আমাদের ভারত, ৮ ডিসেম্বর: আজ এক তীরে তৃণমূলের দিকে দুটি নিশানা দাগলেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। একাধারে রাজ্যের উচ্চ শিক্ষায় রাজ্যের উদাসীনতার বিষয়টি তুলে ধরলেন। অন্যদিকে সংসদে অধিবেশনে বাংলায় করা প্রশ্নের জবাবে বাংলাতেই উত্তর দিলেন। অনেকেই মনে করছেন নির্মলা সীতারামনকে ভাষা নিয়ে করা সৌগত রায়ের মন্তব্যের জবাব এভাবে দিয়েছেন সুকান্ত মজুমদার।
কয়েকদিন আগেই লোকসভায় তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় জানিয়েছিলেন, দক্ষিণ ভারতীয় মন্ত্রী হিন্দিতে বক্তৃতা করায় তিনি বুঝতে পারছেন না। আর তা নিয়ে বিজেপি তৃণমূলের মধ্যে তর্ক- বিতর্ক বাধে। কিন্তু সোমবার দেখা গেল এক বাঙালি সাংসদ কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রীকে প্রশ্ন করলেন বাংলায়। আর বাঙালি মন্ত্রী উঠে দাঁড়িয়ে বাংলায় উত্তর দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলেন। স্পিকার বললেন কোনো অসুবিধা নেই।
উত্তর মালদার বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু প্রশ্ন করেছিলেন, পশ্চিমবঙ্গের রাষ্ট্রীয় উচ্চতর শিক্ষা অভিযান “রুশা”র কাজের পরিস্থিতি কী? সেই বিষয়ে জবাব দেন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী তথা পশ্চিমবঙ্গের বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার। খগেন মুর্মুর প্রশ্ন শেষ হতেই সুকান্ত মজুমদার বলেন, তিনি বাংলার উত্তর দিতে চান। তিনি বলেন, যেহেতু প্রশ্নকর্তা সাংসদ বাংলায় প্রশ্ন ঠিক করেছেন তার নিজের মাতৃভাষাও বাংলা, সেই জন্য বাংলায় উত্তর দেওয়ার অনুমতি চাইছেন তিনি। সুকান্ত মজুমদারের কথা শেষ হওয়ার আগে স্পিকার বলেন, আপনি বাংলায় বলুন কোনো অসুবিধা নেই।
প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে সুকান্ত মজুমদার লোকসভায় জানিয়ে দেন, পশ্চিমবঙ্গ সরকার রুশার প্রথম দুই ধাপে কেন্দ্রের সঙ্গে কাজ করছিল। গোটা পশ্চিমবঙ্গে কেন্দ্র ২০৬টি প্রকল্প অনুমোদন করেছিল, যার জন্য মোট ৯০৩.৪৫ কোটি টাকা ব্যয় বরাদ্দ হয়। সুকান্ত মজুমদার জানান, এতে কেন্দ্রের অংশীদারিত্ব ছিল ৫৪৫.৬৫ কোটি টাকা। তার মধ্যে ৩৮৫ কোটি টাকা কেন্দ্র ইতিমধ্যেই দিয়েছে, কিন্তু মাত্র ৬১টি প্রকল্পের কাজ এখনো পর্যন্ত শেষ হয়েছে। ১৪৫ টি প্রকল্প এখনো অসম্পূর্ণ। লোকসভায় সুকান্ত মজুমদার বলেন, “আমি ২০২৫ সালের ৩০ আগস্ট পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা মন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে বলেছি যে তাড়াতাড়ি কাজ শেষ করুন। কিন্তু কাজ শেষ তো হচ্ছেই না, এমনকি আমাদের পরিবর্তিত পিএম রুশা প্রকল্পেও পশ্চিমবঙ্গ অংশগ্রহণ করছে না। এর ফলে পশ্চিমবঙ্গের বিশ্ববিদ্যালয় গুলি বঞ্চিত হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন হিন্দিতে বক্তৃতা করায় তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেছিলেন তার বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে। সৌগতর দাবি মানতে রাজি হননি নির্মলা। সংসদে যে কোনো ভাষার বক্তব্য নিজের পছন্দমত ভারতীয় ভাষায় অনুবাদ করে শোনার ব্যবস্থা রয়েছে। হিন্দি বুঝতে অসুবিধা হলে সৌগত নিজের পছন্দের ভাষায় সেই ভাষণের অনুবাদ শুনে নিতে পারতেন বলে নির্মলা মনে করিয়ে দেন।

