আমাদের ভারত, ১০ জুলাই: বিবাহ বিচ্ছেদের পর মুসলিম মহিলারাও খোরপোষ চাইতে পারেন তাদের স্বামীর কাছে। এক্ষেত্রে দেশে যে খোরপোষ আইন চালু রয়েছে তা ধর্মমত নির্বিশেষে সব মহিলাদের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। একই সঙ্গে আদালত বলেছে, খোরপোষকে যদি স্বামীরা তাদের স্ত্রীর প্রতি দাক্ষিণ্য বা খয়রাতি ভাবেন তবে ভুল করবেন। এটা যে কোনো বিবাহিত মহিলার অধিকার। ধর্মমত নির্বিশেষে সমস্ত মহিলারাই এই অধিকার পাওয়ার যোগ্য।
বিবাহ বিচ্ছেদ হলে হিন্দু মহিলাদের মত মুসলিম মহিলারাও স্বামীর কাছে খোরপোষ দাবি করতে পারবেন। দেশের শীর্ষ আদালত এমনটাই জানিয়েছে বুধবার। বিচারপতি নাগারত্ন, বিচারপতি অগাস্টাইন জর্জ মাসির বেঞ্চ এই রায় দিয়েছে। এই রায়কে ঐতিহাসিক বলে মনে করা হচ্ছে। এই মামলায় জমা পড়া এক পিটিশন খারিজ করে দিয়েছে শীর্ষ আদালত। এক মুসলিম ব্যক্তি ডিভোর্সের পর স্ত্রীকে খোরপোষ দিতে চাননি। পারিবারিক আদালত তাকে মাসিক ২০ হাজার টাকা খোরপোষ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল, কিন্তু ঐ ব্যক্তি আদালতের সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে তেলেঙ্গানা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। উচ্চ আদালত একই রায় দিলেও খোরপোষের পরিমাণ কমিয়ে ১০ হাজার করে। কিন্তু এরপর ওই মুসলিম ব্যক্তি পিটিশন জমা দেন সুপ্রিম কোর্টে। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট সেই রায় খারিজ করে দিলো। বিচারপতিরা ১২৫ ধারার উল্লেখ করে এ কথায় জানিয়ে দিয়েছেন। মুসলিম মহিলা আইন ১৯৮৬ এর ধর্মনিরপেক্ষ আইনের চেয়ে বেশি প্রাধান্য পাবে না। বিচারপতি নাগারত্ন বলেন, আমরা ফৌজদারী আবেদন খারিজ করে দিচ্ছি। একই সঙ্গে সিদ্ধান্তে আসছি যে ফৌজদারি আইনের ১২৫ ধারা সমস্ত মহিলার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।
একই সঙ্গে তিনি আরো বলেন, অনেক স্বামীরা বুঝতে পারেন না যে তাদের স্ত্রী যারা গৃহবধূ তাদের ওপর মানসিক দিক থেকে কতটা নির্ভরশীল। সময় এসেছে ভারতীয় পুরুষদের গৃহবধূদের ভূমিকা ও আত্মত্যাগকে স্বীকৃতি দেওয়ার।
এর আগে সাল বানু মামলায় যুগান্তকারী রায় সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল, ফৌজদারি আইনের ১২৫ ধারা সকলের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। ধর্মমত নির্বিশেষে সব মহিলার জন্য এই আইন প্রযোজ্য। কিন্তু এক বছর পর ১৯৮৬ সালে তৎকালীন কংগ্রেস সরকার মুসলিম মহিলা আইন প্রণয়ন করে। সেই আইনে বলা হয় মুসলিম মহিলারা এই খোরপোষ চাইতে পারবেন শুধু বিবাহ বিচ্ছেদের পরের ৯০ দিন অর্থাৎ ইদ্দতের সময়টুকুতে।