা সম্পর্কে বক্তব্য জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

৫ জুন গাজিয়াবাদের লোনী এলাকায় এক মুসলিম প্রৌঢ় সুফি আব্দুল সামাদকে বেধড়ক মারধর সহ প্রৌঢ়র দাড়ি কেটে দেওয়ার ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ। প্রৌঢ়ের দাবি কিছু দুষ্কৃতীরা তাকে জোরপূর্বক ‘বন্দে মাতরম’ এবং ‘জয় শ্রীরাম’ বলতে বাধ্য করে। এই ঘটনা নিয়েই টুইট করেন বেশ কিছু সাংবাদিক এবং কংগ্রেস নেতা। তবে তাদের টুইট সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ছড়াতে প্ররোচনা দিয়েছে এবং ভুয়ো বলে অভিযোগ ওঠে। যদিও এই ঘটনা সাজানো বলে পরে বিজেপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়। টুইটার এই সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক ভুয়ো খবরকে যাচাই না করেই সোস্যাল মিডিয়ায় তা ছড়াতে মদত করেছে বলে দাবি করেছে উত্তর-প্রদেশ পুলিশ। তাই টুইটারের বিরুদ্ধে ক্রিমিনাল প্রসিডিওর কোড (সিআরপিসি)র ১৫৩, ১৫৩এ, ২৯৫এ, ৫০৫, ১২০বি,৩৪ নম্বর ধারায় মামলা রজু করা হয়েছে।

এছাড়াও দ্য ওয়্যার-এর সাংবাদিক আরফা খানুম সহ অন্যান্য সাংবাদিক এবং অভিনেত্রী স্বরা ভাস্করের বিরুদ্ধেও এফআইআর দায়ের করেছে দিল্লি পুলিশ।

পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় কোথাও কোনো সাম্প্রদায়িক দিক ছিল না। প্রৌঢ় সুফি সামাদ কিছু লোককে তাবিজ বিক্রি করেছিলেন, সেই তাবিজ কোনও কাজ না করায় ক্ষুব্ধ মানুষ তাকে মারধর করেছিল। তাদের মধ্যে হিন্দু মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ ছিল বলে জানায় উত্তর-প্রদেশ পুলিশ।

তবে পুলিশের এই মন্তব্যকে অস্বীকার করেছে সুফি সামাদের পরিবার। তাঁদের দাবি পুলিশ ঠিক বলছে না। সুফি সামাদের ছেলে বাবলু সাইফ বলেছেন, তাঁদের পরিবার বরাবরই কাঠের কাজের সঙ্গে যুক্ত, কোনও দিনই তারা তাবিজ বিক্রির কাজ করেননি। পুলিশ এই বিষয়ে তদন্ত করে দেখুক বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

প্রসঙ্গত নতুন আইন নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে টুইটারের বিতর্ক চলে আসছে একেবারে শুরু থেকেই। গত বুধবার কেন্দ্রের তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রী আইনের শর্ত পূরণ না করায় টুইটারের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে টুইটারের আইনি রক্ষাকবচ তুলে নেওয়া হল জানিয়ে টুইট করেন। তার পরই দিল্লি পুলিশ, জেরা করে মণিষ মাহেশ্বরীকে।

কেন্দ্রের সঙ্গে টুইটারের সংঘর্ষের এই পর্ব শুরু হয় দিল্লির কৃষক আন্দোলনের সময় থেকে, বলে মনে করছে ওয়াকিবহল মহল। কৃষক আন্দোলন এবং লাল কেল্লার টুলকিট মামলার সময় সম্পর্কিত বহু টুইট এবং টুইটার হ্যান্ডেল সাসপেন্ড করার সরকারের নির্দেশ টুইটার কর্তৃপক্ষ গ্রাহ্য করেনি বলেই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয় বলে মনে করছে তারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *