ঠাকুরনগরে এসে মতুয়াদের নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রতিশ্রুতি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর

সুশান্ত ঘোষ, বনগাঁ, ২৭ নভেম্বর: লোকসভা নির্বাচনের আর মাত্র কয়েক মাস বাকি। আর তাই এই রাজ্যের মতুয়াদের নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রসঙ্গ ফের প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠলো। রবিবার উত্তর ২৪ পরগনার ঠাকুরনগর ঠাকুরবাড়ির রাস উৎসবে এসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয়কুমার মিশ্র সেই বার্তাই দিলেন।

উল্লেখ্য, এই রাজ্যে মতুয়া ভোট একটা বড় ফ্যাক্টর। আর সেটাকেই ভোটের ময়দানে তুরুপের তাস করতে চায় রাজনৈতিক দলগুলি। ধর্মীয় এবং রাজনৈতিক কারনে বাংলাদেশ থেকে বিতাড়িত মানুষেরা, যারা এদেশে এসে বসবাস করছেন, তাদের অনেকেই মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষ। তাদের বক্তব্য, তারা পরিস্থিতির শিকার হয়ে এদেশে এসে বসবাস করছেন। তাদের অনেকেরই এদেশের ভোটার কার্ড, আধার কার্ড ইত্যাদি আছে। তারপরেও কেন্দ্রীয় সরকারের নাগরিকত্ব প্রসঙ্গে তাদের অনেকেই আতঙ্কিত যে, তাদেরকে ফের না দেশছাড়া হতে হয়। আর এই বিষয়টি নিয়েই চলছে রাজনৈতিক কাটাছেঁড়া। গত দুটি লোকসভা নির্বাচনে মতুয়াদের মতো অন্য দেশ থেকে ভারতে আশ্রয় নেওয়া মানুষদের নাগরিকত্ব দেওয়ার নাম করে ভোটের বাজার তৈরি হয়। কেন্দ্র সরকার তখন প্রতিশ্রুতি দেয় যে, তারা ক্ষমতায় এসে তাদের নাগরিকত্ব দেওয়ার ব্যবস্থা করবে।

এভাবে ১০ বছর কেটে গেলেও এখনো বিষয়টি ঝুলে রয়েছে। ২০২৪ সালের প্রথম দিকে ফের লোকসভা নির্বাচন। আর তাই ফের এই নাগরিকত্ব প্রসঙ্গ সামনে চলে এলো। রবিবার ঠাকুরবাড়ির অনুষ্ঠানে এসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয়কুমার মিশ্র মতুয়াদের উদ্দেশ্যে ঘোষণা করেন যে, ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব সংশোধন আইনের ১ ধারার ২ উপধারার সংশোধন করে ২০১৯ সালের ৯ ডিসেম্বর লোকসভায় এবং ১০ ডিসেম্বর রাজ্যসভায় তা পাশ হয়ে গেছে। এদিন তিনি বলেন, ২০২০ সালের ১০ জানুয়ারিতে সিএএ দেশ জুড়ে লাগু হয়ে গেছে। এখন তা কার্যকরী করার জন্য আইন তৈরির কাজ চলছে। ২০২৪ সালের ৯ জানুয়ারী পর্যন্ত লোকসভার কমিটি এবং ২০২৪ সালের ৩০ মার্চ রাজ্যসভার কমিটি এব্যাপারে সময় চেয়ে নিয়েছে। ফলে ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান থেকে মতুয়াদের মতো অন্যান্য সম্প্রদায়ের যেসব মানুষেরা ভারতে এসে আশ্রয় নিয়ে রয়েছেন, তারা প্রত্যেকেই নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্য আবেদন করতে পারবেন। তাদেরকে নাগরিকত্ব দিয়ে কেন্দ্রের সমস্ত প্রকল্পের সুবিধা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ কেন্দ্র সরকার।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, উপযুক্ত কাগজপত্র না থাকায় রাস্তাঘাটে অনেক সময় প্রশাসনের লোকদের হাতে মতুয়াদের হেনস্থার শিকার হতে হয়। সেটি আটকাতে সারা ভারত মতুয়া মহা সংঘের সভাপতি হিসেবে সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের স্বাক্ষরিত একটি পরিচয়পত্র মতুয়াদের জন্য দেওয়ার প্রক্রিয়া অনেক আগেই চালু হয়েছে। এই প্রসঙ্গে এদিন অজয় মিশ্র বলেন, ওই কার্ড নিয়ে মতুয়ারা দেশের যেকোনও প্রান্তে যেতে পারেন। তাদেরকে প্রশাসনের কেউ হেনস্থা করবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *